এ এ রানা:: সিলেটের মেজরটিলায় ওয়াকওয়ের মাটি ভরাট চলছে টিলার মাটি দিয়ে শিরোনামে ” জাতীয় দৈনিক বিকাল বার্তায় সংবাদ প্রকাশের পর ও সময় টিভি বাংলা” প্রকাশ হয়,
ঘুম ভেঙেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও প্রশাসনের। ইতিমধ্যে জড়িতদের তলব করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও শাহপরান থানা পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে টিকাদারদের মধ্যেও চলছে বিতর্ক, দৌড়ে ঝাপ শুরু করেছেন চান্দের টিলার মালিক লন্ডনী সিরাজ এবং তরিক উদ্দিন। তারা নিজেদের অপরাধ ঢাকতে সরকার দলীয় নেতাদের দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। শুধু তাইনা টিকাদার রাসেল এই চান্দের টিলার মাটি দিয়ে তাহার দুটি পুকুরও ভরাট করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই পুকুর ভরাটের টিলা মাটি ঢাকতে বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করছেন।
এরই মধ্যে মেজরটিলায় সিসিক নির্মিত ওয়াকওয়ের টিলা মাটি বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে তবুও দেখা যাচ্ছে টিলার মাটি। সত্যতা যাচাইয়ে পরিবেশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং টিলার মাটি ব্যবহারের সত্যতা পেয়েছেন।
এব্যপারে সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বদরুল হুদার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন আমরা সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে ওয়াকওয়েতে টিলার মাটি ব্যবহারের সত্যতা পেয়েছি। কাউন্সিলরের যে দুটি পুকুর ভরাট করা হয়েছে সেটিরও সত্যতা পেয়েছি। আমরা একমাস আগে চান্দের টিলা কাটার জন্য রতন বাবু ও রাসেলের বিরুদ্ধে পরিবেশ আদালতে মামলা করেছি, এখন আরো বেশী টিলা কাটা হয়েছে আমরা শীগ্রই চার্জশীট দিবো। তিনি আরো বলেন টিলা কাটার অবস্থা খুব বাজে, যারা কাটে তাদের লজ্জা শরম নেই।
সরেজমিন ওয়াকওয়ে এলাকায় গিয়ে
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায় তরিক উদ্দিন হচ্ছেন টিলা মাটি বিক্রির মুলহোতা। তিনিই লন্ডনী সিরাজকে মাটি বিক্রি করতে উৎসাহিত করেন। লাভ দেখান একদিকে মাটি বিক্রি করলে টাকা পাওয়া যাবে, অন্যদিকে টিলা কর্তন হলে প্লট করে বেশী দামে বিক্রি করা যাবে। অথচ এই টিলা কর্তনের জন্যই গত ১০ জুন চামেলিবাগে টিলাধসে দূর্ঘটনায় তিনজন নিহত হয়। এরপর সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেনসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে টিলা কাটার বিরুদ্ধে জিরোটলারেন্স ঘোষনা করেন। এর পরও বন্ধ হচ্ছেনা খাদিমনগর শাহপরান এলাকায় ভূমি খেকোদের টিলা কাটা।
পরিবেশ অধিদপ্তর মাঝে মধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে অভিযান দিয়ে জরিমানা করলেও অপরাধীরা জরিমানা পরিশোধ করে আবারও দেদারসে টিলা কর্তন করে। স্থানীয়দের অভিযোগ পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বদরুল ইসলামকে ম্যানেজ করেই চলে টিলাকাটা উৎসব।
১১জুন সংবাদ প্রকাশের পর রুহেল আহমদ অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সাংবাদিক হাসান জুলহাস ও আবদুল আলিম রানাকে খুঝতেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় চান্দের টিলার ভিতরে আরো একটি টিলাকর্তনের ফলে ভারী বৃষ্টিতে ধসে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। রাস্তা পরিস্কার করলে পার্শ্ববর্তী বাড়ী ভেঙে যাবে, তাই সিটি কর্পোরেশন রাস্তা পরিস্কার করতে পারছেনা।
