সোহানুর রহমান রংপুর জেলা প্রতিনিধি:
ধানক্ষেতে স্থাপন করা হয়েছে বাঁশের ছোট ছোট কঞ্চির খুঁটি। সে খুঁটিতে সাজানো হয়েছে পলিথিনের কাগজ। বাতাসে কাগজের শব্দে ধানক্ষেতে বসতে পারে না বকসহ অন্যান্য পাখি। কাগজের শব্দের ভয়ে তারা চলে যায়। রোপণকৃত ধানের চারা যাতে পাখিরা নষ্ট করতে না পারে – সে জন্য অভিনব কায়দায় কৃষকরা ধানক্ষেতের জমিগুলোতে ব্যবহার করছেন পলিথিনের কাগজ।
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর, বালাপাড়া ইউনিয়নের , গাজির হাট, কালির হাট, বিশ্বনাথ, আজম খাঁ, হয়বৎ খাঁ সহ তিস্তা নদীর পাশ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জমিতে ধানের চারা রোপণের পর থেকে বকসহ নানান প্রজাতির পাখিদের পোকা দমনে বসতে দেওয়া হয় না। কৃষকদের ধারণা – পাখির পায়ের চাপে নষ্ট হয় রোপণকৃত ধানের চারা। তাই ক্ষেতে বাঁশের খুঁটিতে পলিথিন বেঁধে রাখলে পাখি আসতে পারে না।
কালির হাটের গ্রামের কৃষক আবুল জাফর বলেন, ‘মাসখানেক আগে ধানের চারা রোপন করি। শুরুতে ধানের চারা রোপণকালে চারাগুলো নরম থাকে। এ সময় বক, বালিহাঁসসহ নানান প্রজাতির পাখি জমিতে বসে। এতে করে পাখির পায়ের চাপে ধানের চারা নষ্ট হয়ে যায়। যার কারণে ধানক্ষেতে পলিথিন সাজানো হয়েছে পাখি তাড়ানোর জন্য।’
আজম খাঁ গ্রামের কৃষক শরিফ উদ্দিন বলেন, ‘এর আগে বিলে আমি প্রায় ৭৬ শতাংশ জমিতে ধানের চারা রোপন করেছিলাম। কিছু দিন পর জমিতে গিয়ে দেখি ধানের চারা পাখিদের পায়ের চাপে মাটিতে মিশে গেছে। তাই অন্য কৃষকদের দেখে এবার পলিথিন সাঁটিয়েছি। যার কারণে পলিথিনের শব্দে বক বা বালিহাঁস ধানক্ষেতে ভয়ে আসতে পারেনি, ধানের চারা নষ্ট হয়নি। ফলন ভালো হয়েছে।’
রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বলেন, ‘ধানের চারা রোপনের পর ক্ষেতে বকসহ বা অন্যান্য পাখি বসলে পায়ের চাপে রোপণকৃত ধানের চারা নষ্ট হয়ে যায়। যার কারণে কৃষকরা এসব পাখি তাড়ানোর জন্য জমিগুলোতে অভিনব কায়দায় পলিথিন সাঁটিয়ে থাকে। এটা কোনো খারাপ প্রভাব ফেলবে না। তবে, প্যাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করলে ভালো হয়।’