আব্দুস সালাম মিন্টু:
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) অফিস সহায়ক ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমান। বিভিন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সময় পিএসসি থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে বিপুল সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তার চলাফেরা বা গ্রামের বাড়ি দেখে কারও বোঝার উপায় ছিল না তার রাজধানীর মিরপুরের ষাটফিট এলাকায় রয়েছে আলিশান বাড়ি, ব্যাংক হিসাবেও রয়েছে কয়েক কোটি টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার সিআইডির তদন্তসংশ্লিষ্ট এক সূত্র খলিলুরের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
খলিলুরের থেকে প্রশ্ন কিনে বিসিএস ক্যাডার হন ৩ জনখলিলুরের থেকে প্রশ্ন কিনে বিসিএস ক্যাডার হন ৩ জন
গত এক যুগে বিসিএসসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। এর মধ্যে অন্যতম খলিলুর রহমান। তিনি বিপুল পরিমাণ টাকার বিনিময়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করতেন। তবে তার চলাফেরা ছিল খুবই সাধারণ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খলিলের বাড়ি যশোরের কেশবপুরের মঙ্গলকোট ইউনিয়নের পাচরাই ঘাগা গ্রামে। তার বাবা নিজাম গাজীও পিএসসির খুলনা শাখায় অফিস সহকারী হিসেবে চাকরি করতেন। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে খলিলুর বড়। বাবার কোটায় খলিলুর রহমান ও তার ভাই হাফিজুর রহমান চাকরি পান পিএসসিতে। তবে গ্রামের বাড়িতে তেমন যাওয়া-আসা নেই তাদের। তাদের পৈতৃক যে বাড়ি রয়েছে, তাও কুঁড়েঘর। সেখানে থাকেন তার চাচা-চাচি ও চাচাতো ভাইয়েরা।
প্রশ্নফাঁস কাণ্ডে গ্রেপ্তার প্রিয়নাথ তিন ভাইকে দিয়েছেন সরকারী চাকরি!প্রশ্নফাঁস কাণ্ডে গ্রেপ্তার প্রিয়নাথ তিন ভাইকে দিয়েছেন সরকারী চাকরি!
২০১২ সালে ৩৩তম বিসিএসের সময় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে খলিলুরের বিরুদ্ধে ঢাকার শাহবাগ থানায় মামলা হয়। ওই সময় তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তারও করে র্যাব। পরে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। একই সময় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও হয়। নাম প্রকাশ না করা সূত্রে পিএসসির একজন কর্মকর্তা বলেন, অনেক দৌড়ঝাঁপ করে খলিলুর মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে সফল হন। পরে ২০২২ সালের মার্চে মামলা ও বিভাগীয় মামলায় যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়। টানা ১০ বছর সাময়িক বরখাস্তের সময়ে তিনি বকেয়া বেতনভাতাও ফেরত পান।
ফাঁস হওয়া প্রশ্নে চাকরি পাওয়াদের নাম বলছেন গ্রেপ্তারকৃতরাফাঁস হওয়া প্রশ্নে চাকরি পাওয়াদের নাম বলছেন গ্রেপ্তারকৃতরা
গ্রামে বসবাস করা খলিলুর রহমানের স্বজনরা জানান, খুলনায় খলিলুর রহমানের মায়ের পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জমি রয়েছে। সেখানেও টিনের ছাউনির একতলা পাকা বাড়ি। খুলনার রায়ের মহল মোল্যাপাড়া রোডের ওই বাড়িতেই ছোট থেকে বড় হয়েছেন খলিলুর। বিয়ে করেছেন, তবে সন্তান নেই। পড়াশোনা করেছেন দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। তারা বাবা-চাচাদের সর্বমোট জমি রয়েছে ২ বিঘা ৮৪ শতক। এই জমির ভাগও হয়নি।