মোঃ হোসেন, সদর প্রতিনিধি:
ভোলায় ব্যাংক চালু করার প্রলোভন দেখিয়ে জামাল হোসেন তারেক ও জাকির হোসেন ৩৭,৭৫,০০০/- হাজার টাকা নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার অভিযোগ করেছে ১৮ জন ভুক্তভোগী ১. মোস্তফা কামাল ২. সুরাইয়া ইয়াসমিন ৩. সহিদুল ইসলাম ৪. মোঃ শাকিল ৫. ফেরদৌস ৬. মোঃ হাসান ৭. আল আমিন ৮. ইমাম হোসেন ৯. মোঃ আলাউদ্দিন ১০. আচিয়া আক্তার ১১. মোঃ লিটন ১২. মোঃ ফিরোজ ১৩. মোসাম্মৎ ১৪. মোঃ হাসান ১৫. মোঃ নিরব ভূইয়া ১৬. মোঃ আবু ছায়েদ ১৭. মোঃ আলমগীর ১৮. আলহাজ্ব এ,কে,এম,নুর উদ্দিন তালুকদার সহ মামলার বাদী আহাদ হোসেন।
জাতীয় দৈনিক বিকাল বার্তা, দৈনিক বরিশাল ভোরের আলো, দৈনিক তথ্য প্রকাশ, বিডি নিউজ ইউরোপ এবং রাইজিং সিলেট ও বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল এর সাংবাদিকদের জানান, আমরা ১৮ জন বেকার যুবক চাকুরির প্রতারনার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বশান্ত অবস্থায় বেকারত্ব জীবন যাপন করে যাচ্ছি ইতিমধ্যে সবকিছু হারিয়ে একদম নিঃস্ব। আহাদ হোসেন আরও বলেন, দালাল চক্রের বড় বাটপার জামাল হোসেন তারেক ও জাকির হোসেন আমাদের মোবাইলে বলছিলো আমরা ০১ থেকে ১৪ নং অফিস কর্মীবৃন্দ টাকা এফ, ডি, আর করার জন্য বেসি বেসি গ্রাহক আনি। তাদের কথা মতো আমরা অফিস পরিচালনা করতে থাকি। তারা এও বলেন, খুব শীঘ্রই অফিসের যত টাকা প্রয়োজন তাহা ব্যাংক ইনভেস্ট করিবেন বলিয়া মোট ৩৭,৭৫,০০০/- হাজার টাকা নিয়া ঢাকায় চলে যান, জামাল হোসেন তারেক ও জাকির হোসেন। এই দিকে আমরা সকল স্টাফ নিয়মিত অফিস কর্মহীন ভাবে আসা যাওয়া করতে শুরু করি। কিন্তু এই ভাবে বহুদিন চলতে থাকলে তাদের খবর নেই, হঠাৎ একদিন মুঠোফোনে মোস্তফা কামালকে জামাল হোসেন তারেক ও জাকির হোসেন জানান, খুব শীঘ্রই শাখা ০২ ব্যাংক উদ্বোধন হবে বলে আশ্বস্ত করান।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ভোলার লালমোহন পৌরসভাধীন জামাল হোসেন তারেক এর নানা বাড়ীসহ অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের বাড়ী থাকায় জামাল হোসেন তারেক ও জাকির হোসেন এর সাথে ভুক্তভোগীদের পরিচয় হয়। ভুক্তভোগীরা জানান প্রথমে জামাল হোসেন তারেক স্মল ট্রেডার্স কো-আপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড, উত্তর সিটি কর্পোরেশন ডি.এম.ডি পদে চাকুরীরত আছে এবং জাকির হোসেন স্মল ট্রেডার্স কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড প্রধান কার্য্যালয় ঢাকা ব্যাংকের ডি.এম.ডি পদে কর্মরত আছে বলে ভুক্তভোগীদের পরিচয় দেন। কথা বার্তার এক পর্যায়ে ভুক্তভোগীরা মিলে ভোলা সদর টাউন কালিনাথ রায়ের বাজারে নাজমা ভিলার ৪র্থ তলার ২য় তলা ভাড়া নিয়ে থাকি ১৮ জন্য স্টাফ মিলে। খুব শীঘ্রই স্মল ট্রেডার্স কো-অপারেটিভ ব্যাংকের শাখা ০২ উদ্বোধন করিবে এবং উক্ত শাখা ০২ ব্যাংকের বিভিন্ন পদে লোকের চাকুরীতে নিয়োগ দেওয়া হবে বলিয়া ভুক্তভোগীদের জানান, দালাল চক্রের মূল হোতা জামাল ও জাকির। পরবর্তী সার্কুলার নং ১/২/৩ প্রকাশিত খবর দেখিয়ে সকলকে খুশী করেন। দালাল চক্রের কথা বিশ্বাস করে ও সার্কুলার যাচাই বাচাই না করে ভুক্তভোগীদের বিশ্বাস জন্মে এবং চাকুরীতে নিয়োগ পাওয়ার জন্য সকল স্বাক্ষীগণ আসামীদের সাথে যোগাযোগ করিলে শর্ত সাপেক্ষে সকলকে স্মল ট্রেডার্স কো-অপারেটিভ ব্যাংক এর গুরুত্বপূর্ণ পদে পদে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে। এক পর্যায়ে সবাইকে নিঃস্ব বানিয়ে দেন।
