মোঃ আবদুল্লাহ বুড়িচং:
যখন তোমার কেউ ছিল না, তখন ছিলাম আমি, এখন তোমার সব হয়েছে, পর হয়েছি আমি। হারিকেনের যদি কথা বলার ক্ষমতা থাকতো তাহলে হয়তো এই গানের ছন্দ বারবার গাইতো। বিজ্ঞান প্রযুক্তি, সমাজ পরিবর্তন ও আধুনিকতার ভিড়ে দিন দিন গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী হারিকেন এখন বিপন্নপ্রায়। বৈদ্যুতিক বাতি, চার্জার ও বিদ্যুতের নানা ব্যবহারের ফলে হারিকেনের ব্যবহার আজ আর দেখা যায় না। নতুন প্রজন্ম জানেন না, হারিকেন কী, এটির কাজই-বা কী? তবে প্রবীণদের ভাষ্যমতে, একসময় হারিকেন দেখতে যেতে হবে জাদুঘরে।
গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে একসময় হারিকেনই ছিল একমাত্র আলোর উৎস।আগে রিকশার প্যাডেলের সাথে হারিকেন বেঁধে রাস্তা দেখার আলোর ব্যবস্থা করা হতো। আকাশের আলো নিভে গেলেই সন্ধায় হারিকেন নিয়ে পড়তে বসত শিশুরা। বাজারের দোকানদারি এমনকি রাতে চলাফেরা করার জন্যও হারিকেন ছিল গ্রামের মানুষের একমাত্র অবলম্বন। তবে এখন প্রযুক্তির ভিড়ে হারিকেন ছেড়ে বিদ্যুতের দিকে ঝুঁকছে।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়ন আরাগ আনন্দ পুর গ্রামের জয়দল হোসেন (৭৫) বলেন, ছোটবেলায় আমরা ল্যাম্প কিংবা হারিকেনের মৃদু আলো জ্বালিয়ে লেখাপড়া করেছি বাতাসের ঝাপটায় কখনো কখনো আলো নিভে গেছে। আবার কাঠির ম্যাচ দিয়ে আলো জ্বালিয়ে পড়ালেখা শুরু করতাম। এখন এসব কিছুই অতীত। সবই স্মৃতি হয়ে আছে আমাদের মাঝে। কংশনগর বাজারের মুদি দোকান দার বলেন, ১৫ থেকে ২০ বছর আগে বিকেল কিংবা সন্ধ্যায় কেরোসিন তেল নেয়ার জন্য মানুষের সিরিয়াল থাকত। গ্রামাঞ্চলের সেই ঐতিহ্যবাহী হারিকেন আজ বিলুপ্তির পথে।