স্টাফ রিপোটর >> আওয়ামী লীগের দোসর চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের প্রতিটি খাতেই অনিয়ম-দুর্নীতিরসহ আওয়ামী লীগ সরকার আমলে উপ-সহকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি নানাবিধ জুলুম, শারীরিক নির্যাতন, লুটপাট, দুর্ব্যবহার, বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ সহ রাজত্ব কায়েম করার অভিযোগ উঠছে খুনি হাসিনার দোসর দুর্নীতিবাজ কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা। উপ-সহকারী কর্মকর্তা মিনহাজুল হক ( নবাব ) ও কর্মচারীদের দিয়ে কৃষি অফিসটাকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করছেন বর্তমান কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা ।
কৃষক প্রশিক্ষণ, মাঠ দিবস, প্রদর্শনী, পুষ্টি বাগান, কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বরাদ্দসহ বিভিন্ন খাতের বরাদ্দের টাকা দুনীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে । কৃষকদের নিয়ে একটি ফসলের মাঠ দিবসের অনুষ্ঠান করে ব্যানার টাঙিয়ে ছবি তুলে রেখেই বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করে চলেছেন।
এসব অভিযোগ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রদর্শনীতে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে মৌখিক অভিযোগ জানান তারা । কৃষকদের জন্য বরাদ্দের কিছু অংশ টাকা চলে যাচ্ছে কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানার পকেটে। বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে অংশ গ্রহণকারী কৃষকদের মানসম্মত নাস্তা ও খাওয়ার দেওয়া হচ্ছেনা বলেও মৌখিক অভিযোগ জানান কৃষকরা ।
বেশির ভাগ কৃষকই জানে না, তাঁদের জন্য সরকার কি পরিমাণ বরাদ্দ দিচ্ছে এবং কৃষকরা পাচ্ছেন কতটুকু। তাঁরা বলছেন, আমরা তো এত কিছু জানিও না, আর বুঝিও না। কৃষি অফিসে বরাদ্দের পরিমাণ জানতে চাইলে পরে আর কিছুই দেয় না। উল্টো তার নাম কেটে দেওয়ার হুমকি ধমকিও দেন এ কর্মকর্তা। এতে কৃষকরা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান, প্রদর্শনীর বিভিন্ন উপকরণ ক্রয় বাবদ সরকার বরাদ্দ দেয় উপজেলা কর্মকর্তা বরাবর। প্রদর্শনী অনুযায়ী কৃষক নির্বাচন করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে। তারা কৃষক নির্বাচন করে নিশ্চিত করেন উপজেলা কর্মকর্তাকে।
একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে উপ-সহকারীদের সঙ্গে সমন্বয় করার কথা। নিয়ম অনুযায়ী, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষক নির্বাচন করে উপজেলা অফিসে জমা দেবেন। পরবর্তী সময়ে কৃষি কর্মকর্তা উপকরণ কিনে নির্ধারিত একটি তারিখে কৃষকদের অফিসে আসতে বলবেন। পরে সেখান থেকে উপকরণ বিতরণ রেজিস্ট্রারে (স্টক-রেজিস্ট্রার) স্বাক্ষর রেখে মালামাল বুঝিয়ে দেয়া হয় কৃষককে। এ ক্ষেত্রে তিনি কোনো উপ-সহকারীর সঙ্গে সমন্বয় করেননি।
সমন্বয় না করলে প্রদর্শনীতে কী কী উপকরণ বরাদ্দ এসেছে সেগুলো উপ-সহকারী কর্মকর্তা কিংবা কৃষকদের জানারও সুযোগ থাকে না। আর কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবদুল আলিম সরকারকে দিয়ে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন, তার নিজস্ব লোকে দিয়ে শতকরা পার্সেন্টেজ নেন অভিযোগ উঠছে ।
একটি একটি সূত্র জানান, কৃষি কর্মকর্তা মিনাজুল হক ( নবাব ) কে তার ব্লকে সবচেয়ে বেশি প্রকল্প দেন, আর মিনহাজুল বিভিন্ন দোকান ও ডিলার, রেস্টুরেন্ট এর কাছ থেকে মেমো নিয়ে এসে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে বিভিন্ন প্রকার প্রকল্পের টাকা আত্মসাত করেন ।
এসএসিপি প্রকল্পে টাকা তাড়া হুড়া করে ৩০ জুন উত্তোলন করে কৃষি অফিসার।
১৭ -০৩-২০২৪ ইং তারিখে – তৎকালীন অর্থমন্ত্রী বরাবরে ২৯ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা , উপজেলা কৃষি অফিসার জোহরা সুলতানার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন , লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, উপ-সহকারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, অসদাচারন, জুলুম, মানসিক নির্যাতন তথ্য গোপন, কথায় কথায় বদলি শোকজ নোটিস প্রদান, মাঠ দিবসের বরাদ্দকৃত ও বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ লুটপাট ।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা আরোও জানান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানার দুর্নীতির অনিয়মের প্রতিবাদ করায় দুই উপ-সহকারীর বিরুদ্ধে কৃষি অফিসার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সিলেট বদলি করে দেন। পরে বদলীর কথা জানাজানি হলে উপজেলা কৃষি অফিসে পাক্ষিক প্রশিক্ষণ ( সম্মেলন কক্ষে ) ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকল উপ-সহকারীরা কালো ব্যাজ ধারণ করে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে উত্তর ভোলনাথ পুর রবি মৌসুমে প্রনোদনা কর্মসূচি আওতায় সমলয়ে বোরো হাইব্রিড ধান চাষ কার্যক্রম প্রদর্শনী দেওয়া হয়। ঐ সমলয়ে বরাদ্দ ছিল প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা, সেই টাকা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবদুল আলিম সরকারকে সঙ্গে নিয়ে কৃষি অফিসার জোহরা সুলতানাসহ সিংহভাগ টাকা আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ উঠছে ।
এই কৃষি কর্মকর্তা যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে যাচ্ছে।
গত ৪ জানুয়ারী-২০২৩ সালে ৬০ ব্যাগ (প্রতি ব্যাগ ১০ কেজি ওজনের) কৃষি প্রণোদনার বোরো ধানের বীজ স্টেশনরোড় সড়কের সোনালী ব্যাংকের সামনে থেকে আটক করে স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি একটা মিটিংগে আছি আপনার সাথে পরে কথা বলবো বলে সুকৌশলে মোবাইল ফোন কেটে দেন ।