ভুক্তভোগী হাসান মুঠোফোনে গণমাধ্যমকে বলেন, আমি ব্যাংকের চাকুরীর জন্য দালালদেরকে না চিনে বিশ্বাস করি এখন আমি নিঃস্ব।
মামলার সূত্রে জানা যায়, মোসাঃ সুরাইয়া ইয়াসমিন ও তার স্বামী শাজাহান (সেন্টু) ঢাকা গিয়ে জামাল হোসেন তারেক ও জাকির হোসেনের সাথে একান্ত বৈঠক আলাপ আলোচনা মাধ্যমে নিজ গন্তব্যে পিড়েছেন। তাই জামাল হোসেন তারেক ১নং ভুক্তভোগী মোস্তফা কামালকে ফোনে জানান যে, শাখা অফিস ০২ এর সকল দায়িত্ব সুরাইয়া ইয়াসমিন ও তার স্বামী বরাবর সকল মালামাল ও দায়িত্ব হস্তান্তর করতে। তাৎক্ষণিক মোস্তফা কামাল অফিসের যাবতীয় আসবাব পত্র ও হিসাব নিকাশের খাতাপত্র সুরাইয়া ইয়াসমিন ও তার স্বামীকে বুঝাইয়া দিলে তারা বুঝিয়ে পাইয়া লিখিত পত্রে স্বাক্ষর করেন। জালাল হোসেন তারেক ও জাকির হোসেন, এই দালাল চক্রের খবর নিয়ে জানা যায় তারা বিভিন্ন জেলায় উপজেলা গিয়ে সাধারণ বেকার তরুন যুবকদের কে টার্গেট করেন এবং তাদের সাথে নানা কৌশলের মাধ্যমে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে থাকে এবং সুযোগ বুঝে মোটা অঙ্কের জামায়াতে নিয়ে রাতারাতি লাপাত্তা হয়ে জান।
জামাল ও জাকির টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার পর উক্ত শাজাহান ওরফে (সেন্টু) ভুক্তভোগী মোস্তফা কামাল সহ সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেন, পরবর্তীত ব্যাংক দুইএর ম্যানেজার তিনি হচ্ছেন, শাজাহান এও জানান কোনো রকম দুঃচিন্তা করার কিছু নেই আমি শাজাহান তো আছি তবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে তবে এর জন্য কিছুদিন সময় লাগবে। এই বলে ভুক্তভোগীদের বিশ্বাস করান। অভিযোগ করেন বাদী আহাদ হোসেন’সহ ১৮ জন। ইতিমধ্যে মালামাল বুঝিয়ে পাইয়া সুরাইয়া ইয়াসমিন সহ স্বামী শাজাহান (সেন্টু) দালালদের সঙ্গে যুক্তি করে অফিস কক্ষ তালাবদ্ধ করিয়া পালিয়ে যান। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এখনো সেই অফিস তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। অফিস তালাবদ্ধের বিষয় জানতে চাইলে শাজাহান (সেন্টু) অস্বীকার করে বলেন, আমাকে ওনার জোর করে অফিস বুঝিয়ে দিয়েছে কিন্তু আমি পরে বুঝতে পারছি। তিনি আর-ও জানান যে, ঢাকায় আমি আর আমার স্ত্রী গেছিলাম কিন্তু জামাল হোসেন তারেক ও জাকির হোসেন এর সাথে কোনো রকম আলাপ আলোচনা হয়নি। বরং তারাই আমাকে উল্টো পাসিয়ে দিয়েছে, বাদী আহাদ হোসেন সহ অন্যান্য দের সঙ্গে নিয়ে। পরবর্তীতে অফিস চালু করবে কিনা জানতে চাইলে শাহজাহান ওরফে সেন্টু জানান, সেই বিষয় আমি কিছু যানি না। সব আহাদ হোসেন সহ মোস্তফা কামাল ভাই জানে। এক বছরের মত অফিস তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
