মোঃ রহমত উল্লাহ:
পোল্ট্রি সাদাটা বিক্রি হচ্ছে কেজি ২৩০ টাকা করে। সোনালীর কেজি ৩৪০ টাকা। গরুর মাংসের কেজি ৮৫০ টাকা। জ্বি। আপনি দামাদামি করার কোন সূযোগ-ই পাবেননা। কসাই ব্যাটা আপনার দিকে তাকাবেইনা। ভারী দম্ভ তার। কথা গুলো বলেছিলেন এক গার্মেন্টস কর্মী আলমগীর হোসেন। তিনি আরও বলেন আমার পরিবারে লোক সংখ্যা পাচজন ১৭ হাজার টাকা বেতন পেয়ে চলতে অনেক কষ্ট হয়। আমার চেয়ে আরও কম বেতন পায় পাশের রুমের সিকিউরিটি কনক ভাই, ওনার বেতন মাত্র ১২০০০ টাকা। আলমগীর ভাই আরও বলেন :
মাছের গায়ে আগুন। তেলাপিয়ার কেজি ৩০০ টাকা! রুই-কাতল-মৃগেল এইমুহুর্তে আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। পাবদা ৫০০ টাকা। ছোট চিংড়ি খুঁজছিলাম লাউ দিয়ে খাবো বলে, দাম শুনে ইজ্জত সহ কেটে পড়েছি। ছোট একটুকরো কুমড়ো কিনেছি ৭০ টাকা দিয়ে। কাটার পর সেই কুমড়ো টুকরোর সাইজ দেখে মন খারাপ হয়ে গেলো। লেবু ছোট সাইজেরটা হালি আশি টাকা, বড়টা একশ বিশ! এক জায়গায় দেখলাম দোকানী চিৎকার করে টমেটো বিক্রি করছে, তিন কেজি একশ! আগ্রহ নিয়ে তার দোকানে গেলাম। টমেটোর রকম দেখে মন খারাপ হয়ে গেলো, এই জিনিস গরুও খাবেনা। প্রত্যেকটা তরকারীর দাম বাড়তি। শসা আর গাজর পাশাপাশি টুকরিতে বসে অহংকারী দৃষ্টিতে আকাশ দেখছে। যা দাম তাতে এই অহংকারটুকু তাদের মানায়।
খেজুর কিনিনি। দাম জিজ্ঞেস করার সাহস-ই পাইনি। মুড়ি ১৪০ টাকা! আমি চাপাস্বরে বললাম, কম দামেরটা দেখান। ছোলা, বেসন, মশুরির ডাল গাল ফুলিয়ে বসে আছে, আমি পাত্তা দিলামনা। রোজার প্রাথমিক ঝাপটাটা যাক তারপর দেখবো। চিনি কিনছি আধা কেজি।
এরপরেও মানুষ কি কিনছেনা? কিনছে। কিন্তু প্রত্যেকটা জিনিস কেনার পর বাতাসে কান পাতলে তাদের দীর্ঘনি:শ্বাসও শোনা যায়। সেই দীর্ঘনি:শ্বাস বড় ভারী। মুনাফালোভী ব্যবসায়ী আর ক্ষমতাসীন চোরদের কানে সেই দীর্ঘনিঃশ্বাস পৌঁছায়না। আল্লাহ অন্তরের সাথে সাথে তাদের কানেও সিলমোহর মেরে দিয়েছে।