উল্লেখ্য গত ১১ জুন সিলেটের মেজরটিলায় ওয়াকওয়ে ভরাট চলছে টিলার মাটি দিয়ে শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সিলেট মহানগরীর মেজরটিলা এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের ৩২ নাম্বার ওয়ার্ডে টিলার মাটি দিয়ে চলছে ওয়াকওয়ে নির্মানের মাটি ভরাট কাজ। বর্তমানে বৃষ্টির জন্য মাটি ভরাট কাজ বন্ধ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় নগরীর ৩২ নাম্বার ওয়ার্ডে মেজরটিলা-নুরপুর রাস্তায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের একটি ওয়াকওয়ে নির্মান কাজ চলমান রয়েছে, সেই নির্মান কাজে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। আর এই মাটি ভরাটের কাজ করছেন সুভাষ ও রাসেল নামের দুজন টিকাদার। তারা একই ওয়ার্ডের দক্ষিণ ইসলামপুর ফালগুনি আবাসিক এলাকার চান্দের টিলা নামের একটি স্থানীয় টিলা থেকে মাটি কেটে ভরাট করছেন নির্মানাধীন ওয়াকওয়ে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায় এই চান্দের টিলার মালিক লন্ডন প্রবাসী সিরাজ উদ্দিন ওরফে লন্ডনী সিরাজ এবং তরিক উদ্দিন নামের দুই ব্যক্তি। তরিক উদ্দিনের ব্যবসায়িক পার্টনার লন্ডনী সিরাজ। যার সাথে তরিক উদ্দিনের রয়েছে দহরমমহরম। কিছুদিন পর পর বাসায় দাওয়াত দিয়ে লন্ডনী সিরাজকে আপ্যায়ন করিয়ে ব্যবসায়িক সম্পর্ক মজবুত করেন।
চান্দের টিলার দুই মালিক ও ব্যবসায়িক পার্টনার সিরাজ এবং তরিক উদ্দিনের সাথে টিকাদার সুভাষ ও রাসেলকে মাটি ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য মধ্যস্ততা করেছেন সেচ্ছাসেবকলীগ সিলেট জেলা কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আ ক দ সাহেদ। যার কারনে মাটি বিক্রির টাকার একটি অংশ তিনিও পান। চান্দের টিলায় মাটি কাটার কারনে পাশ্ববর্তী বাড়ীঘর হুমকির মূখে পড়েছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘটনা, এমন কি প্রানহানীও ঘটতে পারে। যার প্রমান গত ১০জুন মেজরটিলা চামেলিবাগ এলাকার ৩৫ নং ওয়ার্ডে টিলা ধসে স্বামী, স্ত্রী ও শিশু সন্তানসহ একই পরিবারের ৩ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
টিলার মাটি দিয়ে ওয়াকওয়ে ভরাটের বিষয়ে জানতে টিকাূদার সুভাষের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন আমি অসুস্থ এখন আর কাজ করাচ্ছিনা বলে দায় এড়িয়ে যান।
টিলার মাটি দিয়ে ওয়াকওয়ে ভরাটের বিষয়ে জানতে অপর টিকাূদার রাসেলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে বার বার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তাহার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। রাসেল স্থানীয় ৩২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহেল আহমদ এর ভাই।
টিলার মাটি বিক্রির বিষয়ে জানতে টিলার মালিক ও লন্ডনী সিরাজের ব্যবসায়িক পার্টনার তরিক উদ্দিন এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন টিলা আমদের মৌরসি সম্পদ, সেই হিসেবে মালিক আমি। তবে সিরাজ লন্ডনী কে আমি চিনিনা। তার সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই বলে এড়িয়ে যান।
টিলার মাটি দিয়ে ওয়াকওয়ে ভরাটের বিষয়ে জানতে
স্থানীয় ৩২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহেল আহমদ এর সাথে যোগাযোগ করতে তাহার মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে বার বার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তাহার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
টিলা কাটার বিষয়ে জানতে সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা নাসরিন আক্তার এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন আমিতো টিলাকাটা ও ভূমিখেকোর বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা ও জরিমানা করছি, কিন্তু বন্ধ হচ্ছেনা। আর সিটি কর্পোরেশন আমার এলাকার বাহিরে, তবে আমি এখনই সিটি কর্পোরেশনের ম্যাজিট্টেটকে বলে দিচ্ছি।
এ ব্যপারে শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ চৌধুরী জানান-চান্দের টিলা কাটার বিষয় তিনি কিছু জানেননা। তবে এখনই খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।