কামরুজ্জামান মিল্টন: সাম্প্রতিক পালাবদলের দমকা বাতাসে দেশের প্রায় সব লুটেরাদের আস্তানারূপী সরকারি প্রতিষ্ঠানে কম-বেশী ঝাকি লাগলেও,লাগেনি-বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন বিআরটিসিতে। তা যেন রয়েছে-সাবেক কায়দায় এখনো বহাল। প্রতিষ্ঠানটি খোদ হোতা অর্থাৎ চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলামের রাহুগ্রাসে রসাতলে গেছে বেশ আগেই । সদ্য সময়ের এ ব্যতিক্রমী হেরফেরেও বিন্দুমাত্র টলেননি তিনি। থামেনি- না তার লুটপাটময় সর্বগ্রাসী অভ্যাসগত তৎপরতা। আর এনিয়ে তৈরি কয়েক খণ্ড প্রতিবেদনের এ খণ্ডে থাকছে-তার একটা মেয়াদের নির্বিঘ্ন অনিয়ম-দুর্নীতি ও আধিপত্যে ঘেরা লুটপাটের ছোট্ট-খাট্ট কিছু নমুনা। তা হলো-সমালোচনার ঝড়ে পড়া অন্য সব প্রতিষ্ঠান হোতা বা প্রধানের ন্যায় বিআরটিসি’র চেয়ারম্যানও আধিপত্যের আধিখ্যেতায় বরাবরই ছিলেন বেপরোয়া। এযাবৎ নিজের আধিপত্য ঘেরা হীনস্বার্থ হাসিলে তিনি চালিয়ে আসছেন-একতরফা অনিয়ম, বে-নিয়ম ঘেরা লুটপাট। আর তা নির্বিঘ্ন করনে তৈরি নিজস্ব বলয়কে দিয়েছেন-একচ্ছত্র প্রাধান্য। আর বিরোধীদের রেখেছেন-দমিয়ে। তবে আটকে রাখতে পারেন নি- ওই অপকর্মের বদনামের দুর্গন্ধ। যদিও বরাবরই তা নিয়ে বঞ্চিত-লাঞ্ছিতদের সোরগোলও ছিল জোরালো, ছিল-নির্যাতিতের আৎচিৎকার। কিন্তু তার সবই যেন বিআরটিসি’র ওই আধিপত্যের শক্ত দেয়ালে আছড়ে পড়েই নিঃশেষ হয়ে গেছে। কোনক্রমে তার এক দুটি নুন্যতম দাবিতে হাত বাড়িয়েছে,তাদেরকে করা হয়েছে-সায়েস্তা। যাক ওই সব। দেখা যাক-চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের অবৈধ আধিখ্যেতার তরতাজা কিছু নমুনা। তা হলো-তার ভাগ্নি জামাই বলে চাউর থাকা এবং জালিয়াতি করে দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারী থেকে চাকরি বাগাতে গিয়ে বাট খেয়ে বিতাড়িত জনৈক রাশেদুল ইসলামকে ঘিরে। ওই রাসেদকেই চেয়ারম্যান তার ক্ষমতা বলে গেল, ১লা সেপ্টেম্বর সবার অগোচরে নারায়নগঞ্জ বাস ডিপোতে নিয়োগ দিয়ে ওই সমালোচনার ঝড় তুঙ্গে তুলেছেন। যে রাশেদুল গত ২০২৩ সালের ২২মে অফিস সহকারী কাম – কম্পিউটার অপারেটর পদের নিয়োগ পরীক্ষায় অন্য একজনকে বসিয়েছিল। আর নিজের ফাকা খাতা জমা দিয়েও সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে তার জালিয়াতি ধরে পড়ে। ফাশ হয়ে যায়-তিন লাখ টাকার চুক্তিতে অন্যজনকে পরিক্ষায় বসানোর গোমর। আর তা নিয়ে গোলমাল বাধলেই চেয়ারম্যান তার দায় এড়াতে মোঃ নাদিম ও নুর আলম নামের দুজন কর্মচারীকে শোকজ করেন। সেই সাথে রাশেদুল ইসলাম নামের ওই কর্মচারীকে বিআরটিসি’র অফিস থেকে করা হয়-বিতাড়িত । কিন্তু তার সবই ছিল-চেয়ারম্যানের লোক দেখানো আর দায় এড়িয়ে স্বজ্জনপ্রীতির বদনামের গন্ধ ঢাকার অপকৌশল মাত্র। কিন্তু সত্যি যে সত্যিই। সে যেন “কই মাছের,কানে হাঠা। সোজা কথায়- চেয়ারম্যানের সব প্রহসন টপকে তার ওই আধিপত্য ঘেরা অনিয়-দুর্নীতির ডাল-পালা স্বজ্জনপ্রীতির কু-খবর এখন সবার মুখে মুখে ছড়িয়েছে। এখানেই শেষ নয়, অপকর্মের জেরে ভাগ্নি জামাই রাশদুলকে তাড়ালেও সচল ছিল বিশেষ সুবিধা। তাকে দেয়া হয়ে আসছিল-প্রতিমাসে বিশ হাজার টাকা। কিন্তু তা চেয়ারম্যানের নিজের পকেট থেকে নয়, মতিঝিল বাস ডিপো, অর্থাৎ সরকারি টাকা থেকে। ম্যানেজার মোশারফ ওই চেয়ারম্যানের নির্দেশেই প্রতিমাসে রাশদুলের স্ত্রীর বিকাশ নাম্বারে সময়মত ওই টাকা পাঠিয়ে আসছিলেন। তা যেমন-কারো নজর এড়ায় নি, তেমনি-সদ্য সেই জালিয়াতি রাশেদুলকেই ফের বিআরটিসিতে পূর্ণবাসিত করে নতুন করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন। এ ব্যাপারে মতিঝিল বাস ডিপোর ম্যানেজার মোশারফের কাছে মোবাইলে জানার জন্য ফোন করলে ফোন ধরেন নি ।তবে নারায়নগঞ্জ বাস ডিপোর টিআই নাদিম জানায়, রাসেদুলের যোগদানের ব্যাপারে তার কাছে কোন তথ্য নাই । আর বিআরটিসির চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলামের কাছে জানার জন্য যোগাযোগ চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।