নিজস্ব প্রতিবেদক:: ভারতের কাছ থেকে পদ্মা তিস্তাসহ অভিন্ন নদনদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে প্রয়োজীয় উদ্যেগ গ্রহণের দাবীতে সিলেটের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ সিলেট জেলা শাখার পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় ভারত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে পদ্মা তিস্তা নদীসহ বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত অভিন্ন ৫৪টি আন্তর্জাতিক নদীতে বাঁধ দিয়ে একতরফা পানি প্রত্যাহার করে বাংলাদেশকে মরুভূমিতে পরিণত করার এক মানবতাবিরোধী বৈষম্যমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশের প্রমত্তা পদ্মা, তিস্তাসহ অধিকাংশ নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে অনেক নদীর অপমৃত্যু ঘটতে চলেছে। দেশের বৃহত্তর জি কে ও তিস্তা সেচ প্রকল্প পানির অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে। এবার সেচ মৌসুমে নদীতে পানির অভাবে জিকে প্রকল্পাধীন এলাকায় কৃষকেরা প্রয়োজনীয় সেচ প্রদান করতে পারেননি। তিস্তা সেচ প্রকল্প বন্ধ। নদীতে পানি না থাকার কারণে শুকনো মৌসুমে খাল বিলও জলাশয় শুকিয়ে মরছে। অপরদিকে বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টিতে বন্যা ও নদী ভাঙ্গন স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে। প্রান-প্রকৃতি,জীব-বৈচিত্র, প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যস্থ হয়ে পরেছে। মরুকরণ প্রক্রিয়া, জলাবদ্ধতা, লবণাক্ততা, এবং ভূ-গর্ভস্থ পানির অভাবে বাংলাদেশের জনগণের জীবন-জীবিকা ও কৃষি মারাত্নক ভাবে হুমকির মধ্যে পড়েছে। বেড়েছে কৃষি উৎপাদন ব্যয়। আমাদের বনভূমিও হুমকির মূখে পতিত হয়েছে। একতা খুবই স্পষ্ট যে, একতরফা পানি প্রত্যাহার করে ভারত বাংলাদেশকে অস্তিত্বের সংকটে ফেলেছে। অপরদিকে আমাদের দেশের উপর প্রতিষ্টা করেছে রাজনৈতিক কর্তত্ব্ ও আধিপত্য। কাটা তারের বেড়া দিয়ে সীমান্ত ঘিরে দিয়েছে। সীমান্তে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে বাংলাদেশীদের হত্যা করা হচ্ছে। বিজিবি সদস্যরাও এই হত্যার শিকার হচ্ছে। এটা শুধু আমাদের আত্নমর্যাদার প্রশ্ন নয় বাংলাদেশের সাথে ভারতের বৈরিআচরণের বহিপ্রকাশও বটে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের কৃষক শ্রমিকসহ আপামর জনগণের অকৃত্রিম বন্ধু মজলুম জননেতা, মুক্তিযুদ্ধের সময় কালে প্রবাসী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ভারতের সুুদুর প্রাসারী পরিকল্পনা বুঝতে পেরে ১৯৭৬ সালের ১৬ই মে হাজার হাজার জনতাকে সংগঠিত করে ঐতিহাসিক পারাক্কা লং মার্চ করেছিলেন। ঐ মিছিল যে কত বাস্তব সম্মত৷ ও যুক্তি যুক্ত ছিলো তা আজ বাংলাদেশের জনগণের কাছে প্রমানিত সত্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত আমাদের আশ্রয় ও সার্বিক সহায়তা দিয়েছে। কিন্তু তার বিনিময়ে ভারত আমাদের পানির অধিকার সার্বভোমত্বের উপর আঘাত হানতে পারেনা। বাংলাদেশে ভারতকে তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী করিডোরসহ রেলপথ, রাজপথ, সমুদ্র ও আকাশপথ এবং সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিলেও তারা বাংলাদেশকে নেপাল ও ভুঠানের সাথে করিডোর দিচ্ছেনা এবং ভারতের সাথে ব্যপক বাণিজ্যিক বৈষম্যেও মেনে নেয়া হয়েছে। আমরা ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূণ সম্পর্ক চাই কিন্তু তা হতে হবে সমঅধিকার, সমমর্যাদা ও সমস্বার্থের ভিত্তিতে। ভারতের শাসকশ্রেণি আমদের দেশ জনগণের স্বার্থের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা তারা করতে পারছে ভারতের প্রতি নি:শর্ত আনুগত্যে এবং নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে।
জেলা প্রশাসক এর অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবারক হোসাইন স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। স্মারকলিপি হস্তান্তর কালে উপস্থিত ছিলেন
বিপ্লবী কমিউনিস্টি লীগের সিলেট জেলা সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সিরাজ আহমেদ, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ডাঃ হারাধন দাস, বিশ্বজিৎ শর্মা, আনোয়ার হোসেন, সরপরাজ, রাজু আহমেদ, জসিম উদ্দিন, প্রমুখ।