সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার:
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে চলতি বছরের এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষায় অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। পরিক্ষার্থীদের হাতের মার্ক (নাম্বার) না দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে এ অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে ইটাখোলা টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট অ্যান্ড বি.এম কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এর ফলে আগেই টাকা পরিশোধ করে পরিক্ষায় অংশ নিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে সরজমিনে গিয়ে, ক্ষেতলাল সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রে থেকে পরিক্ষা শেষে বেরিয়ে আসা ইটাখোলা টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট অ্যান্ড বি.এম কলেজের পরীক্ষার্থীদের
সাথে কথা বললে তারা অর্থ আদায়ের এই বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। পরিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে আরো জানিয়েছেন, ব্যবহারিক পরিক্ষায় টাকা না দিলে স্যারেরা হাতের মার্ক দিবেনা। এই ভয়ে তারা পরিক্ষা শুরুর আগেই টাকা পরিশোধ করে দিয়েছেন। চলতি পরিক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে ৮ টি বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষারা দিতে হচ্ছে। এ পরিক্ষায় অংশগ্রহনকারী ৪৩ জনের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৬০০ টাকা করে মোট ২৫ হাজার ৮০০ টাকা নিয়েছে শিক্ষক মতিউর এবং সাইফুল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ফরম ফিলাপের সময় তারা ব্যবহারিকের জন্য দিয়েছিল। এখন আবারো টাকা নেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এটা হয়ে আসছে বলে এটা একটি নিয়মে পরিণত হয়েছে। তারা এটা থেকে মুক্তি চায়।
এবিষয়ে অর্থ আদায়কারী শিক্ষক সাইফুলের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা কোন টাকা পয়সা নেইনি। এ বিষয়ে পিন্সিপালের সাথে কথা বলেন।
অর্থ আদায়কারী অপর শিক্ষক মতিউরের সাথে মুঠোফোনে বার বার ফোন করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। একারণে তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
অর্থ আদায়ের অভিযোগটি অস্বীকার করে ইটাখোলা টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট অ্যান্ড বি.এম কলেজের অধ্যক্ষ জিএম কিবরিয়া বলেন, আমরা কোন টাকা পয়সা নেই না৷ তোমরা যা পারো করো৷ তুমি কি স্কুলে পড়াশোনা করোনি, একটা স্কুল তৈরি করতে পরিশ্রম লাগে৷ বলে রাগান্বিত হয়ে ফোন কেটে দেন৷ যার কল রেকর্ডটি সংরক্ষণ রয়েছে৷ এবিষয়ে ওই কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার অ:দা: জিন্নাতুন আরা বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টি দুঃখ জনক। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
উপজেলা শিক্ষা অফিসারের দায়িত্বে থাকা
জেলা শিক্ষা অফিসার আমানুল্লাহ বলেন, অফিসিয়ালি এ ধরনের ফি নেওয়ার সুযোগ নেই। যদি কেউ এটা করে থাকে সেটা ঠিক করেনি।
গত রবিবার উপজেলার মাহমুদপুর বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষায় অর্থ আদায়ের ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে নিউজ প্রকাশ হয়। প্রকাশিত নিউজের একদিন পর ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ পরিক্ষার্থীদের ডেকে টাকা ফেরত দিয়েছে। এ ঘটনার পরেও ইটাখোলা টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট অ্যান্ড বি.এম কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের ব্যবহারিক পরীক্ষায় অর্থ আদায় করেছে।