এম,হোছাইন আলী
(কক্সবাজার) কুতুবদিয়া প্রতিনিধি।
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ট্রলারসহ অপহৃত ১৯ জেলে অবশেষে তিনদিন পর বাড়ি ফিরেছেন। রবিবার (১০ নভেম্বর) বিকেল ৪ টায় কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর ধূরুং আকবর বলীর ঘাটে ফিশিং ট্রলারটি ফিরলে কুতুবদিয়া উপজেলা প্রশাসন তাদের রিসিভ করে। পরে যে যার মতো করে তাদের বাড়িতে ফিরে যান। এদিকে স্বস্তি ফিরেছে তাদের পরিবারের মাঝে।
জানা যায়, জলদস্যুরা ফিশিং ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল করে দিয়েএসব জেলেদের সাগরে রেখে চলে যায়। রবিবার সকালে ভাসমান অবস্থায় ফিশিং ট্রলারটিকে অন্য একটি ফিশিং ট্রলার উদ্ধার করে কুতুবদিয়ার পথে রওনা দেয়।
এর আগে ০৪ নভেম্বর ফিশিং ট্রলার নিয়ে ২১জন মাঝি মাল্লা বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যায়।গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত অনুমান ২টার দিকে মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপের পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুরা মাছ ধরার ‘আল্লাহ দয়া'(৩)নামের ফিশিং ট্রলারে ডাকাতি করে। এসময় জলদস্যুুদের ছোড়া গুলিতে ফিশিং ট্রলারের মাঝি মোকাররম হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়।
গুলিবিদ্ধ মাঝিকে নিয়ে ফিশিং ট্রলারের জেলে জয়নালকে উপকূলে পৌছে দেন তারা। পরে,গুলিবিদ্ধ মাঝিকে চিকিৎসার জন্য বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে মাঝি মোকাররম হোসেনের মৃত্যু হয়।
ফিরে আসা ১৯ জেলেরা হলেন- উপজেলার উত্তর ধূরুং ইউনিয়নের আজিম উদ্দিন সিকদার পাড়ার মনছুর আলম, জমির বাপের পাড়ার শাহ আলম, রুহল আমিন ও নয়ন, চাটি পাড়ার নাছির উদ্দীন, শাহজাহান, আব্বাস উদ্দিন ও তৌহিদ, কাইসার পাড়ার প্রকাশ শুনাইয়া ও রেজাউল করিম, ফরিজ্যার পাড়ার গিয়াস উদ্দিন, মেহেদি হাসান, সাকিব, ইদ্রিস ও সায়েদ, কুইলার পাড়ার সাগর, দক্ষিণ ধূরুং ইউনিয়নের মশরফ আলী বলির পাড়ার প্রকাশ কালু ও রুবেল এবং বোটের ইঞ্জিন ড্রাইভার লক্ষীপুরের রামগতির ইসলাম মিয়ার ছেলে মোঃ শাহাজাহান।
ফিশিং ট্রলারের মালিক চট্টগ্রামের বাঁশখালী শেখেরখীল এলাকার মো. ইসমাইল হোসেন জানান, জলদস্যুরা তার ফিশিং ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল করে ১৯ জেলেকে নিয়ে সাগরে ভাসমান অবস্থায় ছেড়ে দেন। এমতাবস্থায় ফিশিং ট্রলারটি মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আসলে মাঝির সহকারী শাহ আলম তাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। পরে, তার ফিশিং ট্রলারটি নিয়ে আসার জন্য কুতুবদিয়া থেকে আরো একটি ফিশিং ট্রলার পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত জলদস্যুরা কোনো প্রকার মুক্তিপণ দাবি বা যোগাযোগ করেনি। এদিকে বিকেল ৪ টার দিকে ফিশিং ট্রলারটি কুতুবদিয়া আকবর বলীর ঘাটে ফিরলে সেখানে কুতুবদিয়া উপজেলা প্রশাসনের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,থানার অফিসার ইনচার্জ,বাংলাদেশ নৌবাহিনীর টিম তাদেরকে রিসিভ করেন এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফিরে আসা জেলেদের জন্য তাৎক্ষণিক নাস্তার ব্যবস্থা করা হয়।এ সময় ফিরে আসা_ জেলেদের এক নজরে দেখতে তাদের পরিবার আত্মীয়-স্বজনসহ শত শত লোক ঘাটে উপস্থিত ছিলেন।
ফিরে আসা জেলেরা কুখ্যাত জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানান, ঘাটে দেখা যায় আবেগঘন পরিবেশ।
কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাথোয়াইপ্রু মারমা দৈনিক বিকাল বার্তা বলেন,ফিরে আসা ১৯ জেলেকে আকবর বলি ঘাট থেকে রিসিভ করে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমুদ্রে জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনি সহায়তা দেওয়ার আশ্বস্ত করেন।