মোঃশাহেদুল ইসলাম
স্টাফ রিপোর্টার।
কক্সবাজার পাহাড় তলী এলাকার আতঙ্কের নাম মো সালাম, সালামের নামটা যেন সাধারণ মানুষের কাছে ভয়ংকর একটি নাম, সালাম গ্রুপের অন্যতম প্রধান সালাম যেন অন্যতম একজন মাফিয়া, যার নেতৃত্বে চলে পুরো পাহাড় তলী থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকার সকল ধরনের সন্তাসী কর্মকান্ড, কিশোর কিশোর গ্যাং মানব প্রচার, গুম, হত্যা, ছিন্তাই, ভূমিদস্যু থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপরাধ মুলক কর্মকান্ড। পাহাড় তলী এলাকায় তার বাহিনীর অস্ত্রের ঝন ঝনানিতে আতংক বিরাজ করতো জনমনে। উম্মুক্ত ভাবে অস্ত্র নিয়ে এলাকার প্রতিটি স্থানে বিচরণ থাকতো এই সালাম বাহিনীর।
পাহাড় তলীতে বেশ কিছু আলোচিত ভয়ংকর আস্তানা গড়ে তুলেছে সালামসহ কিছু প্রভাবশালী সন্ত্রাসীরা যার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর আস্তানা হচ্ছে খুনি মার্ঠ, পাহাড় তলীতে এই খুনি মার্ঠে প্রতিনিয়ত চলে অপহরণ, টকসার সেল , মুক্তি পণ আদায়, হত্যা, মানব প্রচার থেকে শুরু করে অসংখ্য অপরাধ মুলক কাজ সংঘটিত হয়, এই স্হান গুলো যেন অপরাধ জগতের স্বর্গরাজ্য। পাশাপাশি আরেকটি আস্তানা গড়ে তুলেছে আবু উকিলের ঘোনা গহীন পাহাড়ে। সেখানে ও চলে সমান তালে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড । অনেক সময় সেসব স্থানে মিলে মানুষের লাশ, দিন দুপুরে খুন হতে হয় সাধারণ মানুষ। প্রতিনিয়ত অপহরণ করে সেখানে করা হতো বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন পাশাপাশি টাকা আদায় করা হত মোটা অংকের টাকা দিতে ব্যর্থ হলে করা হয় হত্যা। পাশাপাশি বিভিন্ন বাহিনীর অস্ত্রের জন জনানীতে রাতারাতি দখল হয় নিরীহ মানুষের জমি।
এসব বাহিনীর অন্যতম মাফিয়া হচ্ছে মোঃ সালাম রফিক, দেলু, শাহ আলম, শাহেদ, জিয়াউর রহমান সম্রাট তাদের মাধ্যমে এইসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালানো হয় বলে জানা যায়।
সম্প্রতি কিছু দিন যাবত বেশ আলোচিত ঘটনার সুত্র পাত ঘটান এই সালাম, তার নেতৃত্বে কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় তার একান্ত সক্রিয় কিছু কিশোর গ্যাং'র সদস্য রয়েছে যারা কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায়, পর্যটন জোনে বিভিন্ন পয়েন্টে আগত পর্যটক থেকে শুরু করে বিভিন্ন ভাবে অপহরণ করে নিয়ে আসে পাহাড় তলী খুনি মাঠ এবং আবু উকিলের ঘোনা নামক গহীন পাহাড়ে।
আদায় করা হয় মোটা অংকের টাকা মুক্তিপণ। মুক্তিপণ দিতে না পারলে এক পর্যায়ে খুন করা হতো অপহৃত ব্যক্তিকে। মাস খানিক আগে কিছু বৌদ্ধ মন্দির সড়ক থেকে ১ নং ওয়ার্ড়ের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম নামের এক যুবক কে সালাম বাহিনীর ৫/৭ জন কিশোর গ্যাং'র সদস্যরা মুখে এক ধরনের বিষাক্ত স্প্রে নিক্ষেপ করে তুলে নিয়ে আসে আলোচিত সেই খুনি মাঠে, তার শরীরে বিভিন্ন অংশে ছুরিকাঘাত করা হয়, তার চোখ বন্ধ করে পাশবিক নির্যাতন করা হয়, পরে তার কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।
এই ঘটনা শেষ না হতে, অপহরণ করা হয় টেকনাফের নাজির পাড়ার বাসিন্দা এহসান নামে এক ব্যক্তিকে কক্সবাজার আদালত প্রাঙ্গণ থেকে অপহরণ করে সিএনজি যোগে তুলে নিয়ে যায় পাহাড় তলী আবু উকিলের ঘোনা পাহাড়ের গহীন জঙ্গলে।
পরে তার কাছ থেকে মুক্তি পন আদায় করা করা হয় ৩ লক্ষ টাকা, অবশেষে প্রশাসনের সহযোগিতায় তাকে সেই আবু উকিলের ঘোনা থেকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়, সর্বশেষ এভাবেই চলে প্রতিদিন ঘুম, হত্যা, অপহরণ, ছিনতাই,।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সালাম বাহিনীর প্রধান সালাম সেই একজন রোহিঙ্গা, রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এসে স্থান নিয়েছিল পাহাড়তলী হালিমা পাড়ায়, সে পেশায় ছিল একজন কাঠমিস্ত্রি। পরে তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠে সালাম বাহিনী। মানুষ হত্যা, অপহরণ, গুম, মুক্তি আদায় ছিল তার নিত্যদিনের পেশা।
