স্টাফ রিপোর্টার (দ্বীপক চন্দ্র সরকার): ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার নেত্রকোণা সরকারি মহিলা কলেজের বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কলেজের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। বক্তাগণ শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ মানসিক ও শারীরিক বিকাশে শিক্ষার পাশাপাশি সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার অবাধ সুযোগ প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন।
আগত অতিথি ও অভিভাবকবৃন্দ কলেজে লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমের প্রশংসা করেন এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি সুকুমার বৃত্তি ও মানবিক গুণাবলি অর্জনের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন ও আনুষ্ঠানিক জ্ঞান অর্জনের সাথে সাথে শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সামাজিক কাজকর্মে শিক্ষার্থীদেরকে পেশাদারিত্বের জন্য তৈরি করতে হবে। অবশ্যই বাস্তব জীবনে অনুশীলনের উদ্দেশ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগাতে হবে। কেবলমাত্র লেখাপড়ায় নয়, মানবজাতির সমগ্র জ্ঞানগত অবদানকে কাজে লাগিয়েই ভবিষ্যতের সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশকে তৈরি করতে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অনুশীলনকে কাজে লাগাতে হবে। বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নেত্রকোণা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক বিধান মিত্র। প্রধান অতিথি হিসেবে দিনব্যাপী আয়োজনের পুরস্কার বিতরণ করেন রাজনীতিবিদ ও বর্তমান সংসদ সদস্য আশরাফ আলী খান খসরু। তিনি বলেন, নেত্রকোণার এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অতীতে যেমন সংস্কৃতি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, ভবিষ্যতে ও তেমনি রাখবে এই আশাবাদ আমার আছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন লেখক অনুপ সাদি। তিনি সামাজিক অনুশীলন, সমতাভিত্তিক মূল্যবোধ, যৌথকর্ম ও যৌথপ্রচেষ্টা, সামাজিক বিকাশ, সামজিক সম্পর্ক, যূথবদ্ধতা, গণতন্ত্র চর্চা, বস্তুবাদী দর্শন চর্চা, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাধীনতা—সমতা—ভ্রাতৃত্ব, পুঁজিবাদ বিরোধীতা, সাম্যবাদ অভিমুখী প্রচেষ্টা সৃজনের পক্ষে কথা বলেন। তিনি সংস্কৃতিকে জীবনের সামগ্রিক উন্নয়নের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করবার উপর জোর দেন এবং তদনুসারে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করবার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ। এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক অধ্যাপক মুজিবুর রহমান খান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কলেজের উপাধ্যক্ষ ড. শরীফ উদ্দীন। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক বিধান মিত্র সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে যাক সেই কামনা করেন। শেষ পর্বে উপস্থিত অতিথিবৃন্দসহ শিক্ষক—শিক্ষার্থীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানে অভিনয়, সংগীত, নৃত্য ও উপস্থাপনার মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ তাঁদের নিজস্ব কলানৈপুণ্য প্রদর্শন করে সারাটা দিন মাতিয়ে রাখেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন লেখক এনামূল হক পলাশ, চিত্রশিল্পী কামরুল হাসান, কবি দোলন প্রভা, অধ্যাপক রতন চন্দ্র শীল, অধ্যাপক রেদোয়ান রিয়াদ, অধ্যাপক নাজমুল হুদা, নৃত্যশিল্পী নুসরাত রুমিসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।
———০———