এ এ রানা , সিলেট ব্যুরো ::
১৯৭১ সালের রক্তেগড়া এই বাংলাদেশে এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র এখন ‘ সোনার হরিন”! এই কার্ড সংশোধন করতে গিয়ে ‘নির্বাচন অফিস’ কর্তৃক নানান হয়রানীর শিকার হচ্ছেন দেশের জনসাধারণ।
এ নিয়ে বর্তমান চলিত মাসের রোজ সোমবার ৮ এপ্রিল সিলেট থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক ভোরের সিলেট’ পত্রিকা “ভোগান্তির আরেক নাম সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস” শিরোনামে নাতিদীর্ঘ অনুসন্ধানী একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রথম কিছুদিন নির্বাচন অফিস কর্তৃপক্ষ সাধুতার পরিচয় দেখালেও পরবর্তীতে আবারও যেই আগের মতো অভিযোগ আসতে থাকে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে।
বাংলাদেশের নাগরিকদের জীবনে অতীব গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় কার্ড হচ্ছে এখন ‘এনআইডি কার্ড কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র ‘।
প্রবাসে যেতে পাসপোর্ট করা, বিদেশ ভ্রমণ, সরকারি কার্যালয়ের সকল কর্ম ব্যাংক-বীমা-আর্থিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল কাজেই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্ডের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শুধু তাই নয় এনআইডি সামান্য ভুল হলে তা গ্রহণ করা হচ্ছে না। আর এই ভুল সংশোধন করতে গিয়ে বৃহত্তর সিলেটের সাধারণ মানুষকে পড়তে হচ্ছে নানান ভোগান্তি ও বিড়ম্বনায়।
মাসের পর মাস ঘুরে অনেক ক্ষেত্রে বছর ঘুরে অনেকে ‘সোনার হরিন’ -খ্যাত এই এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে পারছেন না। এ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ ওঠেছে ‘সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস’ এর বিরুদ্ধে। এখানে কর্মরত কয়েকজন কর্তাব্যক্তি ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কোনো কোনো এনআইডি সংশোধনে অবৈধ উপায়ে বিপূল পরিমান টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
প্রবাসী অধ্যূষিত দ্বিতীয় লন্ডন হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেট বিভাগ। এই সিলেট জেলার শতকরা ৬৫ জন মানুষই প্রবাসী। যাদের সমস্যার শেষ নেই! তাদের সাথে যারা স্বদেশে রয়েছেন তাদের হয়রানির ও শেষ নেই।
যে হয়রানির কেন্দ্রস্থল হলো সিলেট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়। দেশে বসবাসরত মানুষ ও বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের প্রত্যেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্রে সমস্যা। জাতীয় পরিচয়পত্র কার্ডে রয়েছে অসংখ্য ভূল। কারও নামে ভূল। কারও জন্মতারিখে ভুল। কারও ঠিকানায় ভুল। আবার কারো বাবা-মার সঙ্গে রয়েছে বয়সের বিস্তর ব্যবধান।
এসব ভুলে প্রায়-প্রতিনিয়ত এখানকার সহজ-সরল সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সেবা থেকে। আবার অনেকেই উচ্চ শিক্ষা অর্জন করেও জাতীয় পরিচয়পত্র কার্ডের সামান্য ভুলে সরকারি -বেসরকারি চাকুরী পাওয়ার ক্ষেত্রে পোহাচ্ছেন নানান দুর্ভোগ, পড়েছেন বিড়ম্বনায়।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। এখানে প্রবাস থেকে সরকারি সংক্ষিপ্ত ছুটি নিয়ে যারা আসেন তারা কাগজ-পত্র সরবরাহ করতে গিয়ে সময় ক্ষেপন হওয়ায় আবার বিদেশ চলে যান। এ ক্ষেত্রে তাদের কোন কাজই হয় না এই নির্বাচন অফিসে। এতে নির্বাচন অফিসের স্থানীয় কর্মরত ব্যক্তিতের যোগসাজশে কন্ট্রাক্ট করে জাতীয় পরিচয়পত্রের সকল ভুল সংশোধন করতে হয়।