স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জ সমাজসেবা ভবণে সিডিউল মোতাবেক স্প্রেনের যন্ত্রপাতির স্থলে লোকাল যন্ত্রপাতি দিয়ে লিফট তৈরী করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন দূর্নীতির বরপূত্র মেসার্স নাঈমা এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী ইব্রাহিম খান।
তিনি বরিশাল জেলার মৃত আব্দুল ওয়াহাব এর ছেলে এবং বর্তমানে তার কার্যালয় ময়মনসিংহ জেলার ৩২০ সারিন টাওয়ার চরপাড়া মোড়ে এবং তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করছে একই শহরের পাট গুদাম র্যালীর মোড়ে। তিনি দীর্ঘদিন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের লিফটম্যান হিসেবে কর্মরত থেকে হঠাৎ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাঈমা এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী হয়ে গণপূর্ত বিভাগে ট্রেন্ডারের মাধ্যমে সুনামগঞ্জে প্রায় ৮৬ লাখ টাকায় এবং সিলেট গণপূর্ত বিভাগের সমাজসেবা ভবণে লিফটের কাজের জন্য ট্রেন্ডারের মাধ্যমে (সিলেট সমাজসেবা ট্রেন্ডার আইডি নং-৬২৭১৪৩)প্রাক্কলিত ব্যয় ৮২ লক্ষ ৯৯ হাজার ৮৭০.২৫৪ টাকায় সর্বনিম্ন ধরদাতা হিসেবে এই প্রতিষ্ঠান নাঈমা এন্ট্রার প্রাইজ আলাদাভাবে সিলেট ও সুনামগঞ্জে দুটি ভবণের লিফটের কাজ ভাগিয়ে নেন।
এরমধ্যে সুনামগঞ্জে নবনির্মিত ৬ তলা বিশিষ্ঠ সমাজসেবা ভবণে দুটি মধ্যে একটির কাজ সম্পন্ন করলে ও আরেকটি কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কাজের সিডিউল মোতাবেক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ স্প্রেনে ভিজিট করে স্প্রেন থেকে অরজিন্যাল মালামাল (যন্ত্রপাতি)এনে লিফটের কাজ সম্পন্ন করার কথা থাকার পরও সিলেট এবং সুনামগঞ্জের কোন কর্মকর্তা স্প্রেনে ভিজিট না করে ময়মনসিংহ সংরক্ষিত গোডাউন পরিদর্শন করে দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে যে সকল কোলন(দুইনম্বর) লোকাল মালামাল লাগানো হয়েছে তার কিছু তালিকা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
১- এলওবি- লোকাল, ২-মাদার বোড, ইন্ডিয়া(এআরকেইএন),৩- মটর চাইনিজ, ৪- মটর বেইজ লোকাল,৫-মটর পুলি লোকাল(মালিবাগ বন্ধন প্রকৌশলীতে বানানো,৬- এআরডি লোকাল,৭ -স্পিড গর্ভনর(পুরাতন) লোকাল,৮- কাউন্টার ওয়েট,৯- এবিআর (মাইক্রো) স্টীগার লাগানো লোকাল,১০- কেবিন সাইটব্রাশ ইউক-ইউথ,ফ্রেম আন্ডার এন্ড লয়ার ফ্রেম লোকাল ও গাইড রেইল(পুরাতন) এই সকল মালামাল স্প্রেনের পরিবর্তে লোকাল মালামাল দিয়ে সিলেট সমাজসেবা ভবণের লিফটের কাজ সম্পন্ন করেন যার ব্যয় মূল্যে আনুমানিক ৯ থেকে ১০ লক্ষ টাকা।
রাজধানী শহরের মালিবাগে তৈরী(লোকাল) দুই নম্বর মালামাল লব আইএমইএম স্ট্রীকার বসানো এই যন্ত্রপাতি দিয়ে সুনামগঞ্জ ও সিলেটের দুটি প্রতিষ্ঠানে লিফট বসানোর কাজ সম্পন্ন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন বলে এমন অভিযোগ ও রয়েছে। দেশীয় কোম্পানীতে তৈরী করা এই যন্ত্রপাতি দিয়ে সুনামগঞ্জে সমাজসেবা ভবণে দুটি লিফটের কাজ সম্পন্ন করেছেন। আরো জানা যায়,ময়মনসিংহ ওয়ার্কসপে বানানো হয়েছে কাউন্টার ওয়েট,লোকাল এবিআর(মাইক্রো) স্ট্রীকার লাগানো,কেবিন সাইটব্রাশ ইউক ইউথ ফ্রেস,সিপার এন্ড লয়ার ফ্রেম লোকাল এবং কোন ধরনের সেপ্টি ডিভাইজ নাই , কোলন লিফটের চেয়ে ও নিম্নমানের ব্যবার করায় যেকোন সময় মারাত্মক র্দূঘটনা ঘটতে পারে এমন আশংঙ্কা সাধারন মানুষের মাঝে। এই লিফট দুটি তৈরী করতে তাতে আনুমানিক ব্যয় হয়েছে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা। আর বাকি টাকা দূর্নীতির মাধ্যমে উত্তোলন করে নিয়েছেন এই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সত্বাধিকারী ইব্রাহিম খান। উল্লেখ্য যে এর আগেও তিনি দিনাজপুর আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে ১৬০০ কেজি বেড লিফট ট্রেন্ডার আইডি নং-৩৯২৫২৪, গত ০৯/০৪/২০২০ ইং তারিখে জাপানী লিফট সরবরাহ করার নিমিত্বে ওয়ার্ক অর্ডার প্রদান করা হয়। কিন্তু তার অসৎ উদ্দেশ্যে চরিতার্থ করার লক্ষ্যে তার স্থলে চায়না লিফট সরবরাহ করে যা চিটাগাং ফোর্ট ভিজিট করার সময় ধরা পড়ে। তৎকালীন সুপারেন্টেট ইজ্ঞিনিয়ার এই দুই নম্বরী চুরির কাজ ধরা পড়ে। পরবর্তীতে তাকে ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হয়। উক্ত কর্মকর্তা এই দূর্নীতিবাজ টিকাদার ইব্রাহিম খানের পিজি বাতিল করেন,কার্যাদেশ বাতিল করেন। যার স্মারক নং-২৩৭৮,তারিখ ২৭/০৯/২০২১ ইং। এমনকি লাইসেন্সে ব্ল্যাকলিষ্ট করার জন্য উধর্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করেন,যা অজ্ঞাত কারণে স্থগিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় জামালপুর সুইট প্রতিবন্ধী কলেজে বি ক্যাটাগরি লিফটের স্থলে ভেজনা কোম্পানী নিম্নমানের লিফট বসানো,জামালপুর রাসেল একাডেমি এ ক্যাটাগরি লিফট দেয়ার স্থলে ভেজনা কোম্পানী হতে নিম্নমানের যন্ত্রাংশ দিয়ে লিফট স্থাপন করেন।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাঈমা এন্টার প্রাইজের সত্বাধিকারী ইব্রাহিম খানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে এবং লিফটের কাজে নিম্নমানের সামগ্রী বিতরণের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি হাস্যরসে উড়িয়ে দিয়ে ব্যস্ত বলে ফোনের লাইন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমূল হাসান হীরা জানান সরেজমিনে বিষয়টি তদন্ত করে দেখব এবং তদন্তদ সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, সিলেট জোন এর ওম প্রকাশ নন্দী জানান,লিফট তৈরীতে কোন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অনিয়ম কিংবা দূর্নীতি করলে তা তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ##