সিলেট বিভাগীয় ব্যুরো আব্দুল আলীম রানা >> সিলেটের গোয়াইনঘাটের ছৈলখাল এলাকায় অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালিয়েছে টাস্কফোর্স।
সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি’র আহবানে সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তৌহিদুল ইসলাম।
অভিযানে ৭০০টি কাঠের নৌকা, ৯ লক্ষ ৬৬ হাজার ঘনফুট বালু, ১০ হাজার ঘনফুট পাথর ও ২টি পাথর ভাঙ্গা মেশিন জব্দ করা হয়।
জব্দকৃত নৌকা, পাথর, বালু এবং পাথর ভাঙ্গা মেশিন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক স্থানীয় জনপ্রতিনিধির জিম্মায় রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মালিকের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক থানায় মামলা দায়েরের বিষয়টি চলমান রয়েছে।
সংবাদ প্রকাশের পর সিলেটের দুই বালু মহালে আরো বেপরোয়া চাঁদাবাজি, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা স্থানীদের!
গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং তারিখে সিলেটের গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার দুই বালু মহালে বেপরোয়া চাঁদাবাজি, ইজারাদার পলাতক, মাসে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে রাসেলগংরা প্রশাসন নীরব শিরোনামে বিভিন্ন অনলাইন ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তাই অবৈধ চাঁদাবাজরা আরো বেপরোয়া হয়ে শত শত ভলগেইট ও নৌকা থেকে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসন ও সাংবাদিকদের বড় অংকের টাকা বখরা দিয়ে ম্যানেজ করেই চলছে অপকর্ম।
এ ব্যপারে সিলেটের নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন আমি নতুন আসছি আপনি এডিসি রেভিনিউএর সাথে যোগাযোগ করেন।
পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব এ এস এম কাশেম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন বালু মহালের বিষয়টি ফয়েজ সাহেব ভালো বলতে পারবেন। গত ২৯/৭/২০২৪ ইং তারিখে হারুন রশীদের একটি রিটপিটিশনের রায় সম্পর্কে জানতে চাইলো তিনি বলেন এ বিষয়টিও জানিনা।
এরপর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিসি অফিসের এক কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন আমরা গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস থেকে একটি চিটি পেয়েছি সেটা প্রসেসিংয়ে আছে। হারুন রশীদ কর্তৃক মহামান্য হাইকোর্টের রায় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা এখনো কোন আদেশ পাইনি। তবে একজন ব্যক্তি আদেশের কপি নিয়া আসছিলেন তাকে হার্ডকপি দিতে বলেছিলাম তিনি আর আসেননি। ইজারাদার না থাকলে কালেকশন করা যায় কিনা জানতে চাইলে বলেন তাহার মনোনীত ব্যক্তি কালেকশন করতে পারবে। তবে মনোনীত ব্যক্তি না থাকলে পারবেনা সেটা অবৈধ।
এব্যপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশ সেনাবাহিনী ও আমরা এক সাথে কাজ করছি। আমরা অজ্ঞাতনামা চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
উল্লেখ্য এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর “সিলেটের দুই বালু মহালে বেপরোয়া চাঁদাবাজি, ইজারাদার পলাতক, মাসে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে রাসেলগংরা প্রশাসন নীরব” শিরোনামে অনলাইন সময় টিভি বাংলা ও জাতীয় দৈনিক বিকাল বার্তায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেই সংবাদটি হুবুহু নিচে দেওয়া হলো।
সিটের দুই উপজেলার দুটি বালু মহালে বেপরোয়া চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাঁদাবাজি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে নানা রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে? স্থানীয়রা বলছেন সরকার পরিবর্তন হলেও কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে অবৈধ চাঁদাবাজি। ভাগবাটোয়ারায় তাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন কিছু সাংবাদিকও। ফলে অবৈধ চাঁদাবাজির সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছেনা।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায় সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার লেঙ্গুরা বালু মহাল ০৫.৪৬.৯১০০.০০৮.৫২.০০৫.২১.৬৭৪ নং স্বারকে এবং জৈন্তাপুর উপজেলার সারি নদী (১) বালু মহাল
০৫.৪৬.৯১০০.০০৮.৫২.০৪৮.২০.৬৭৩ নং স্বারকে ১৪৩১ বাংলা সনের জন্য লিজ দেওয়া হয় এস এল এন্টারপ্রাইজ নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে। সেই প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইন গ্রামের নলিনী কান্ত দাশ এর পুত্র যুবলীগ নেতা সুভাস দাশ। গত ৫ আগস্ট ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামীলীগ সরকার পরিবর্তনের পর সুভাস দাশ পালিয়ে যায়। ইজারাদার পলাতক থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে লেঙ্গুরা এলাকার বাসিন্দা গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগ সদস্য গোলাম কিবরিয়া রাসেল নামের এক ব্যক্তি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তাহার চাচাত ভাই রব্বানী ও হাবিবগংদের সাথে নিয়ে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে লেঙ্গুরাও সারি নদী ১ বালুমহাল থেকে ছোট নৌকা-৭/৮ হাজার এবং বড় নৌকা ৩০/৪০ হাজার টাকা করে ৩ শতাধিক নৌকা থেকে দৈনিক ১০/১২ লক্ষ মাসে ৩ কোটি টাকর বেশী অবৈধভাবে চাদাঁ হাতিয়ে নিচ্ছে গোলাম কিবরিয়া রাসেলগংরা অথচ প্রশাসন চাঁদাবাজি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
এ ব্যপারে জানতে সহকারী কমিশনার ভূমি গোয়াইনঘাট এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন লেঙ্গুরা বালু মহাল লিজ হয়েছে তবে প্রতিষ্ঠানের নাম মনে নেই। চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন সেরকম কোন তথ্য নেই তার কাছে।
এ ব্যপারে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) গোয়াইনঘাট এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন নকল রশীদ দিয়ে একটি চক্র লেঙ্গুরা বালু মহালে চাঁদাবাজি করছে বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি, এবং ইজারাদার পলাতক রয়েছেন দুটি বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। বলগেইট আটকে একটি মামলা এবং চাঁদাবাজি নিয়ে আরেকটি মামলা করেছি গোয়াইনঘাট থানায়।
এ ব্যপারে জানতে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ হারুন রশীদ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে লেঙ্গুরা বালু মহালে চাঁদাবাজির বিষয়সহ দুটি মামলার কথা নিশ্চিত করে বলেন আমরা শীগ্রই চাঁদাবাজদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
এ ব্যপারে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জৈন্তাপুর এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন কেউ চাঁদাবাজির অভিযোগ করেনি, আর বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে কেউ অভিযোগ করলে আমি ব্যবস্থা নিবো। অনেকে আবার সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে অভিযোগ করেন, আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো অভিযোগ হয়েছে কিনা।
এ ব্যপারে জানতে জৈন্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে সারি নদী ১ এর বালু মহাল নিয়ে আমার কাছে কোন অভিযোগ নেই। তবে ইউএনও মহোদয় থেকে যদি পুলিশের প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই পুলিশ পাশে থাকবে।