#সুষম শিক্ষা হলো কী?
সুষম শিক্ষা হলো :-
১.দৈহিক ও
২.আত্মিক শিক্ষার সমন্বিত রূপ।
জাতিকে সুষম শিক্ষায় শিক্ষিত করতে, একটি ভারসাম্যপূর্ণ মানুষ জাতি গড়ে তুলতে সর্বপ্রথম শিক্ষকদের ‘সুষম জ্ঞানে’র অধিকারী হওয়া প্রয়োজন। আর সুষম শিক্ষা বিস্তারে শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা দরকার। ভারসাম্যপূর্ণ ও সুখী মানুষ গঠনে সুখী শিক্ষকের গুরুত্ব অপরিসীম।
#দৈহিক :-
দৈহিক বলতে শরীরের পঞ্চ রীপু,আবেগ,ভালোবাসা,মন,সুখ দুঃখ,কামনা,বাসনা,হাসি কান্না ইত্যাদি বোঝায়।
#আত্মিক শিক্ষা:-
আমাদের এমন শিক্ষার প্রয়োজন যা মন এবং আত্মাকে শক্তিমন্ত করবে যা আমাদের উত্তম নর-নারী করে গড়ে তুলবে। আত্মিক শিক্ষা পুঁথিগত বিদ্যা অপেক্ষা অধিক কিছু। জগতের জ্ঞান অর্জন অপরিহার্য, যার মধ্যে আমরা বেঁচে আছি; কিন্তু যদি আমরা চিরন্তনকে আমাদের গণনার বাইরে রাখি, তবে আমরা এমন ব্যর্থতা সৃষ্টি করব যা থেকে আমরা কখনো উদ্ধার পাব না।
একজন ছাত্র জ্ঞান লাভের জন্য তার সর্বশক্তি নিবেদন করতে পারে; কিন্তু তার যদি ঈশ্বর বিষয় জ্ঞান না থাকে, যদি সে ব্যবস্থাসমূহের আজ্ঞাবহ না হয় যা তার আপন সত্ত্বাকে শাসন করে, তাহলে সে নিজেকে ধ্বংস করে ফেলবে। মন্দ অভ্যাস দ্বারা, সে আত্ম-প্রশংসার শক্তি হারায়, সে আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। সে সেই বিষয়গুলোর সঠিক বিচার করতে পারে না, যা তার গভীর চিন্তার বিষয়। সে তার মন ও শরীরের নিরাময়ের ক্ষেত্রে অসাবধান এবং অসঙ্গত। তার সঠিক নীতিমালা অনুশীলনের অবহেলার মাধ্যমে, সে ইহজগত এবং পরজগতের ধ্বংস করছে।
যুবক-যুবতীরা যদি তাদের নিজেদের দুর্বলতা বুঝতে পারে, তবে তারা ঈশ্বরে তাদের শক্তি খুঁজে পাবে। যদি তারা তাঁর কাছে শিক্ষা লাভ করতে চায় তবে তারা তাঁর জ্ঞানে জ্ঞানবান হবে, এবং তাদের জীবন জগতের কাছে আশীর্বাদ স্বরূপ হবে। কিন্তু যদি তারা তাদের মন ও চিন্তারাশি জাগতিক এবং কাল্পনিক অধ্যয়নের কাছে সঁপে দেয় এবং এইরূপে ঈশ্বর হতে পৃথক হয়, তবে যা তাদের জীবনকে সমৃদ্ধ করে তার সবই তারা হারাবে।
“অবােধদিগকে ‘চতুরতা প্রদান করা যায়,
যুবক জ্ঞান ও পরিণামদর্শিতা প্রাপ্ত হয়।”
যুগ যুগ ব্যাপী শিক্ষা প্রধানত মুখস্থ বিদ্যার উপর গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। এই কর্মশক্তির ওপরে অত্যধিক চাপ পড়ার ফলে অন্যান্য কর্মশক্তিগুলাে সমভাবে বাড়ে না। ছাত্র-ছাত্রীরা অত্যধিক পরিশ্রমের মাধ্যমে তাদের সময় ব্যয় করেছে এবং জ্ঞান দ্বারা তাদের মন এবং চিন্তাধারাকে ঘনসন্নিবিষ্ট করেছে, যার অল্পই মাত্র কাজে প্রয়ােগ করা যায়। মন ঐ সকল দ্বারা ভারগ্রস্ত হত যা অঙ্গীভূত করা যেত না ফলে হজম ক্রিয়া দুর্বল হয়ে পড়ত, তা সক্রিয় শক্তিসম্পন্ন, আত্মনির্ভরশীল হতে অসমর্থ হত, এবং অন্যের বিচার ও কল্পমূর্তির ওপর নির্ভরশীল হতে হত।
এই পদ্ধতির মন্দতা লক্ষ করে কেউ কেউ অন্য পথ অবলম্বন করেছে। তাদের দৃষ্টি ভঙ্গিতে, মানুষের কেবল তাদের মধ্যে যা তারই উন্নতি হওয়া আবশ্যক। এমন শিক্ষা ছাত্রকে আমিত্বের দিকে পরিচালিত করে, এভাবে সে তাকে প্রকৃত জ্ঞান এবং শক্তি থেকে।
