স্টাফ রির্পোটার:
সৃষ্টিশীলতা সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত একটি অনবদ্য উপহার। পৃথিবীতে খুব কমই মানুষ আছে যারা এই সৃষ্টিশীলতা নামক উপহারকে সমাদর করতে পারে। যারা সমাদর করতে পারেন, তারাই ইতিহাসে স্থান করে নেন। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, যারা এই পৃথিবীতে অমর হয়ে আছেন তাদের চিন্তাচেতনা আর কর্ম সবার থেকে ব্যতিক্রম ছিল। বৈষয়িক জীবনকে কোনোরকম অতিবাহিত করাই তাদের লক্ষ্য ছিল না। বরং তারা প্রত্যেকেই একটি নির্দিষ্ট মিশন নিয়ে সময়কে কাজে লাগিয়েছেন। যার দরুন পৃথিবী তাদের ত্যাগ-তিতিক্ষা আর কর্মের মূল্যায়ন করেছে। পৃথিবীতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসংখ্য জ্ঞানী-গুণী আর মনীষী অবদান রেখে গেছেন। শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি-চিকিৎসা-জ্ঞান-বিজ্ঞান কিংবা সমাজসেবা-প্রতিটি ক্ষেত্রেই পৃথিবী এমন অনেক বিরল মানুষের দেখা পেয়েছে যারা কেবল নির্দিষ্ট মিশনকেই তাদের জীবন বানিয়ে নিয়েছিলেন। বলা চলে, এর বাইরে তাদের আর কোনো জীবনই ছিল না। সাহিত্য হচ্ছে তেমনই একটি শাখা। সাহিত্য যেমন মানুষকে নৈতিক আর মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করে, তেমনই এর মাধ্যমে মানুষ তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন-সাধনা আর প্রেম-বিরহের গল্প বলতে পারে। এছাড়া নিজস্ব চিন্তা-চেতনা আর মনকে সহজেই অপরের কাছে প্রকাশ করা যায় সাহিত্যের মাধ্যমে।
কবিতা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান শাখা। কবিতার ছন্দ, প্রকরণ, উপমা, অলংকার আর উৎপ্রেক্ষায় মানবমনের নিগূঢ়তম ইচ্ছে খুব সহজেই ছবির রূপ লাভ করতে পারে। অর্থাৎ, একজন কবি তাঁর মনের কথাগুলোকে ছবির মতো করে মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারেন। তবে এর জন্য থাকা চাই একটি সৌন্দর্যপ্রিয় মানসলোক। নিজস্ব ধ্যান- ধারণা, চিন্তা-চেতনা, প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, উপলব্ধি আর ভুবনবিলাসী দৃষ্টিভঙ্গি এই সৌন্দর্যপ্রিয় মানসলোকেই প্রতিভাত হবে। কবিতা কেবলই তার উপায়-উপকরণ। বাংলা কবিতার ছন্দ-প্রকরণ আর ভাবমুখী সৌন্দর্যের নিক্তিতে খলিল আহমদ তেমনই একজন কবি। তিনি বহমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী ব্যক্তিত্ব। তিনি একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক ও সমাজচিন্তক। দেশ ও জাতিকে নিয়ে তাঁর চিন্তার জগত বিস্তৃত। প্রবাসে অবস্থান হলেও তাঁর মন পড়ে থাকে স্বদেশের ঠিকানায়। তাই তো চিন্তা ও কর্মে তিনি যেন স্বদেশের এক মহাপ্রাণ। সমকালীন সমাজ, সংস্কৃতি, সাহিত্য-শিক্ষা এবং ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে তাঁর গভীর বোঝাপড়া রয়েছে। তাঁর সৃষ্টিতে এর প্রতিফলন ঘটে থাকে। একটি ধ্যানী ও সৌন্দর্যপ্রিয় মন নিয়েই তিনি যেন সবকিছুকে দেখে থাকেন। তাঁর কবিতা যেন মিষ্টি-মধুর হাসি আর উচ্ছ্বাসের এক খোলা মাঠ। তাঁর কবিতার মাঝেই দেখা মিলে প্রকৃতির অপরূপ রূপ! অবশ্য এই রূপকেই তিনি যেন মোহনীয় আবেশে উপলব্ধি করেন বারবার।
বাংলা কবিতার একনিষ্ঠ সেবক খলিল আহমদ ১৫ জুন ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার জহিরপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত তালুকদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মূলত খলিল আহমদ এমন একটি এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন, যেখানে শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির যেন একটি মিলনমেলা ইতোমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে। হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জ যেন অবারিত ধারায় তার পথচলাকে সুগম করেছে সৃষ্টিশীল মানুষ দিয়ে। হাসন রাজা থেকে শুরু করে দেওয়ান আহবাব চৌধুরী, মমিনুল