*নিজস্ব প্রতিনিধি:* গ্যাস সংযোগ না থাকা, পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাব, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, শিল্প এলাকার ভেতরের রাস্তার বেহাল দশাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত নেত্রকোণা বিসিক শিল্পনগরী। এই শিল্প নগরীতে চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও অধিকাংশ ইউনিটে উৎপাদনই শুরু হয়নি। যেসব প্রতিষ্ঠান উৎপাদন শুরু করেছে, সেগুলোর সিংহভাগই বিভিন্ন সংকটের কারণে বন্ধ থাকে বলে জানিয়েছেন কারখানা সংশ্লিষ্টরা। ২০০৭ সালে নেত্রকোণা সদরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিসিকের কার্যক্রম শুরু হলেও ১৭ বছরেও পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি নেত্রকোণা বিসিক শিল্পনগরী। মোট ১৫ একর জমিতে ১০৩টি প্লটের ৬৮টি বাণিজ্যিক ইউনিটের সবগুলোই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বহু বছর আগেই। বরাদ্দ পাওয়ার তিন বছরের মধ্যে উৎপাদনে যাওয়ার চুক্তি থাকলেও ৬৮টি ইউনিটের মধ্যে ৩৬টি ইউনিটে উৎপাদন শুরু হয়নি। বাকি ৩২টিতে বিসিক কর্তৃপক্ষ কাগজে কলমে উৎপাদন চালু থাকার দাবি করলেও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বিসিকে বর্তমানে সাত থেকে আটটি প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে। তবে বিসিক কর্তৃপক্ষ বলছে নিয়মিত উৎপাদনে রয়েছে ২০টির ওপরে প্রতিষ্ঠান। মূলত গ্যাস, বিদ্যুৎসহ জ্বালানি সংকটের কারণে উৎপাদনে টিকে থাকা মুশকিল হয়ে পড়ছে। এমতাবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে গ্যাস সরবরাহের দাবি জানান তারা। প্রিয়া ফুড প্রোডাক্টসের কর্মচারী সুমন সাহা বলেন, আমরা বারবার গ্যাস চাচ্ছি, কিন্তু পাচ্ছি না। আমাদের এখানে বেশ কিছু ফ্যাক্টরি আছে, যেগুলো এখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এগুলোকে বাঁচাতে হলে আমাদের গ্যাসের সংযোগ পাওয়াটা খুব জরুরি। তাহলে আমাদের প্রোডাকশন খরচ কমে আসবে। কাঠের লাকড়ি দিয়ে প্রোডাকশন করতে খরচ অনেক বেড়ে যায়। আমরা চাচ্ছি গ্যাস তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করা হোক, তাহলে লাকড়ি দিয়ে জ্বালানির ব্যবস্থা করতে গিয়ে যে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে সেটা আর হবে না। পাশাপাশি আমরা কম দামে বাজারে প্রোডাক্ট দিতে পারব। এতে করে ক্রেতারাও কম টাকায় জিনিসপত্র কিনতে পারবেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৈরি পোশাক কারখানার মালিক বলেন, নেত্রকোণা বিসিক শিল্প নগরীতে কোনো গ্যাস সংযোগ নেই। আমরা একমাত্র বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। সে ক্ষেত্রে আমাদের গ্যাসের সাপ্লাইটা যদি থাকতো তাহলে আমাদের উৎপাদনের খরচ কম হতো। যেমন আমাদের ওয়াশিং প্লান্ট চালাতে গেলে গ্যাসের প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে আমরা সিলিন্ডার গ্যাস দিয়ে কাজ চালিয়ে নিচ্ছি। এখানে যদি আমাদের সরাসরি গ্যাস সংযোগ থাকত তাহলে আমাদের উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটতো না। আমরা সঠিক সময়ে উৎপাদন এবং ডেলিভারি দিতে পারতাম। এখন যেহেতু গ্যাসের সংকট তাই আমাদের সঠিক সময়ে মাল ডেলিভারি দিতে হিমশিম খেতে হয়। পাশাপাশি রাস্তাঘাটের