হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরে মাদ্রাসার জায়গায় ভরাটের নামে ফসলা জমি থেকে
মাটি কেটে নেওয়ার সময়, মাটির গাড়ী আটকে দেওয়া ও চাঁদা দাবির বিষয়ে
ইসলামিক বক্তা শোয়াইব আহমদ আশরাফী
ফেইসবুক লাইভে দাবি করে বলেন, আমার মাদ্রাসা নির্মাণের জন্য আমি মাটি নিয়ে যাচ্ছি। এই মাটিতে ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা পারভেজ চৌধুরী তার লোকজন দিয়ে চাঁদাবাজি করছে। চাঁদা না দেওয়ায় গাড়ি থামিয়ে রেখেছে। দেশবাসী দেখুন। এই অন্যায়ের বিচার করুন। আগেও তার মাধ্যমে এভাবে চাঁদাবাজির শিকার হয়েছি। তিনি ফেইসবুক লাইভে দেশবাসীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ইসলামী বক্তার ফেইসবুক লাইভ
ভিডিওটি এক ঘণ্টার ব্যবধানে ২ লক্ষ ভিউ হয়ে যায়। ঘটনাটি মাধবপুর উপজেলাসহ সোশাল মিডিয়া চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।
লাইভ করা ভিডিওটি সোশাল মিডিয়া ভাইরাল হওয়ার পর পরেই (৬ই জানুয়ারি সোমবার রাতে) ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ চৌধুরীর ফেইসবুক লাইভে এসে ইসলামি বক্তা শোয়াইব আহমেদ আশরাফী’র ফেইসবুক লাইভ ও পোস্ট এর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে, সোশাল মিডিয়ায় বলেন, আমি তো ঘটনাস্থলেই ছিলাম না। এছাড়া তিন ফসলি জমি থেকে মাটিকাটা আইনসঙ্গত নয়। এছাড়া লাইভ করা ভিডিওটিতে মাটির গাড়ী আটকের বিষয়টি দেশবাসীর সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
দুটি ফেইসবুক লাইভের বিষয় গুলো উপর নজর পড়া স্হানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা প্রকৃত ঘটনার বিষয় জানতে চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, একটি চক্র মাদ্রাসার নাম করে অবৈধভাবে ফসলা জমি থেকে মাটি কেটে এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছে একচেটিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে বলে আমার কাছে তথ্য এসেছে। তাছাড়া ফসলা জমি থেকে মাটি উত্তোলন করে যাচ্ছে, তা প্রশাসনের কোন প্রকার অনুমতি নিয়েছে কি না তাও আমাকে কোন প্রকার অবগত করেনি।
তারই ধারাবাহিকতায় মাধবপুর উপজেলার বিএনপি’অঙ্গ সংগঠনসহ স্হানীয় সচেতন মহলের বিশিষ্ট ব্যক্তিগন বিএনপি নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ পারভেজ হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ফেইসবুকে লাইভে এসে কটুক্তি, চাঁদাবাজি ও অপপ্রচার প্রকাশ করার প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে মাধবপুর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে চার ঘটিকার সময় উপজেলার তেলিয়াপাড়ায় শাহজাহানপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় চত্বরে উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মাধবপুর উপজেলার বিএনপি’র সহ-সভাপতি মোঃ পারভেজ হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মাধবপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ হামিদুর রহমান হামদু, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল বাবুল, হোসাইন মোহাম্মদ রফিক, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মোঃ এনায়েতউল্লা ও মাওলানা মিজানুর রহমান আজিজি প্রমূখ।
উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের নেতা কর্মীরাসহ স্হানীয় সচেতন মহলের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। বক্তারা বলেন, শোয়াইব আহমেদ আশরাফী একজন মাওলানা সাহেব হয়ে কিভাবে রাষ্ট্রের আইন লঙ্ঘন করে অবৈধ মাটির ব্যবসা করেন? দেশের প্রচলিত আইনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ হামিদুর রহমান হামদু বলেন, উনি যে অভিযোগ করেছেন তা প্রমাণ করতে পারলে মোঃ পারভেজ হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর যদি প্রমাণ না করতে পারেন তাহলে আশরাফী সাহেব’কে প্রকাশ্যে আবারো লাইভে দেশবাসীসহ সকলের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
আয়োজিত সমাবেশে বিএনপির নেতা কর্মীসহ স্হানীয় সচেতন মহলের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও উপস্থিত হয়ে মওলানা শোয়াইব আহমেদ আশরাফী’র মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়ে, অবিলম্বে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্হা গ্রহণ করার জন্য জোর দাবি জানিয়েছে। এসাথে মাওঃ শোয়াইব আহমদ আশরাফী প্রকাশ্যে সোশাল মিডিয়া আবার লাইভের মাধ্যমে ক্ষমা চাইতে হবে বলে সমাবেশে বক্তারা বক্তব্য দেন। এছাড়া বক্তারা তাদের বক্তব্যে হুশিয়ার দিয়ে বলেন, যদি মাওঃ আশরাফী’র অপপ্রচারের বিষয় প্রশাসনের জোর ভূমিকা পালন না করে তাহলে, পরবর্তীতে আরো কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানিয়েছেন মাধবপুরের বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীসহ সচেতন মহলের বিশিষ্ট ব্যক্তিগন। প্রতিবাদ সভায় এমন হুশিয়ারি মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সমাবেশের সমাপ্তি টানেন।
অনুষ্ঠিত সমাবেশের বক্তব্য গুলোর প্রতিক্রিয়া জানার জন্য, ইসলামি বক্তা শোয়াইব আহমেদ আশরাফী’র সাথে সংবাদ সংগ্রহ কালে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কোন কথা বলা সম্ভব হয়নি।
লাইভ করা ফেইসবুক আইডি’র মেসেঞ্জারে বার বার কল ও মেসেজ করে কোন রেসপন্স পাওয়া যায়নি।