মোঃ আরফাত সানি চকরিয়া প্রতিনিধিঃ
নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে তারুণ্যের আশা-আকাঙ্ক্ষার কার্যকর প্রতিফলন চাই- এই দাবীকে সামনে রেখে
আজ (১২ আগষ্ট) আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির চকরিয়ার উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় চকরিয়ায়
অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সনাক-টিআইবি চকরিয়ার সভাপতি জনাব ছরওয়ার জাহাঙ্গীর। টিআইবির এরিয়া কো-অর্ডিনেটর শেখ মোঃ ওবায়দুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত মানববন্ধনে মধ্যে বক্তব্য রাখেন চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজের শিক্ষক ও সানক সদস্য জনাব বুলবুল জান্নাত, সাংবাদিক ও সনাক সদস্য জনাব এম আর মাহমুদ, কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চকরিয়ার অন্যতম সমন্বয়কারী জনাব মোবারক হোসেন জিহান প্রমুখ। মানববন্ধনে দিবস উপলক্ষে টিআইবির ধারণাপত্র পাঠ এবং দাবীসমূহ তুলে ধরেন ইয়েস দলনেতা সাদিয়া সোলতানা রিফাত ও সহ-দলনেতা আরমান মোহাম্মদ রাফি। মানববন্ধনে সনাক, ইয়েস ও এসিজির সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে সনাক সভাপতি জনাব ছরওয়ার জাহাঙ্গীর, এ দেশের সকল বিপ্লবে তরুণরা অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে, ইতিহাসরে দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এদেশের তরুণ সমাজ সর্বদা অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছে। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন যার অতুলনীয় উদাহরণ। এ দেশের তারুণ্য চরম স্বেচ্ছাচারী ও অগণতান্ত্রিক শক্তিকে কীভাবে পরাভূত ও পরাজিত করতে হয়, তারও পাঠ্যবই উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। নির্লোভ ও স্বার্থহীনভাবে কীভাবে নিজেকে উৎসর্গ করতে হয়, তার অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তরুণ শিক্ষার্থীরা। যারা জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, যারা আহত ও বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়েছেন Ñতাঁদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। যারা এই বিজয়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এখনও আন্দোলনের চেতনা সমুন্নত রাখতে ও বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ভূমিকার পাশাপাশি নিরলস পরিশ্রম করে রাস্তায় রাস্তায় অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করছে তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের তরুণদের এই দৃষ্টান্ত অনাগত দিনে বৈশ্বিক পর্যায়ের যে কোনো ন্যায়ভিত্তিক আন্দোলনের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। একইসঙ্গে ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে তারুণ্যের এই জয়রথ যেন সংকীর্ণ কোনো চোরাবালিতে আটকে না যায়, সেই লক্ষ্যে তাদের বাকস্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা সর্বোপরি তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন জরুরি। সনাক সভাপতি তরুণদের আশা-আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে বৈষম্যহীন, সাম্য ও মেধাভিত্তিক, গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক, সুশাসিত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিশ্ব যখন তরুণদের ওপর নির্ভর করে একটি টেকসই উন্নত বিশ্বে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখছে, ঠিক সেই মুহূর্তে তারুণ্যের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে এক ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়েছে বাংলাদেশ। একটি শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক দাবির আন্দোলনকে প্রথমে উপেক্ষা ও পরবর্তীতে অপ্রয়োজনীয় ও নজিরবিহীন বলপ্রয়োগের মাধ্যমে রাষ্ট্রকাঠামোকে সংকটের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। নির্মম হত্যাকান্ড, নির্লজ্জ মিথ্যাচার, নিপীড়ন, নির্যাতন হামলা, মামলা, গণগ্রেফতার, মানবতাবিরোধী কর্মকান্ড থেকে শুরু করে জঘন্য সকল উপায় অবলম্বন করেও তারুণ্যকে বশ করতে পারেনি স্বৈরাচার। বেসরকারি হিসাবে শিশু-কিশোর, সংবাদকর্মী ও অন্যান্য পেশাজীবীসহ প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী-জনতা হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। নিপীড়ন ও নজিরবিহীন বলপ্রয়োগের বিরুদ্ধে তারুণ্যের নেতৃত্বে জনজোয়ারে ভেসে গিয়েছে স্বৈরাচারী সরকার, পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, রাজনৈতিক দলসহ সকল পক্ষকে এই আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিতে হবেÑ তারুণ্যের শক্তিকে দমন নয়, বরং তাদের প্রাপ্য অধিকার, মৌলিক চাহিদা পূরণ এবং তরুণরা তাদের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণে, দাবি আদায়ের আন্দোলনে যাতে নির্ভার থাকতে পারেÑরাষ্ট্রকে তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। একইসঙ্গে স্বৈরাচার-পতন উদযাপনের নামে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও প্রতিষ্ঠানে হামলা; মন্দির ও উপসনালয় ধ্বংসসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ, গণমাধ্যম, পুলিশবাহিনী ও পেশাজীবিদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধপরায়ণ আচরণের মাধ্যমে তারুণ্যের এই অর্জন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যেতে পারেÑএ জাতীয় আত্মঘাতী গর্হিত অপরাধ প্রতিরোধে তরুণ সমাজ স্বপ্রণোদিত হয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। যে নতুন দিনের শুভসূচনা হয়েছে, এর মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার আলোকে রাষ্ট্রকাঠামোর আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে এদেশের সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চয়তাসহ একটি বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক সুশাসিত স্বদেশ বিনির্মাণে দুর্জয় তারুণ্য অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করবে বাংলাদেশের আপামর জনগণ সেই আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা থেকে তাদের সারথি হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা: অ্যাডভোকেট ফাতিমা আক্তার (এ. এ. জি) সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, এবং আইনী সহকারী সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট।আইন উপদেষ্টা:
এ্যাড.মো. রুবেল আল মামুন। (পাবলিক প্রসিকিউটর।) বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-১৯, ঢাকা।উপদেষ্টা: আলহাজ্ব এম.এ বারেক, সম্পাদক: মোঃ সাইফুল ইসলাম, প্রকাশক: ফকির আমির হোসেন,বার্তা সম্পাদক: আব্দুর রহিম । বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৭ মতিঝিল বা/এ (খান ম্যানশন) লিফট ৮ তলা ঢাকা ১০০০। মোবাঃ ০১৬২৫৫৫৫০১২ ই-মেইল bikalbarta@gmail.com
Copyright @ চাঁদনী মিডিয়া গ্রুপ