মোঃ আল আমিন স্টাফ রিপোর্টারঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় মৃতপ্রায় কালন্দিতে শুরু হয়েছে প্রাণ ফেরানোর কাজ। এবারের বর্ষাতেই এ খালে বইবে জলধারা- এমনটাই আশা স্থানীয় বাসিন্দাসহ প্রকৃতিপ্রেমীদের। কালন্দি খালে জলধারা বওয়া মানে একদিকে কৃষকের স্বস্থি ও অন্যদিকে এলাকার জলপ্রবাহে গতি বাড়া।ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা থেকে সীমান্ত পার হয়ে আখাউড়া উপজেলার স্থলবন্দর, গাজীরবাজার, নারায়ণপুর বাইপাস মোড়, পৌর শহরের সড়ক বাজার ও বড় বাজার বিদ্যুৎ অফিসের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তিতাস নদীতে মিলিত হয়েছে কালন্দি খাল। ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার পানিও এই খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়। একসময়ের খরস্রোতা কালন্দি খাল দখল আর দূষণে এখন মৃতপ্রায়।
আখাউড়া প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্লাব নামে একটি সংগঠনের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে কালন্দি খালটি দখল ও দূষণমুক্ত করার উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানা গেছে, উপজেলার নূরপুর সেতু থেকে থানা সংলগ্ন সেতু পর্যন্ত ১৫১০ মিটার খালের খনন হবে। খালের প্রশস্থ হবে ১০ ফুট। জায়গার অবস্থা বুঝে পাঁচ থেকে ছয় ফুট গভীর করে খালটি খনন করা হবে। এ প্রকল্পে মোট ব্যয় প্রায় ২৭ লাখ টাকা। জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ফেব্রুয়ারির মধ্যেই শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাসহ পরিবেশ কর্মীরা বলছে, কালন্দি খাল আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে শুরু হয়ে পৌর এলাকার সড়ক বাজার হয়ে বড়বাজার বিদ্যুৎ অফিসের পাশ দিয়ে তিতাস নদীতে গিয়ে মিলেছে। তবে খালের দুই কিলোমিটারের বেশি অংশ পানি চলাচলের অনুপযোগি হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। বিশেষ করে উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনে থেকে খালটির অবস্থা একেবারে নাজুক। কিছু অংশে গত কয়েকবছর ধরে পানিই দেখা যায় না। এ খাল দিয়ে পানি প্রবাহ নেই বিধায় সড়ক বাজার এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। চলমান অংশটুকুর কাজ শেষে বাকি অংশেরও কাজ করা হবে বলে আশা করছেন তারা।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আখাউড়া-আগরতলা সড়কের পাশে পৌরসভার নারায়নপুর এলাকায় খাল খননের কাজ চলছে। প্রায় ৩০০ মিটারের মতো অংশ ইতিমধ্যেই খনন করা হয়েছে। সেখানে পানি টলমল করছে। তবে খালের উপর অতিরিক্ত হারে থাকা সেতু ও দখল হয়ে যাওয়া কিছু জায়গা কাজের ব্যাঘাত ঘটাবে বলে জানান খনন কাজের সংশ্লিষ্টরা।
পরিবেশকর্মীরা বলছেন, দখল-দূষণের কারণে এ খালেরই পানিপ্রবাহ ঠিক নেই। প্রভাবশালীদের দখলে বিলীন হয়েছে খালের অনেক অংশ। তাই পানি সরে যাওয়ার পথ রুদ্ধ হওয়ায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যার কবলে পড়ে বার বার বিপর্যয়ের মুখে পড়ছেন সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। কলেজপাড়ার বাসিন্দা মো. আইনুল হোসেন বলেন, কালন্দি খালটির সাথে আমাদের আখাউড়া বাসীর ঐতিহ্য আর আবেগ জড়িয়ে আছে। কিন্তু দীর্ঘদিন খালটি খনন না হওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। খালের ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত খনন করার প্রয়োজন ছিল যা ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। এতে করে প্রাণ ফিরবে আমাদের কালন্দিতে।
আখাউড়া প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্লাবের আহ্বায়ক রুবেল আহমেদ বলেন, ছোটবেলায় দেখেছি এই খাল দিয়ে নৌকা চলেছে। অনেক পানিপ্রবাহ ছিল। কিন্তু আস্তে আস্তে এটি দখলের কারণে মরা খালে পরিণত হয়েছে। এখানে এখন আর পানি দেখা যায় না। আমরা দীর্ঘদিন থেকে খালটি উদ্ধার করে খননের দাবি জানিয়ে আসছি। স্বাধীনতার দীর্ঘ পাঁচ দশক পর খালটি দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়ায় আমরা খুশি। এই খালের বাকি অংশ টুকু খনন করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে পরিবেশ উপদেষ্টা ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্থানীয়বাসিন্দাদের গণ স্বাক্ষারসহ একটি আবেদনের প্রত্তুতি নেওয়া হয়েছে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড খাল খননের কাজ শুরু করেছে। এই কাজের পর বাকি যে ৭০০ মিটার অংশ বাকি থাকবে সেটির বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। পুরো অংশের কাজ হলে পানি প্রবাহ বাড়বে ও জলাবদ্ধতাসহ নানা সমস্যার সমাধান হবে।
আইন উপদেষ্টা: অ্যাডভোকেট ফাতিমা আক্তার (এ. এ. জি) সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, এবং আইনী সহকারী সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট।আইন উপদেষ্টা:
এ্যাড.মো. রুবেল আল মামুন। (পাবলিক প্রসিকিউটর।) বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-১৯, ঢাকা।উপদেষ্টা: আলহাজ্ব এম.এ বারেক, সম্পাদক: মোঃ সাইফুল ইসলাম, প্রকাশক: ফকির আমির হোসেন,বার্তা সম্পাদক: আব্দুর রহিম । বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৭ মতিঝিল বা/এ (খান ম্যানশন) লিফট ৮ তলা ঢাকা ১০০০। মোবাঃ ০১৬২৫৫৫৫০১২ ই-মেইল bikalbarta@gmail.com
Copyright @ চাঁদনী মিডিয়া গ্রুপ