স্টাফ রিপোর্টার:
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই ইটাখোলা টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট অ্যান্ড বি.এম কলেজ প্রাঙ্গণের ৩টি গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ওই কলেজের অধ্যক্ষ জি.এম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে। তবে ওই অধ্যক্ষ বলছেন, তিনি নিজেই গাছগুলো লাগিয়েছিলেন। কলেজের উন্নয়ন কাজের জন্য সেগুলো কেটেছেন এজন্য কাউকে বলার প্রয়োজন মনে করেননি। গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ওই কলেজ অধ্যক্ষের নির্দেশে কোনো রকম সরকারি নীতিমালা না মেনে অবৈধভাবে কলেজ চত্বরের মূল্যবান ৩টি মেহেগুনি গাছ কেটে ফেলা হয়।
বুধবার দুপুরে সরেজমিনে ওই কলেজে গিয়ে দেখা গেছে কলেজের সকল কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। অফিসে তালা ঝুলানো এজন্য কারো সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। কলেজ প্রাঙ্গণের পশ্চিম পার্শে গিয়ে দেখা গেছে মাঠের শেষ প্রান্তে দুইটি এবং কলেজ গেইটে সংলগ্ন একটি মোট তিনটি মেহেগুনি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এছাড়াও লক্ষ্য করে দেখা দেখা গেছে এর পূর্বেও দুইটি গাছ কাটার চিন্হ রয়েছে কিন্তুু সেগুলো অনুমতি নিয়ে কাটা হয়েছিলো কিনা এ বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে ওই কলেজের অধ্যক্ষ জি.এস কিরবিয়ার
সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে গাছগুলো কলেজের স্বীকার করে বলেন, আমি নিজেই গাছগুলো লাগিয়েছিলাম। কলেজের উন্নয়ন কাজের জন্য সেগুলো কাটা হয়েছে। যেহেতু কলেজের কাজে কাটা হয়েছে এজন্য কাউকে বলিনি। সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন আপনি কি অনুমতি না নিয়ে এভাবে নিজের মতো করে প্রতিষ্ঠানের গাছগুলো কাটতে পারেন। এমন প্রশ্নে তিনি বলেন না অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন ছিল তবে আমি নিজের মনে করে কেটেছি। কল রেকর্ড প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষণ আছে। পরবর্তীতে আরো কিছু তথ্য জানতে অধ্যক্ষকে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করে বলেন, এ বিষয়ে আমার বড় ভাই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা তার সাথে কথা বলেন বলে মুঠোফোনটি তার বড় ভাইকে দেন। তখন ফোনের ওই পাশ থেকে সাংবাদিকদের বলা হয় গাছগুলো আমি লাগিয়েছি আমার জায়গায়। এজন্য কাটা হয়েছে। কলেজের কাজ চলমান সে কাজে ব্যবহার করা হবে। এটা নিয়ে তোমাদের কি সমস্যা। তোমরা কি পারবিন করো, কলেজের জায়গায় গাছ নয় ওটা ব্যক্তিগত জায়গায়। তোমরা কি করবা চাওচিন। পত্রিকায় লেখবিন লেখ দরকার হলে আমার নাম দিয়ে লেখ। কি পারিবিন লেখে করো। তোমরা সাংবাদিকরা পারলে কিছু টাকা তুলে আমাকে দাও কলেজের কাজ করবো বলে রাগান্বিত হয়ে ফোন কেটে দেন। এই ঘটনার কল রেকর্ডটিও প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষণ করা আছে।
এঘটনার পর উপজেলার এক সিনিয়র সাংবাদিককে দিয়ে প্রতিবেদকদের ফোন করানো হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অতিঃ দাঃ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমান উদ্দিন মন্ডল বলেন, এভাবে গাছ কাটার কোন নিয়ম নেই। তারা গাছ কাটতে চাইলে বন বিভাগের অনুমতিপত্র নিয়ে কাটতে হবে।
উপজেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, আমাদের কাছে ওই কলেজের গাছ কাটার বিষয়ে কোন আবেদন করা হয়নি। আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয়।
ওই কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) জিন্নাতুল আরা বলেন, প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে অবশ্যই অনুমতির প্রয়োজন। রেজুলেশন করে গাছ কাটতে হয়। তবে আমাকে গাছ কাটার বিষয়ে কেউ অবগত করেনি। তাছাড়া আমি বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমি দায়িত্বে থাকাকালীন এবিষয়ে জানিনা। তবে ইউএনও স্যার যেহেতু ছুটিতে স্যারের সাথে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা আমি বলতে পারবো না।