মউজদীন, শাহ আবদুল করিম আর রাধারমণের স্মৃতিবিজড়তি সুনামগঞ্জ সাহিত্য- সংস্কৃতির আকাশকে করেছে আলোকিত। এমনই একটি এলাকায় জন্মগ্রহণ করে খলিল আহমদও যেন কবিতার আকাশে উড়ে বেড়াতে শুরু করলেন সাদা কবুতরের মতো। যে দিনশেষে ঘরেই ফিরে, যেমনই বারবার নিজের মাতৃভূমিতে ফিরেন কবি খলিল আহমদ। তাঁর পিতামহ মরহুম হাজী আব্দুল গফুর তালুকদার ছিলেন একজন ধার্মিক ব্যক্তিত্ব। তিনি বাংলা, উর্দু, ফারসি ও নাগরী ভাষায় দক্ষ ছিলেন। চিন্তা করা যায়, এমন একটি সময়ে যখন জ্ঞানী-গুণী মানুষের অভাব, তখন তিনি একই সাথে চারটি ভাষায় ব্যুৎপত্তি অর্জন করেছিলেন। বলা যায়, উত্তরাধিকার সূত্রেই খলিল আহমদ যেন সৃজনশীলতা নামক উপহারটি পেয়েছেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম ইন্তাজ মিয়া (আব্দুল হাশেম) এবং মাতার নাম মরহুমা মফিজুন নেছা। তিনি ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। বাস্তবজীবন-জীবিকার তাগিদে তিনি যুক্তরাজ্যে পড়ে থাকলেও তার মন অবস্থান করে নিজের মাতৃভূমিতে। প্রতিটি সময়ে ভাবেন নিজের দেশের মানুষের কথা, প্রকৃতির কথা। তাঁর সৌন্দর্যপ্রিয় মনের অভিব্যক্তিই যেন তা বারবার প্রকাশ করে দেয়। আর সেখান থেকেই তিনি তাঁর সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা করছেন নিবিষ্টমনে। এগুলোর মধ্যেই তিনি নিজের জীবনের আনন্দ খোঁজে নেন। কবিতায়, গল্পে কিংবা প্রবন্ধে তিনি দেশের প্রতি মমত্ববোধকে ফুটিয়ে তুলেন নিরুপম কারুকার্যতায়।
খলিল আহমদ-এর শিক্ষাজীবন শুরু হয় ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি জাকির মুহাম্মদ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। পরে স্থানীয় নয়াবন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন এবং ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে বোয়ালজুড় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। পরে তিনি এম.সি কলেজ থেকে ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অতঃপর সিলেট সরকারি কলেজ থেকে ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসএস (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ)-এ অধ্যয়নকালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ধাপে তিনি মেধার স্বাক্ষর রাখেন। খলিল আহমদ কর্মজীবনে বিলেতে গিয়ে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা বেছে নেন। বর্তমানে তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস
করছেন।
খলিল আহমদ-এর লেখালেখির সূচনা সেই স্কুলজীবন থেকে। তিনি বিভিন্ন সময়ে পত্র-পত্রিকা এবং সাময়িকীতে লেখালেখি করতেন। বর্তমানে তিনি অনলাইন গণমাধ্যমে বেশ সক্রিয়। তবে তাঁর প্রকাশিত লেখা গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়নি। 'বর্ণমালার বাংলাদেশ' তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ। দেশমাতৃকার প্রতি অপরিসীম প্রেমের নিদর্শন এই কাব্যগ্রন্থটি। বলা চলে, তাঁর সৌন্দর্যপ্রবণ মন যেন প্রতিটি বিষয়ে প্রাণবন্ত চিত্র উপস্থাপন করেছে কবিতার উপমায়।
খলিল আহমদ 'বর্ণমালার বাংলাদেশ' কাব্যগ্রন
আইন উপদেষ্টা: অ্যাডভোকেট ফাতিমা আক্তার (এ. এ. জি) সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, এবং আইনী সহকারী সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট।আইন উপদেষ্টা:
এ্যাড.মো. রুবেল আল মামুন। (পাবলিক প্রসিকিউটর।) বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-১৯, ঢাকা।উপদেষ্টা: আলহাজ্ব এম.এ বারেক, সম্পাদক: মোঃ সাইফুল ইসলাম, প্রকাশক: ফকির আমির হোসেন,বার্তা সম্পাদক: আব্দুর রহিম । বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৭ মতিঝিল বা/এ (খান ম্যানশন) লিফট ৮ তলা ঢাকা ১০০০। মোবাঃ ০১৬২৫৫৫৫০১২ ই-মেইল bikalbarta@gmail.com
Copyright @ চাঁদনী মিডিয়া গ্রুপ