1. jhramjan88385@gmail.com : bbarta :
  2. muhammadalomgir350@gmail.com : Muhammad Aaomgir : Muhammad Aaomgir
  3. abrahim111099@gmail.com : Bikal Barta :
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব জনতা: নীলফামারীতে দুদকের গণশুনানিতে চেয়ারম্যানের সরাসরি অংশগ্রহণ - Bikal barta
২৭শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| গ্রীষ্মকাল| রবিবার| রাত ৮:৪৮|
সংবাদ শিরোনামঃ
এম সাইফুর রহমান কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হলেন জনাব মিফতাহ্ সিদ্দিকী বীরগঞ্জে ১০শ্রেণীর শিক্ষার্থী গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা ডাক্তারের অবহেলায় রোগীর অকাল মৃত্যু! জনসম্মুখে চিকিৎসককে ব্যাপক মারধর ভিয়েনা রাজ্য নির্বাচনে পুনরায় মনোনয়ন পেলেন ভোলার কৃতি সন্তান- মাহমুদুর রহমান নয়ন ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ।  ভাঙ্গায় পুর্ব শত্রুতার জের ধরে ২৫টি বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর-লুটপাট সহ অগ্নিসংযোগ সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সাজাপ্রাপ্ত এক আসামী সহ ৩ জন গ্রেপ্তার রংপুরের কাউনিয়া ফুটবল একাডেমি, বাফুফের নিবন্ধন পেল।  ঈশ্বরদী চালের মোকামে ভরপুর জোগান, তবু দাম বেশি নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা,,  গোবিন্দগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী রাজা বিরাটের হবিষ্যি ভক্ষণ মেলা শুরু

দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব জনতা: নীলফামারীতে দুদকের গণশুনানিতে চেয়ারম্যানের সরাসরি অংশগ্রহণ

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিত সময় রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫,
  • 42 জন দেখেছেন

নীলফামারী প্রতিনিধি:

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবার সরাসরি মাঠে। আজ নীলফামারী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হলো দুদকের গণশুনানি, যেখানে শতাধিক সাধারণ মানুষ তাঁদের অভিজ্ঞতা ও অভিযোগ তুলে ধরেন কমিশনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সামনে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, কমিশনার (তদন্ত) মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী, নীলফামারী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান, অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এছাড়াও পুলিশ সুপার, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া গণশুনানিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নারী-পুরুষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কৃষক, চাকরিপ্রার্থী, প্রবীণ নাগরিকসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।

অভিযোগের কেন্দ্রে ছিল—বয়স্ক ভাতা পেতে হয় ঘুষ, জমি নামজারিতে দালালদের দৌরাত্ম্য, শিক্ষা অফিসে বদলির জন্য ঘুষের সংস্কৃতি, সরকারি সাহায্য বণ্টনে স্বজনপ্রীতি, এমনকি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ।

একজন প্রবীণ নারী কেঁদে কেঁদে বলেন,
“বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য বারবার আবেদন করেছি। কিন্তু প্রতিবার বলা হয়, ‘লোক পাঠান’, ‘দেখা করে যান’। আমি গরিব মানুষ, কারো চা-পান করানোরও সামর্থ্য নেই। তাই এখনো ভাতা পাইনি।”

এক কৃষক বলেন, “ভূমি অফিসে নামজারির জন্য খরচের চেয়ে বেশি টাকা দিতে হয় দালালদের।’”

শিক্ষা খাতে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরেন একজন সহকারী শিক্ষক। তিনি বলেন, “বিদ্যালয়ে বদলির জন্য আমাকে ঘুষ দিতে হয়েছে। সবার জন্য নিয়ম সমান নয়, টাকা দিলে কাজ দ্রুত হয়।”

গণশুনানিতে সব অভিযোগ মনোযোগসহকারে শুনে দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন,
“দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার এককভাবে নয়, জনগণকেই সঙ্গে নিয়ে এগোতে চায়। আপনারা সাহস করে কথা বলছেন, এটাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ।”

