ইমরান সরকার স্টাফ রিপোর্টার:-
আইপিএম প্রকল্পের আওতায় মাঠ স্কুলে স্থানীয় কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা, মোঃ- নাজমুল হুদা আকন্দ, মোছাঃ শাবানা খাতুন, মোছাঃ রুনা খাতুন।
সকাল থেকেই একে একে ছুঠে আসছেন খোলা আকাশের নিচে গাছ তলায়। তাদের নেই কোনো বই, কিন্তু জ্ঞান আহরণে মাঠ পর্যায়ে ফসল আবাদে ফলন বৃদ্ধিতে নিচ্ছেন প্রশিক্ষণ। ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অধিকাংশ কৃষক /কৃষাণী রয়েছেন নিরক্ষর। এরপরও তাদের আগ্রহের যেন নেই কোনো কমতি। অধির আগ্রহে নিয়মিত উপস্থিত হয়ে সবজিসহ অন্যান্য চাষের উপর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে, দেখা যায় গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ৪নং বরিশাল ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে,আইপিএম কৃষক মাঠ স্কুল। বাড়ির আঙ্গিনায় আর পতিত জমিতে বিষমুক্ত সবজিসহ অন্যান্য চাষে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে ফলন বৃদ্ধিতে দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ।
এ প্রশিক্ষণে স্থানীয় কৃষকদের পুষ্টি, বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন ও পরিবেশ উন্নয়নের পাশাপািশ হচ্ছে তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন। আইপিএম প্রকল্পের আওতায় কৃষি-সম্প্রসারণ অধিদফতরের আওতায় কৃষক মাঠ স্কুলটি পরিচালনা করা হচ্ছে। ১৪ সপ্তাহ মেয়াদী কৃষক মাঠ স্কুলে ২৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১০ জন রয়েছে নারী। প্রতি সপ্তাহে ১ দিন চলে তাদের প্রশিক্ষণ।
কৃষকরা জানান, আগে সনাতন পদ্ধতিতে সবজিসহ কৃষি কাজ করা হতো। ফসলে নানা রোগ বালাই আক্রমণ করায় ফলন ভালো হতো না। প্রতিনিয়ত আমাদের লোকসান গুনতে হতো। কৃষক মাঠ স্কুলে প্রশিক্ষণ নেয়ায় ফলন উৎপাদন সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। জমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে অধিক ফসল উৎপাদন এবং কীটনাশক ব্যবহার না করে কীভাবে রোগ বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এ বিষয়ে অনেক কিছু জানা গেছে। এ পদ্ধতিতে শাক-সবজিসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করলে ফসল উৎপাদন ভালো হয়।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, আধুনিক ও বিষমুক্ত পদ্ধতিতে শাক-সবজিসহ অন্যান্য চাষাবাদে কৃষকদেরকে মাঠ স্কুলের আওতায় এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণে মাঠ পর্যায়ের কৃষকদেরকে পরিচয় করানো হচ্ছে উচ্চ ফলনশীল ফসলের জাতের সঙ্গে। কীভাবে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে শাক-সবজিসহ অন্যান্য ফসল আবাদে কৃষিতে বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে তারা রক্ষা পাবে সেই সঙ্গে জমিতে ফলন ভালো হবে। সেই বিষয়ে কৃষকদেরকে মাঠ পর্যায়ে দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ। এতে কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছে।
পলাশবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ ফাতেমা কাওসার মিশু বলেন, আইপিএম প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল আধুনিক ও বিষমুক্ত পদ্ধতিতে শাক-সবজিসহ অন্যান্য চাষাবাদে কৃষকদেরকে সচেতনতা বাড়াতে উদ্ধুদ্ধ করা। কীভাবে আবাদ করলে সবজিসহ অন্যান্য ফলনে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে মাঠ স্কুলে ওই পদ্ধতি কৃষকদেরকে শেখানো হয়। মাঠ স্কুলে শেখানো কৃষি প্রযুক্তি শিক্ষা মাঠে প্রয়োগ করে অনেক কৃষকরা বেশ উপকৃত হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৭ টি জায়গায় আইপিএম বা কৃষক মাঠ স্কুলে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে ৪টি শাক-সবজি, ১টি ভুট্টা ১ টি ফল ও ১টি ধানের উপর রয়েছে। প্রশিক্ষণ নিতে কৃষকদের বেশ সারা পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে ১ দিন করে দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ। ফলন বৃদ্ধিতে যা যা করণীয় সেই সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।