” তাঁহার তোমার চরণে বসিল, এই রূপে তাহারা তোমার বাক্য হইতে শিক্ষা লাভ করিবে। ”
শিক্ষক-শিক্ষিকা অবিরত সরলতা এবং কার্যকারীতার প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখবেন। তিনি বেশির ভাগ সময়ে দৃষ্টান্তের মাধ্যমে শিক্ষা দেবেন। এবং বয়স্ক ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে আচরণে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করবেন। এবং প্রতিটি বিষয়ে সহজ, সরল ও পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দেবেন। অনেক ছাত্র-ছাত্রী বয়স বড় হলেও তারা জ্ঞানে শিশু রয়ে গেছে।
শিক্ষক বাস্তব বিষয় নিয়ে কাজ করেন, এবং তিনি ঐ সকল বিষয়। সর্বশক্তি এবং উৎসাহ সহকারে কথা বলবেন যা তাদের বাস্তবতা এবং গুরুত্বপূর্ণতার বিষয়ে অনুপ্রেরণা দান করতে পারে।
প্রত্যেক শিক্ষক লক্ষ রাখবেন যেন তার কাজ একটি নির্দিষ্ট ফলাফলের অভিমুখি হয়। একটা বিষয় শিক্ষা দেবার প্রয়াসে তার মনে একটি স্বতন্ত্র পরিকল্পনা থাকবে, এবং তাকে জানতে হবে তিনি কি সম্পাদন করতে চান। যে পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী বিষয়বস্তু সম্পর্কিত নীতি, এর মধ্যে নিহীত সত্য এবং সে কি শিক্ষালাভ করছে, তা সে বুঝতে ও বলতে পারবে সে পর্যন্ত শিক্ষক/শিক্ষিকা তার উপস্থাপনায় সন্তুষ্ট হবেন না ।
শিক্ষার মহৎ উদ্দেশ্যর প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকবে, যুবক-যুবতিদের তাদের সামর্থ্য অনুসারে এগিয়ে যাবার জন্য উৎসাহ দিতে হবে কিন্তু উচ্চ শিক্ষা নেয়ার আগে তাদেরকে প্রাথমিক শিক্ষাগুলাের ওপরে পারদর্শিতা লাভ করতে হবে যা প্রায়ই তুচ্ছ জ্ঞান করা হয়ে থাকে। এমন কি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এবং মহা বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে শিক্ষালাভের ক্ষেত্রে সাধারণ বিষয়ে জ্ঞানের অভাব পরিলক্ষিত হয়। অনেক ছাত্র-ছাত্রী উচ্চ গণিত শিক্ষা লাভ করতে গিয়ে অনেক সময় ব্যয় করে, অথচ দেখা যায়, তারা সাধারণ হিসাবটি বােঝে না। অনেকে বক্তৃতাকৌশল বিষয়ে অধ্যয়ন করে যেন তারা সুবক্তা হতে পারে, কিন্তু দেখা যায় তারা পঠনেই অত্যন্ত দুর্বল। অনেকে বক্তৃতা বিষয়ক অধ্যয়ন শেষ করছে, অথচ একটি সাধারণ চিঠি লিখতে গিয়ে বানান ভুল করে
শিক্ষার অপরিহার্য বিষয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ জ্ঞান কেবল একটি উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি হবার শর্তই হবে না, কিন্তু অবিরল এবং অগ্রগতির জন্য বিরামহীন পরীক্ষাস্বরূপ হবে।
আর শিক্ষার প্রতিটি শাখায় কয়েকটি বিষয়ের উপর জ্ঞান অর্জন করতে হবে যা প্রায়ােগিক বিদ্যা অপেক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ। ভাষার দৃষ্টান্তই ধরা যাক। বিদেশী ভাষার উপরে যতই দক্ষতা অর্জন করা হােক না কেন, মাতৃভাষায় সহজ এবং নির্ভুল ভাবে লেখার ও বলার জ্ঞান অর্জন সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ব্যাকরণের উপরে জ্ঞান অর্জন অপেক্ষা শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে পারা। এই বিষয় অধ্যয়নের উপরেই জীবনের মঙ্গল ও অমঙ্গল বিশেষভাবে নির্ভরশীল।