তিনি আরও বলেন, “আজ আপনারা যে অভিযোগ করেছেন, তা কোনোভাবেই ফেলে দেওয়া হবে না। প্রতিটি বিষয়ে আমাদের অনুসন্ধান দল কাজ শুরু করবে। কেউ রেহাই পাবে না।”

চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা শুধু কাগজে কলমে প্রতিবেদন চাই না—চাই প্রতিক্রিয়া, চাই প্রতিকার। এজন্যই আজ আমি নিজে আপনাদের সামনে এসেছি।”
তিনি সবাইকে অনুরোধ করেন, দুদকের হটলাইন নম্বর ১০৬-এ যে কেউ কল করে অভিযোগ জানাতে পারে।

গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন জেলার শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, শিক্ষার্থীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি বলেন, “এই ধরনের জনসংলাপ খুবই জরুরি। দুর্নীতি তখনই কমে, যখন জনগণ সরাসরি মুখ খুলতে পারে।”

একজন কলেজ শিক্ষার্থী জানান, “আমরা অনেক সময় দুর্নীতির শিকার হই, কিন্তু কাকে বলব, বুঝি না। আজ মনে হচ্ছে, আমাদের কথা কেউ শুনছে। আমরা চাই এই উদ্যোগ যেন নিয়মিত হয়।”

একজন স্থানীয় সাংবাদিক ম. লিটন সরকার বলেন, “দুদকের এই গণশুনানির মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন কিছুটা হলেও জবাবদিহিতার মধ্যে আসবে।”

কমিশনার (তদন্ত) মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেন, “আপনারা যে সাহস করে কথা বলছেন, সেটাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় বার্তা। সমাজে এই সাহস ছড়িয়ে পড়তে হবে।”

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, “আমরা চাই না শুধু মোটা মাছ ধরতে, ছোট দুর্নীতির ক্ষেত্রগুলোতেও নজর দিতে চাই। তবে সবার সহযোগিতা ছাড়া তা সম্ভব নয়।”

তাঁরা জানান, আগামী এক মাসের মধ্যে আজকের সব অভিযোগ পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গণশুনানির একটি বিশেষ দিক ছিল—চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তাদের মানবিক আচরণ। তাঁরা অনেকের অভিযোগপত্র হাতে নিয়ে পড়েছেন, তাদের পাশে বসে কথা বলেছেন।

অনুষ্ঠান শেষে এক প্রবীণ অভিযোগকারী বলেন, “আমি কখনো ভাবিনি, কোনো কমিশনের চেয়ারম্যান আমার সামনে বসে আমার কথা শুনবেন। মনে হচ্ছে আজ আমরা সত্যিকার অর্থে নাগরিক।”

দুদকের এই গণশুনানিকে অনেকেই দেখছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি সামাজিক আন্দোলনের সূচনা হিসেবে।

একজন জেলা আইনজীবী বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে মামলা করলেই শেষ নয়—মানুষকে সচেতন করতে হবে। এই গণশুনানি সেই কাজটাই করেছে।”

আরেকজন শিক্ষক বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র জনগণের অংশগ্রহণ। আজকের গণশুনানি সেই শক্তিকে জাগিয়ে তুলেছে।”

গণশুনানি শেষে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা একা লড়াই করব না, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাব। দুর্নীতি হোক শূন্য সহনশীলতায়। এটা আমাদের জাতীয় অঙ্গীকার।”

সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করছেন, আজ শুধু শুনানি নয়, ছিলো এক ধরনের প্রতিশ্রুতি—যেখানে প্রশাসন ও জনগণ একসঙ্গে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে।

এমন সাহসী উদ্যোগ দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ুক—এই প্রত্যাশা এখন জনতার।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরও সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2024 bikal barta
error: Content is protected !!