অবস্থা খুব খারাপ। বৃষ্টি হলে রাস্তা তলিয়ে যায়। এখানে কোনো ড্রেনের ব্যবস্থা নেই। এসব কারণে এখানকার পরিবেশ খুবই নোংরা থাকে। যে কারণে আমাদের যারা কাস্টমার ভিজিটে আসেন। অথবা যারা আমাদের কাজ দেন, তারা পরিবেশ দেখে কাজ দিতে চান না। পাশাপাশি সন্ধ্যার পর এখানে বাহিরের লোকজন এসে আড্ডা দেয়, কোনো নিরাপত্তা নেই। নেত্রকোণা বিসিক জেলা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপব্যবস্থাপক শিরিন ইসলাম জানান, এ শিল্প নগরীতে গ্যাস সরবরাহ করতে পারলে প্রায় ৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। এতে করে সব শিল্প মালিকরা উপকৃত হবেন। পাশাপাশি নেত্রকোণা সবাই উপকৃত হবেন। গ্যাসের জন্য বিসিক ইতোমধ্যেই ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি প্রাক্কলিত ব্যয় তৈরি করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যদি এই বাজেটটি পাওয়া যায় তাহলে অচিরেই নেত্রকোণা বিসিক শিল্পনগরীতে গ্যাস সরবরাহ করা যেতে পারে। গত ২৭ আগস্ট ভূমি বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে একটি সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, চুক্তি মোতাবেক সময়ে অবকাঠামো নির্মাণ করতে পারেনি বা উৎপাদনে যেতে পারেনি তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, আমাদের এ বিসিক শিল্পনগরীতে যে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে উঠেছিল, সেখানে গ্যাসের সংযোগ না থাকায় তাদের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এটা হচ্ছে একটা সরকারের পলিসির বিষয়। যেহেতু শিল্পনগরীটি চালু হয়েছে, আমরা সরাসরি সরকারকে জানাব। এখানে যদি গ্যাসের সংযোগ দেয়ার সুযোগ থাকে তাহলে, এখানে কর্মসংস্থান তিনগুণ বেড়ে যাবে এবং নেত্রকোনা জেলাবাসী উপকৃত হবে। কারণ নেত্রকোণা জেলাতে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান নেই, এটি একটি শ্রমনির্ভর জেলা। পাশাপাশি আমরা যদি এখানে শিল্পনগরীটা প্রতিষ্ঠিত করতে পারি এখানে ক্যাপাসিটি বিল্ডআপ করতে পারি তাহলে, নেত্রকোণাবাসী উপকৃত হবে। আপনারা জানেন এখানে ১০৩টি প্লট ৬৮ জন শিল্প মালিকদের মধ্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে অ্যাক্টিভ রয়েছে ৩২টি প্রতিষ্ঠান। অন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান আসছে না প্রতিকূল পরিবেশের কারণে। তিন বছরের মধ্যে এই শিল্প মালিকরা যদি না আসেন তাহলে আমরা তাদের নোটিশ করব। তারা যদি আসেন তাহলে ভালো। যদি না আসেন তাহলে আমরা নতুন করে শিল্প মালিকদের আহ্বান করব এখানে আসার জন্য।
আইন উপদেষ্টা: অ্যাডভোকেট ফাতিমা আক্তার (এ. এ. জি) সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, এবং আইনী সহকারী সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট।আইন উপদেষ্টা:
এ্যাড.মো. রুবেল আল মামুন। (পাবলিক প্রসিকিউটর।) বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-১৯, ঢাকা।উপদেষ্টা: আলহাজ্ব এম.এ বারেক, সম্পাদক: মোঃ সাইফুল ইসলাম, প্রকাশক: ফকির আমির হোসেন,বার্তা সম্পাদক: আব্দুর রহিম । বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৭ মতিঝিল বা/এ (খান ম্যানশন) লিফট ৮ তলা ঢাকা ১০০০। মোবাঃ ০১৬২৫৫৫৫০১২ ই-মেইল bikalbarta@gmail.com
Copyright @ চাঁদনী মিডিয়া গ্রুপ