আমাদের ব্যবহৃত ভাষার প্রধান অপরিহার্য বিষয়ের মধ্যে থাকবে বিশুদ্ধতা, দয়া এবং সত্য “এক অভ্যন্তরীণ মাধুর্যের বাহ্যিক প্রকাশ।” ঈশ্বর বলেন, “অবশেষে, হে ভ্রাতৃগণ, যাহা যাহা সত্য, যাহা যাহা আদরণীয়, যাহা যাহা ন্যায্য, যাহা যাহা বিশুদ্ধ, যাহা যাহা প্রীতিজনক, যাহা যাহা সুখ্যাতিযুক্ত, যে কোন সদ্গুণ ও যে কোন কীর্তি হউক, সেই সকল আলােচনা কর।” ফিলিপীয় ৪:৮। আর চিন্তারাশি যদি এরূপই হয়, তবে প্রকাশভঙ্গি ড্রপ হবে ।
এভাবে ভাষা শিক্ষার সর্বোত্তম বিদ্যালয় হবে ঘর; কিন্তু যেহেতু ঘরের কাজ প্রায়ই অবহেলার চোখে দেখা হয়ে থাকে, তখন সঠিক বাচন ভঙ্গির শিক্ষাদানের দায়িত্ব শিক্ষকের উপরেই ন্যাস্ত হয়ে থাকে।
“শিক্ষিত মা এক সুরভিত ফুল প্রতিটি ঘর হবে,
এক একটি স্কুল। ”
শিক্ষক, সমাজ, প্রতিবেশী, এবং ঘরের অভিশাপ স্বরূপ মন্দ অভ্যাসের প্রতি নিরুদ্যম আনয়ন করার জন্য অসাক্ষাতে নিন্দা, কানাঘুষা, সমালােচনা, অনৌদার্যের উক্তি ইত্যাদিসহ অনেক কিছু করতে পারেন। যে কোন ত্যাগ স্বীকার এবং যে কোন মূল্যে এর প্রতিরােধ করতে হবে।
ছাত্রছাত্রীদের মনে এই ছাপ অঙ্কিত করুন যে, এই অভ্যাস কৃষ্টি এবং বিশুদ্ধতা এবং চিত্তের প্রকৃত উত্তমতার অভাব প্রকাশ করে; এটি ইহ জগতে একজন ব্যক্তিকে প্রকৃত সুশিক্ষিত সমাজ এবং স্বর্গের পবিত্রগণের সহভাগিতা লাভে অনপুযুক্ত করে।
এরূপ অধ্যয়ন জীবনের পূর্ণতা এবং উপলদ্ধি করার ক্ষমতা সম্পন্ন বিচার বিবেচনা দান করবে। এটা যুবক-যুবতিদের এর সম্পর্কগত ও নির্ভরশীলতার বিষয় উপলব্ধি করতে সাহায্য করবে, আমরা সমাজে ও
দেশের মহান ভ্রাতৃপ্রেমে কি চমৎকার বন্ধনেই না একসঙ্গে আবদ্ধ। আর একজন অন্যজনার প্রতি নিপীড়ন বা ক্ষতি হওয়ায় সবার কাছেই কষ্টের।
ব্যক্তিত্ব অধ্যয়নের সাথে সাথে ব্যবহারিক কাজ ঘনিষ্ট সম্পর্কযুক্ত। প্রত্যেক তরুণ-তরুণী এবং শিশুকে কেবল কাল্পনিক সমস্যাবলী সমাধানের বিষয়ই শিক্ষা দিলে চলবে না, কিন্তু তার নিজের আয়-ব্যয়ের সঠিক হিসাব রাখতে হবে। তাকে অর্থ-কড়ির যথােপযুক্ত ব্যবহার শিখতে হবে। সে বাবা-মা, অভিভাবক অথবা তার নিজের অর্জিত অর্থকড়ি হলেও ছেলে-মেয়েরা তাদের নিজেদের কাপড়-চোপড়, পাঠ্যবই এবং তাদের অন্যান্য আবশ্যকীয় জিনিসপত্র, নিজেদের কিনতে শিখতে হবে; এবং তার খরচের হিসাব রাখার মাধ্যমে তারা, অর্থকড়ির মূল্য যে ভাবে শিখবে, অন্য কোন উপায়েই তারা এটি শিখতে পারবে না। এই প্রশিক্ষণ তাদের অপব্যয়িতা এবং প্রকৃত অর্থনীতির মধ্যকার ব্যবধানটি উপলব্ধি করতে সাহায্য করবে। যথােপযুক্ত পরিচালনা দান করতে পারলে এটি পরােপকারি মনােভাবের অভ্যাসে উৎসাহ দান করবে। এটি যুবকযুবতিদের দান করতে শেখাবে, কেবল মুহূর্তের আবেগ অনুভূতি থেকে নয়, কিন্তু তারা নিয়মপদ্ধতি অনুসারে দান করবে।
এভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রের অধ্যয়ন, শ্রেষ্ঠ সমস্যা সমাধানে সহায়ক হবে, নর-নারীকে জীবনের দায়িত্বগুলাে সর্বোত্তমভাবে পালনে সাহায্য করবে।
#সুষম সাক্ষরতা ?
