নুরুল কবির, বিশেষ প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম বন্দর নগরী চট্টগ্রামে জমে উঠেছে ঈদবাজার। রমজানের শেষের দিকে এসে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মধ্যরাত পর্যন্ত সেই ভিড় থাকে। পছন্দের পণ্যটি কেনার জন্য ক্রেতারা এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেটে ছুটছেন। অপরদিকে বিক্রি বাড়ায় বিক্রেতাদের মুখেও হাসি ফুটেছে। বিক্রেতারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় বিক্রি কিছুটা কম হলেও ঈদের সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বিক্রি বাড়ছে। তবে ক্রেতারা বলছেন, এ বছর পোশাকের দাম গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। ক্রেতারা ইফতার পরবর্তী সময়ে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের নতুন জামা কাপড়ের কেনাকাটা সেরে নেয়ার জন্য বেরিয়ে পড়ে। সরেজমিনে নগরীর টেরীবাজার, নিউ মার্কেট, রেয়াজউদ্দিন বাজার, তামাকুমণ্ডি লেইন, জহুর হকার্স মার্কেট, বালি আর্কেড, কেয়ারি ইলিশিয়াম, সেন্ট্রাল প্লাজা, মিমি সুপার মার্কেট, আফমি প্লাজা, ফিনলে স্কয়ার, শপিং কমপ্লেক্স, স্যানমার ওশান সিটি, ইউনেস্কো সিটি সেন্টার, আমীন সেন্টার, ভিআইপি টাওয়ার, আখতারুজ্জামান সেন্টার, সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট এবং মতি টাওয়ার,গোলজার টাওয়ার ও নগরীর অধিকাংশ ছোট বড় শপিং কমপ্লেক্সের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রত্যেকটি দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া। বিক্রেতাদের যেন দম ফেলার ফুসরত নেই। ক্রেতাদের আকর্ষণে বিরতিহীনভাবে বিভিন্ন ধরনের পোশাক এবং পণ্যের কালেকশন দেখিয়ে যাচ্ছেন। ক্রেতারা আগ্রহ নিয়ে সেইসব পণ্য খুঁটিয়ে দেখছেন। এতে ক্রেতারা বিক্রেতাদের সাথে দরদাম করে তাদের পছন্দসই জামা কাপড় ক্রয় করে বাসায় ফিরছে। টেরীবাজারে আসা গৃহিণী ফারজানা আক্তার বলেন, বাচ্চার জন্য গেঞ্জি ও পাঞ্জাবি কিনতে এসেছি। তবে এবার গত বছরের চেয়ে জিনিসপত্রের দাম একটু বেশি। দামের বিষয় জানতে চাইলে মোঃ ইব্রাহিম নামে একজন বিক্রেতা বলেন, পোশাকের আমদানি খরচ আগের চেয়ে বেড়েছে। এছাড়া বেড়েছে ব্যবসার পরিচালনা ব্যয়। তবে আমরা ক্রেতাদের কাছে ন্যূনতম লাভে পণ্য বিক্রি করে থাকি। নাসিরাবাদ ফিনলে স্কয়ারে আসা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসরাফিল আলম বলেন, বন্ধুর সাথে সাথে পাঞ্জাবি কিনতে এসেছি। জেসমিন আক্তার নামের একজন বলে দুদিন আগে ফিনলে থেকে নিজের জন্য গাউন এবং আম্মুর জন্য সেলোয়ার কামিজ নিয়েছিলাম। সেন্ট্রাল প্লাজায় গৃহিণী নুসরাত তাবাসসুম বলেন, ঈদের বাকি আর দুই সপ্তাহও নেই। তাই ড্রেস কিনতে এসেছি। সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতির অর্থ সম্পাদক ও ঈদ বিক্রয় উৎসব কমিটি সদস্য সচিব মীর নাছির উদ্দিন শিকদার বলেন, আমাদের মার্কেটে বিক্রি ভালোই হচ্ছে। ঈদ বিক্রয় উৎসবে আমরা ক্রেতাদের জন্য লাকি কূপন এবং অনেক ধরনের আকর্ষণীয় পুরস্কারের ব্যবস্থা করেছি। জহুর হকার্স মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সদস্য সচিব ফজলুল আমিন বলেন, মার্কেটে এখন জমজমাট বিক্রি চলছে। ইফতারের পর থেকে ক্রেতার চাপ বাড়ে। জহুর হকার্স মার্কেটে ক্রেতারা আসে মূলত কম দামে ভালো পণ্যটি কেনার জন্য। আমরা সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছি বলেই ঈদের মৌসুমে ক্রেতাদের পদচারণায় মুখর থাকে এই মার্কেট। আশা করি সামনের দিনগুলোতে বিক্রি আরো ভালো হবে। রেয়াজউদ্দিন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. ছালামত আলী বলেন, মার্কেটে এখন জমজমাট বিক্রি চলছে। ক্রেতারা সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মার্কেটে ভিড় করছেন। ঈদকে কেন্দ্র করে এ বছর ব্যবসায়ীরাও নতুন নতুন পোশাক নিয়ে এসেছেন। তবে শ্রেণীবিভেদ করে ফুটপাত কেন্দ্রিক দোকানগুলোতে সন্ধ্যাকালীন সময়ে নিম্ন আয়ের মানুষের ভিড় লেগেই আছে। খেটে খাওয়া মানুষগুলো পরিবার-পরিজন নিয়ে সাধ্যের মধ্যে যতটুকু পারা যায় পছন্দনীয় জামাকাপড় কিনতে দেখা গেছে।