হতাশা ও দুঃশ্চিন্তা ও চিন্তিত দিন দিন বেরে চলে ভুক্তভোগীদের। এই দিকে দালাল চক্রের মুঠোফোনও বন্ধ থাকায় তাদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে একদম। বহুকষ্টের এক পর্যায়ে ও নিরুপায় এবং হতাশাগ্রস্থ হইয়া মোস্তফা কামাল, সহিদুল ইসলাম, শাকিল ঢাকায় যান এবং অনেক চেষ্টা ও খুজিয়া ঢাকার পুরান পল্টন হোটেলে দালাল চক্রের মুল হোতা জামাল হোসেন তারেক ও জাকির হোসেন এর সাথে কিছুক্ষণের জন্য দেখা করার সুযোগ হয়েঠে এবং মোস্তফা কামাল সহ বাকিরা উল্লেখিত ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইলে? দালাল চক্রের মূল হোতা জামাল হোসেন তারেক ও জাকির হোসেন বিরক্ত কন্ঠে স্পষ্ট বলে দেন যে, উক্ত ঘটনার ব্যাপারে কোনো আলাপ আলোচনা যাতে না করে। যদি করে তাদের ঢাকায় গুম করে মেলা পেলার হুমকি ধামকির ভয় দেখিয়ে বলেন, টাকা পয়সার চেয়েও জীবনের মূল্য বহুগুন বেসি। এই হুমকি সরুপ উপদেশ দেয় দালাল চক্র জামাল হোসেন তারেক ও জাকির হোসেন মূহুর্তের মধ্যেই তারা ওই স্থান ত্যাগ করে পালিয়ে যান জামাল হোসেন তারেক সহ জাকির হোসেন। হুমকি সহকারে আরও বলেন, উক্ত ঘটনার ব্যাপারে পূর্ণরায় ঢাকাতে আসার চিন্তাও যাতে না করি। এবং এই ঘটনার বিষয় যেনো কাউকে কিছুই না বলে, যদি বলে তাইলে মোস্তফা কামাল সহ বাকিদের কে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে হুমকি দেয় দালাল চক্র।
কথা হয় দালাল চক্রের দ্বিতীয় হোতা জাকির হোসেন এর সাথে তিনি মুঠোফোনে জানান জামাল হোসেন তারেক নামের কাউরে আমি চিনি না বলে ব্যখ্যা দালাল চক্রের দ্বিতীয় হোতা। উল্লিখিত ঘটনার বিষয় প্রশ্ন করলে অখ্যাত ভাষায় তুই তুগারি করে বলে আমি কে আমাকে চিনোস তুই? তুই কে যে আমি তোকে আমার পরিচয় দিবো, তুই আমাকে চিনোস না বেটা বাস্টার! তোর পুরোগুষ্টির খবর নিতাছি দ্বারা। এই বলে ফোন কেটে দেয় দালাল চক্রের জাকির হোসেন। পরবর্তীতে আবার কল দিলে কল রিসিভ করে-ই অশ্লীল ভাষায় দালাল জাকির হোসেন হুমকি ধামকি দেয় আর ভাড়াটিয়া সন্ত্রাস দিয়ে মেড়েপেলার হুমকি সহ ঘুম করারও ইংগিত করে বলে তুই ভোলাতে আছোত না থাকিস বলে ফোন কেটে বন্ধ করে রাখেন।
জামাল হোসেন তারেক ও জাকির হোসেনের কাছ থেকে ১৮ জনের টাকা পাওয়ার জন্য বাদী আহাদ হোসেন, মোকাম ভোলার বিজ্ঞ চীপ জুটিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতারনার একটি মামলা করেন মামলার এম,পি ২৮৮/২৩ ভোলা। আদালতে মামলা চলোমান রয়েছে ও ডিবিকে তদন্তের নির্দেশ করেছে আদালত। তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদনের রিপোর্ট আদালতকে দেখানোর নির্দেশ দিয়েছে ভোলার বিজ্ঞ চীপ জুটিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
এই বিষয় ডিবির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আসাদ গণমাধ্যমকে মুঠোফোন বলেন, মামলার কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পড় বাদী আহাদ হোসেন এর সাথে সরাসরি আলাপ করেছি। মামলার তদন্ত চলমান। ওয়ারেন্ট বের হবার পর দালাল চক্রের সবাইকে গ্রেফাতার করতে পারবো বলে আশা করতেছি।