——————————
সুষম সাক্ষরতা হল ইংরেজি ভাষা পড়া এবং লেখা শেখানোর একটি তত্ত্ব যা ১৯৯০-এর দশকে উদ্ভূত হয়েছিল এবং এর বিভিন্ন ব্যাখ্যা রয়েছে। কারো কারো মতে, সুষম সাক্ষরতা সমগ্র ভাষা এবং ধ্বনিবিদ্যার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে এবং তথাকথিত “পঠন যুদ্ধ”-এর অবসান ঘটায়। অন্যরা বলেন যে, বাস্তবে সুষম সাক্ষরতা বলতে সাধারণত পড়ার ক্ষেত্রে সমগ্র ভাষাগত পদ্ধতিকে বোঝায়।
সুষম সাক্ষরতার কিছু সমর্থক বলেন যে এটি বোধগম্যতা, শব্দভাণ্ডার, সাবলীলতা, ধ্বনিগত সচেতনতা এবং ধ্বনিবিদ্যার গবেষণা-ভিত্তিক উপাদান ব্যবহার করে এবং পুরো গোষ্ঠী, ছোট গোষ্ঠী এবং পঠন, লেখা, কথা বলা এবং শোনার ক্ষেত্রে নির্দেশনার সমন্বয়ে নির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করে যার মধ্যে প্রতিটির সবচেয়ে শক্তিশালী গবেষণা-ভিত্তিক উপাদান রয়েছে। তারা আরও বলেন যে সুষম সাক্ষরতা পদ্ধতির উপাদানগুলির মধ্যে পঠন এবং লেখার কর্মশালার সময় প্রয়োগ করা বিভিন্ন কৌশল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
অন্যদিকে, সমালোচকরা বলছেন যে সমগ্র ভাষার মতোই সুষম সাক্ষরতা হল একটি অর্থ-ভিত্তিক পদ্ধতি যা বাস্তবায়িত হলে পদ্ধতিগত ধ্বনিবিদ্যা দ্বারা প্রদত্ত শব্দ-অক্ষরের সম্পর্কের স্পষ্ট শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত
থাকে না ।
এছাড়াও, এটি কেবলমাত্র সেইসব শিশুদের জন্য যুক্তিসঙ্গতভাবে কার্যকর যাদের কাছে পড়তে শেখা সহজ হয়, যা অর্ধেকেরও কম শিক্ষার্থীর জন্য।
#শিশুর সুষম বিকাশে প্রাথমিক শিক্ষার ভূমিকা :–
——————————————————————-
লপ্রাথমিক শিক্ষার মজবুত ভিতের উপর গড়ে উঠতে পারে পরবর্তী শিক্ষার ইমারত’- ব্যাখ্যা করো
শিশুর সুষম জীবনবিকাশে প্রাথমিক শিক্ষার ভূমিকা
শিশুর সুষম বিকাশে প্রাথমিক শিক্ষার ভূমিকা কী
অথবা, ‘প্রাথমিক শিক্ষার মজবুত ভিতের উপর গড়ে উঠতে পারে পরবর্তী শিক্ষার ইমারত’- ব্যাখ্যা করো
শিক্ষার্থীর বিভিন্ন বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা গঠনের মাধ্যমে সামাজিক মূল্যবোধ গঠন, নীতিবোধের বিকাশ ইত্যাদি সম্পর্কে ভিত তৈরি হয় নিয়ন্ত্রিত শিক্ষার দ্বিতীয় স্তর প্রাথমিক শিক্ষার স্তরে। এই শিক্ষার উপরই শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবন নির্ভর করে। এই কারণেই বলা হয় যে প্রাথমিক শিক্ষার মজবুত ভিতের উপর গড়ে উঠতে পারে পরবর্তী শিক্ষার ইমারত। এই বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে শিশুর সুষম বিকাশে প্রাথমিক শিক্ষার ভূমিকাটি আলোচনা করলে।
#শিশুর সুষম জীবনবিকাশে প্রাথমিক শিক্ষার ভূমিকা:-
(১). দৈহিক বিকাশ: দৈহিক বিকাশে প্রাথমিক শিক্ষা বিশেষভাবে সাহায্য করে। কারণ প্রাথমিক শিক্ষার পাঠক্রমে এমন বিষয় বা শরীরচর্চামূলক কাজ আছে, যা শিক্ষার্থীর দৈহিক বিকাশকে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
