সিলেট প্রতিনিধি :
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বিগত দিনে সরকারের শত জুলুমের শিকার হয়েও মানুষের পাশে ছিলো, সবসময় আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের নেতৃত্বে এদেশের আপামর মানুষ গণঅভ্যুথান ঘটিয়েছে। আগামীর বাংলাদেশে অন্যায়কারীদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, বিগত সরকার দেশকে কেবল পিছনের দিকে নিয়ে গেছে। সর্বক্ষেত্রে দলীয়করণ করে দেশে সহিংস ও প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের সাধারণ মানুষ এক নতুন বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে।
সোমবার দুপুর ২টায় সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌরশহরের একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টের হলরুমে আয়োজিত বিয়ানীবাজারে কর্মরত প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির সাথে জামায়াতের সম্পর্ক চমৎকার। দেশপ্রেমিক সব রাজনৈতিক দল মিলে একটি সুন্দর বাংলাদেশ তৈরিতে কাজ করে যাবে তার দল। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামায়াত আগামী নির্বাচনে তিনশ আসনে প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে যদি ইসলামী দলগুলো নিয়ে কোনো সম্মিলিত পদক্ষেপ হয় তাতে তাদেরও অংশগ্রহণ থাকবে।
মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, বিয়ানীবাজারের মতো সীমান্তের একটি জনপদ থেকে বৃহৎ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্বকালেও রাজনীতির অপব্যবহার করিনি। আগামীতেও রাজনীতিকে ব্যবহার করে কোন অপকর্ম করা কিংবা টাকা-পয়সা বানানোর খায়েস আমার নেই। তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময়ে বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে। কোরআনের পাখি আল্লামা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীকে মিথ্যা অভিযোগে সাজা দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে পরিকল্পিতভাবে সরকারের দোসর চিকিৎসকরা অপচিকিৎসা দিয়ে তাকে হত্যা করেছেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মাওলানা সাঈদীকে হত্যার বিচার দাবি করছে।
আগামী নির্বাচনে সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ) আসনে সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা পোষণ করে তিনি বিজয়ী হলে বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জকে একটি আধুনিক-আদর্শ জনপদ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি দেশের বিগত দিনের প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি ও আগামীর সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের বিষয়েও বিস্তর আলোকপাত করেন।
সভায় মফস্বল সাংবাদিকদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়েও বক্তব্য রাখেন। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীর পক্ষে সঠিক তথ্য তুলে ধরা ও ইতিবাচক বিয়ানীবাজার উপস্থাপন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিয়ানীবাজার উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ফয়জুল ইসলাম, সাবেক নায়েবে আমীর আবুল খায়ের, সাবেক সেক্রেটারি মুফাসসির আহমদ ফয়েজি, নায়েবে আমীর মোস্তফা উদ্দিন, সেক্রেটারী কাজী আবুল কাশেম চৌধুরী, অফিস সম্পাদক রুকন উদ্দিন, বিয়ানীবাজার উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুল হামিদ, বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রশিবিরের দক্ষিণ শাখার সভাপতি আহবাব হোসেন মুৃরাদ, বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ শিবিরের সভাপতি ফাতেহুল ইসলাম, পৌর শ্রমিক কল্যাণের সেক্রেটারী মুনিবুর রহমান পাবেল, জামায়াত নেতা মাও. মুজিবুর রহমান, এম. সামসুল ইসলাম প্রমুখ।