মোঃ মামুন আলী ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি:
সাপের ‘মিথ্যে নাচে’ চলে সাপুড়ের সংসার সাপুড়ের বীণের তালে সাপের নাচের দৃশ্য বাংলা চলচ্চিত্র সূত্রে মানুষের কাছে খুব পরিচিত। শুধু চলচ্চিত্রই নয়, গ্রাম বাংলার মানুষের বিনোদনের অন্যতম এক অনুষঙ্গ ছিল সাপের খেলা।বাক্সবন্দি সাপ নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খেলা দেখান সাপুড়েরা।এসব বাক্স খুলতেই বেরিয়ে আসে ফণা ধরা বিষধর সাপ। এ সাপগুলো দিয়ে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে দেখানো হয় খেলা। এ সাপখেলা দেখিয়ে মানুষের মন জয় করতে পারলে মেলে টাকা
গ্রাম বাংলায় এখনো প্রাচীন ঐতিহ্য ধরে রাখতে সাপ খেলার আয়োজন হয়ে থাকে, যাঁকে ঝাঁপান খেলা বলে। বিষাক্ত গোখরা সাপ মঞ্চে ছেড়ে দিয়ে উঁচু করে ফণা তোলানোর জন্য সামনে বীণের তালে নাচানাচি করেন সাপুড়ে। আর মনের মধ্যে ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে বিষধর সাপ খেলা দেখতে দর্শনার্থীরাও হয়ে থাকেন বুধ।
বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে ঝাঁপান খেলা বা সাপ খেলা প্রতিযোগিতা হয়।আর এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আশপাশের জেলা থেকে মাটির পাত্র ও কাঠের বাক্সে করে সাপ নিয়ে আসেন সাপুড়ে দল। মঞ্চের ওপরে সাপ ছেড়ে দিতেই দর্শকরা আনন্দে আতঙ্কে হয়ে পড়েন উদ্বেলিত। একেকটি বিষধর গোখরা সাপ মঞ্চে নেমেই এদিক ওদিক চেয়ে ফণা তুলে দাঁড়ায়। ফণা আরো উঁচু করতে তার সামনে নানান ভঙ্গিতে নাচা-গান করেন সাপুড়েরা। কারণ যার সাপের ফণা যতো উঁচু হবে তিনিই হবেন বিজয়ী।
আশপাশে গ্রাম থেকে , সাপের খেলা দেখতে আসেন অনেক বয়স্ক ও শিশু বাচ্চা দর্শক। আর মানুষকে নির্মল আনন্দ ও বিনোদন দিতে পেরে খুশি সাপুড়েরা।
গ্রাম বাংলা প্রাচীন ঐতিহ্য সাপ খেলা নতুন প্রজন্ম বা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতা।সব বয়সী দর্শকরা তা উপভোগ করে নীরবতায়। ঝাপান খেলা বা সাপ খেলা একটি গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ, যা একসময় গ্রাম বাংলায় বিভিন্ন দিবস বা ঘরোয়া আয়োজনে দেখানো হতো। কিন্তু প্রযুক্তি আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন এসব খেলা হারিয়ে যাচ্ছে। তাই এই হারিয়ে যাওয়া এতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন এমন আয়োজন।