তার বাহিনীর নেতৃত্বে গত ৩১-০৩-২০১৫ সালে কক্সবাজার ৯ নং ওয়ার্ড়ের বাসিন্দা আবুল বশরের পুত্র জাগীর মোস্তফাকে হত্যা করে আলোচনায় আসে রীতিমতো, পুরো পাহাড় তলী দখলে নেই এই সালাম বাহিনী, আলোচিত জাগীর মোস্তফা হত্যার ঘটনা শেষ না হতেই সংঘটিত হয় আরেকটি হত্যার ঘটনা।
# গত ০৩-০৭-২০১৮ সালে সালাম বাহিনীর প্রধান সালাম সহ তার সদস্যরা অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে পাহাড় তলীর ইসলাম পুর এলাকায় ছৈয়দুল আমিন লালুর বসত ভিটার জমি দখলে নিতে গেলে লালুর ছেলে ইসমাইল বাধা প্রদান করে এক পর্যায়ে জন সম্মুখে গুলি করে হত্যা করে ছৈয়দ হোসেন প্রকাশ লালুর পুত্র ইসমাঈলকে। এভাবেই চলতো সালাম বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড।
সর্বশেষ গত ২১-০৪-২৪ এপ্রিল সালাম বাহিনীর প্রধান সালাম পাহাড় তলী মৃত আবুল মাঝির পুত্র দিলু, একই এলাকার সোনা মিয়ার পুত্র শাহ আলম, মৃত আবুল মাঝির পুত্র রফিক, মৃত মাহসনের পুত্র জসিম, মৃত আবুল মাঝির পুত্র সাহেদ, আবদুর শুক্কুর পুত্র জিয়াউর রহমান প্রকাশ সম্রাট সহ প্রতিদিনের মতো কক্সবাজার কাছারি পাহাড় নামক স্থান থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৯ এর হেড মাঝি মোঃ রফিক’কে অপহরণ করে নিয়ে আসে পাহাড় তলী আবু উকিলের ঘোনায়।
হেড মাঝি রফিকের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ আদায় করার জন্য তাকে মারধর থেকে শুরু করে চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন দফায় দফায় তার পরিবারকে হুমকি দেয় মুক্তিপণের, না হয় হত্যা করা হবে, স্থানান্তর করা হয় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভয়ংকর আস্তানায়, প্রায় ২১-০৪-২৪ থেকে শুরু করে ২৪-০৪-২৪ ই এপ্রিল পর্যন্ত তাকে বন্দী করে রাখে অপহরণ কারিরা। একপর্যায়ে আইন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা অবগত হলে কক্সবাজার হিমছড়ি দরিয়া নগর গহীন পাহাড় থেকে হেড মাঝি রফিককে উদ্ধার করে র্যাব ১৫।
এসব গড়ে তোলা সন্তাসীদের আস্তানা এবং আলোচিত হত্যা, অপহরণ, অস্ত্র মামলার আসামীরাদে সন্তাসী কর্মকান্ডে আদিষ্ট পুরো এলাকাবাসী। এসব সন্তাসীর হাত থেকে কখন রক্ষা পাবে, কখন সাধারন মানুষের জন জীবন স্বাভাবিক হবে। সে আশায় পাহাড় তলীর সর্বস্তরের মানুষ।
এই অপহরণের ঘটনায় হেড মাঝি রফিকের পরিবার কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে মামলার পরপরই র্যাব অভিযান শুরু করে সেইসব অপহরণকারীর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই অপহরণের মুলহতা সহ প্রায় পাঁচজনকে আটক করেছে র্যাব ১৫।
এসব গড়ে তোলা সন্তাসীদের আস্তানা এবং আলোচিত হত্যা, অপহরণ, অস্ত্র মামলার আসামীরাদে সন্তাসী কর্মকান্ডে আদিষ্ট পুরো এলাকাবাসী। এসব সন্তাসীর হাত থেকে কখন রক্ষা পাবে, কখন সাধারন মানুষের জন জীবন স্বাভাবিক হবে। সে আশায় পাহাড় তলীর সর্বস্তরের মানুষ।
তবে ইতোমধ্যে স্বস্তিতে এবং স্বাভাবিক হয়েছে পাহাড়তলী মানুষের জন জীবন এসব বিভিন্ন বাহিনীর প্রধান ও মুল হতোদের আটক করায় ভয় কেটে স্বস্তি ফিরেছে জনমনে, মোটামুটি আতঙ্ক ও ভয় কেটে স্বাভাবিক হয়েছে পাহাড়তলী এলাকা সাধারণ মানুষের জীবন যাপন । পাশাপাশি এসব সন্ত্রাসী, অপহরণকারী একাধিক হত্যা মামলার আসামিদেরকে আটক করায় প্রত্যেক প্রশাসনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছন পাহাড়তলী সর্বস্তরের জনসাধারণ দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে এই ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখা প্রয়োজন মনে করেন সচেতন নাগরিক।
আইন উপদেষ্টা: অ্যাডভোকেট ফাতিমা আক্তার (এ. এ. জি) সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, এবং আইনী সহকারী সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট।আইন উপদেষ্টা:
এ্যাড.মো. রুবেল আল মামুন। (পাবলিক প্রসিকিউটর।) বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-১৯, ঢাকা।উপদেষ্টা: আলহাজ্ব এম.এ বারেক, সম্পাদক: মোঃ সাইফুল ইসলাম, প্রকাশক: ফকির আমির হোসেন,বার্তা সম্পাদক: আব্দুর রহিম । বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৭ মতিঝিল বা/এ (খান ম্যানশন) লিফট ৮ তলা ঢাকা ১০০০। মোবাঃ ০১৬২৫৫৫৫০১২ ই-মেইল bikalbarta@gmail.com
Copyright @ চাঁদনী মিডিয়া গ্রুপ