(২). মানসিক বিকাশ: প্রাথমিক শিক্ষা শিশুর মানসিক বিকাশে বিশেষভাবে সাহায্য করে, কারণ প্রাথমিক শিক্ষায় শিশুর চিন্তন ক্ষমতা, বিচার ক্ষমতা, যুক্তি ক্ষমতার বিকাশ ঘটে-এমন সব বিষয় অন্তর্ভুক্ত আছে। তাই মানসিক বিকাশে প্রাথমিক শিক্ষা অপরিহার্য।
(৩). সামাজিক বিকাশ: সামাজিক বিকাশে সাহায্য করায় প্রাথমিক শিক্ষার আর-একটি গুরুত্ব আছে। প্রাথমিক শিক্ষায় দলগতভাবে খেলার মাধ্যমে, একইসঙ্গে খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক বিকাশ ঘটে।
(৪). নৈতিক বিকাশ: শিক্ষার্থীর নৈতিক বিকাশে প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব সর্বাধিক। প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশু ভালোমন্দ, ন্যায়-অন্যায়, উচিত- অনুচিত প্রভৃতি সম্পর্কে সচেতন হয়। ফলে তার মধ্যে নৈতিক চরিত্রের বিকাশ সম্ভব হয়।
(৫).সু-অভ্যাস গঠন: প্রাথমিক শিক্ষা শিক্ষার্থীর সু-অভ্যাস গঠনে সাহায্য করে। সু-অভ্যাস গঠনের ফলে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ জীবনে বিশেষ সফলতা লাভ করে।
(৬). ব্যক্তিত্বের বিকাশসাধন: জন্মের পর কয়েক বছর পর থেকে ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটতে থাকে। ব্যক্তিত্ব হল জৈব মানসিক সংগঠন যা প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে পরিপূর্ণতা লাভ করে।
(৭). জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন: প্রাথমিক শিক্ষা বাল্যকালের শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করে। এই জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীরা জীবনে সফলতা লাভ করে।
(৮). বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি: প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের পাঠে বিভিন্ন দেশের আবিষ্কার, বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা প্রভৃতি স্থান পায়, ফলে শিক্ষার্থীর মধ্যে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি জাগ্রত হয়।
(৯). কর্ম অভিজ্ঞতা: প্রাথমিক শিক্ষায় কর্মকেন্দ্রিক শিক্ষার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফলে বিভিন্ন কাজ নিজের হাতে বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে করানো হয়। ফলে কর্ম অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পাবে।
A good Education can change anyone.
A good teacher can change everything.
শেষান্তে এ সিদ্ধান্তে উপলব্ধি বিশ্লেষণ মোতাবেক একজন শিশুর সুষম শিক্ষার,সুষম সাক্ষরতা ও শিশুর সুষম বিকাশে প্রাথমিক শিক্ষা অগ্রগতিতে ভূমিকা অনস্বীকার্য এবং সুশিক্ষার অর্থ হচ্ছে শিক্ষার এমন এক অবস্থা, যা শিক্ষার্থীদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে এবং যথাসময়ে স্বশিক্ষিত হিসেবে গড়ে তোলে। সুশিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে, হয়ে ওঠে খাঁটি দেশপ্রেমিক।
#লেখক ও কলামিস্ট
জনাব জাহাঙ্গীর আলম ছিদ্দিকী
প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত)
খুরুশকুল জলবায়ু উদ্বাস্তু পুনর্বাসন সপ্রাবি,
সদর,,কক্সবাজার।