ঝালকাঠি থেকে খলিলুর রহমান।
আওয়ামী সরকারের গত ১৫ বছরের শাসনামলে ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রেরর লাইসেন্স গ্রহনকারী সকলকে আগামী ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গোলাবারুদসহ নিজ নিজ আগ্নেয়াস্ত্র থানায় জমা দিতে হবে বলে সম্প্রতী একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়।
সরকারের এমন ঘোষনার পরপরই আগ্নেআস্ত্র থানায় জমাদেয়া শুরু করেছে বৈধ অস্ত্রবহনকারীরা। এতে অনেকে নিজেদের জানমালের নিরাপত্বার ঘাটতির কথাও প্রকাশ করেন। এমনই নিরাপত্তাহীনতার কথা জানালেন আমিনুল ইসলাম লিটন নামের ঝালকাঠির একজন সাবেক ইউপি সদস্য ও প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার।
নিজ এবং পরিবারের নিরাপত্তার জন্য থানায় জমাদেয়া লাইসেন্সকৃত বৈধ অস্ত্র দ্রুত সময়ের মধ্যে ফেরত পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লিটন।
পহেলা সেপ্টেম্বর রবিবার বিকেল ৪ টায় ঝালকাঠি পুর্ব চাঁদকাঠি এলাকায় লিটনের বাস ভবন "অর্ক মহল"এ অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিটনের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত গনমাধ্যম কর্মীদের সামনে আমিনুল ইসলাম লিটন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। লিখিত বক্তব্যে লিটন বলেন, 'আমি এবং আমার পরিবারের নিরাপত্বার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। এলাকায় সমাজসেবাসহ স্থানীয় সালিশ বিচারের কাজে আমাকে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় অংশ গ্রহন করতে হয়।
আমি ২০০৬ সালে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দিতা করে পরাজিত হই। কিন্তু ২০১১ আবারো নির্বাচনে অংশ গ্রহন করি। নির্বাচন চলাকালে পহেলা ফেব্রুয়ারী আমার প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী সৈয়দ জাহাঙ্গীর হোসেন এবং সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি তার সন্ত্রাসী পুত্রসহ দলবল নিয়ে আমার।উপর হামলা করে আমাকে এলোপাথারী কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছিলো।
স্থানীয় লোকজন আমাকে মুমুর্ষবস্থায় ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়। পরে বরিশাল এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আমি চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হই। ঐ নির্বাচনে আমি চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করি।
চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে আত্মীয় স্বজনের পরামর্শে নিজের নিরাপত্বার জন্য ২০১১ সালের ৩১ ডিসেম্বর লাইসেন্সসহ একটি "১২ বোর" শর্টগান ক্রয় করি। শর্টগানটি সচরাচর বহন কষ্টসাধ্য হওয়ায় ৬ বছর পর ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর আরেকটি লাইসেন্স করে একটি পিস্তলের ক্রয় করি।
এর আগে ২০১৬ সালে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সরদার মোহাম্মদ শাহআলমের ভাগিনা ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মাওলা মাসুম শেরওয়ানীসহ আওয়ামীলীগের নেতারা আমার বিরুদ্ধে ৫টি মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করেছে।
এসকল ঘটনার কারনে নিরাপত্তার অভাব বোধকরে আমি আমার পৈত্রিক বাড়ি রমজানকাঠি গ্রামে না থেকে বেশিরভাগ সময় ঝালকাঠি শহরে গিয়ে বসবাস করি। তবে চেয়ারম্যান ছিলাম বিধায় সালিশ বিচারের কাজ করার কারণে এলাকায় আমার অনেক শত্রু মিত্র রয়েছে।
যেহেতু গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নটি ৩টি থানার বর্ডার এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় অপরাধমূলক জোন হিসেবে গন্য হয় এবং একসময় সর্বহারা অধ্যষিত ছিলো। সেকারণে আমার ও পরিবারের সুরক্ষার কারণে সময় অসময়ে গভীর রাতে নিজ এলাকায় যাতায়াত করতে হয় বিধায় বৈধ অস্ত্র সবসময় সাথে রাখতে হয়। রিভারবল সবসময় আমার নিরাপত্তার জন্য সাথে রাকি এবং শর্টগানটি বাসার নিরাপত্তার জন্য বাসায় থাকে।
আমি নিজ জীবন রক্ষার্থে ওই অস্ত্র দুইটি ক্রয় করেছিলাম। এই অস্ত্র কোন অবৈধকাজে ব্যবহার করি নাই বা এ ধরনের কোন অভিযোগও আমার বিরুদ্ধে নাই।
২০২১ সালের ২১ জুন ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও মাসুম শেরওয়ানী সহ আওয়ামীলীগের নেতারা আমাকে ভোট কেন্দ্রে যেতে দেয় নাই। দুঃখের বিষয় আমার নিজের ভোটটিও আমি দিতে পারি নাই। আওয়ামী সরকারের আমলে হামলা মামলা ও নির্যতনের শিকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেছিলাম। তাই জীবন রক্ষার্থে অস্ত্র ২টি ক্রয় করেছিলাম।
বর্তমানে সরকারের নির্দেশে আমি ঝালকাঠি সদর থানায় জমা দেয়ার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এই অস্ত্র জমা দেয়ার পর পরিবারসহ আমি আমার জীবনের নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করবো। তাই অল্প সময়ের মধ্যে যাতে আমি অস্ত্র ২টি ফেরত পেতে পারি সেজন্য সরকারের প্রতি সদয় অনুরোধ করছি। একই সাথে আমার অস্ত্র জমা দেয়ার পরবর্তী সময়টাতে যাতে নিরাপদে জীবন যাপন করতে পারি সে ব্যাপারে সরকার যেন ব্যবস্থা নেয় তার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
উল্লেখ্য, আওয়ামীলীগ সরকারের গত ১৫ বছর শাসনামলে যে সমস্ত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স জনগণকে প্রদান করা হয়েছে সেই সকল লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক-৪ শাখা হতে গত ২৫ আগষ্ট এ সংক্রান্ত একটি গ্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সিনিয়র সহকারী সচিব মো. জহিরুল হক স্বাক্ষরিত ৪৪. ০০. ০০০০. ০৯৭. ১১. ০২৫. ২০২১-৩০০ নম্বর স্মারকে জারিকৃত ঐ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত লাইসেন্স গ্রহনকারী সকলকে আগামী ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গোলাবারুদসহ নিজ নিজ আগ্নেয়াস্ত্র থানায় জমা দিতে হবে। In
আইন উপদেষ্টা: অ্যাডভোকেট ফাতিমা আক্তার (এ. এ. জি) সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, এবং আইনী সহকারী সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট।আইন উপদেষ্টা:
এ্যাড.মো. রুবেল আল মামুন। (পাবলিক প্রসিকিউটর।) বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-১৯, ঢাকা।উপদেষ্টা: আলহাজ্ব এম.এ বারেক, সম্পাদক: মোঃ সাইফুল ইসলাম, প্রকাশক: ফকির আমির হোসেন,বার্তা সম্পাদক: আব্দুর রহিম । বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৭ মতিঝিল বা/এ (খান ম্যানশন) লিফট ৮ তলা ঢাকা ১০০০। মোবাঃ ০১৬২৫৫৫৫০১২ ই-মেইল bikalbarta@gmail.com
Copyright @ চাঁদনী মিডিয়া গ্রুপ