সোহানুর রহমান
রংপুর জেলা প্রতিনিধি :
রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলায় বেতগাড়ী ইউনিয়নের বেতগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরির বয়স সীমা থাকা সত্ত্বেও ঝাড়ুদার কর্মীর পদে টাকার বিনিময় নতুন করে নিয়োগ দেওয়ার জন্য টালবাহানা শুরু করেছে অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকসহ কমিটির লোকজন। এ ঘটনায় বিজ্ঞ গংগাচড়া সহকারী জজ আদালতে একটা মামলা হয়েছে। যার মামলা নং- ৩২৭/২৩ ইং
উক্ত মামলায় বিবাদীগণ হলেন, বেতগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফখরুল বারী, সভাপতি এনামুল হক, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রফিকুল আলম বাদশা, দাতা সদস্য মতিয়ার রহমান, সাধারণ অভিভাবক সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, বাবু মিয়া, বিকাশ চন্দ্র সরকার, সাধারণ শিক্ষক সদস্য তাহেরুল ইসলাম, মাহবুবার রহমান, সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক সদস্য তৌহিদা জান্নাতি, সংরক্ষিত মহিলা শিক্ষক সদস্য শেলী বেগম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গঙ্গাচড়া, জেলা শিক্ষা অফিসার মেট্রোপলিটন কোতোয়ালী রংপুর।
বৃহস্পতিবার (১লা ফেব্রুয়ারি ) সকালের দিকে বেতগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠানটি গেলে জানা যায়। সেখানে ১৯৯৪ সাল থেকে গোপাল চন্দ্র হাজরা নামের একজন নিয়োগপ্রাপ্ত পরিচ্ছন্ন কর্মী কাজ করে আসছে। তার চাকরির শেষ হতে আরো ছয় বছর সময় লাগবে। অথচ প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি মন্ডলী জোর করে গোপাল চন্দ্র হাজরাকে অব্যাহতি প্রদান করতে চায়।
এ বিষয়ে গোপাল চন্দ্র হাজরা বলেন, আমি স্কুলের নিয়োগ দেখে আবেদন করি। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠান আমার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে সরকারি স্কেলে বেতন প্রদান করবে শর্তে নিয়োগ প্রদান করেন। আমাদের এই নিয়োগ ১৯৯৫ সালে বৈধকরণ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় দেয়। একই সঙ্গে আমরা ওই প্রতিষ্ঠানের ছয়জন নিয়োগপ্রাপ্ত হই। পদ গুলোর মধ্যে একজন সহকারী শিক্ষক বিএসসি অংক একজন, সহকারী শিক্ষক বিএ তিনজন, নৈশ প্রহরী একজন, ঝাড়ুদার একজন পদে নিয়োগ দেয়। চাকরি চলাকালীন সময় ২০০৬ সালে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক টাকার বিনিময়ে পাঁচজনকে এমপিও ভুক্ত করে নেয়। আমিও এমপিওভক্ত করার জন্য ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম কিন্তু সন্তুষ্ট জনক টাকা না হওয়ার কারণে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক আমার নিয়োগ এমপিও ভুক্ত করেনি। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক তবারক হোসেন আমাকে এমপিও ভুক্ত করে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আস্তে আস্তে বছরের পর বছর কাল কখন করতে থাকে। আমি এমপিও ভুক্ত না হওয়ার কারণে বেতন পাইতাম না। স্কুল থেকে স্যারেরা আমাকে দুইশো- তিনশো টাকা দিত তা দিয়েই কষ্ট করে সংসার চালিয়ে আসছি। প্রধান শিক্ষকের আশ্বাসের কারণে বেতন ছাড়াই আমি স্কুলে চাকরি করতে থাকি। কিন্তু বছরের পর বছর কেটে যায় আমি এমপিও ভুক্ত হই না।
তিনি আরো বলেন, হঠাৎ করে তবারক স্যার মারা গেলে নতুন প্রধান শিক্ষক ফখরুল বারী নিয়োগ প্রাপ্ত হন। ভাগ্যের কি পরিহাস বর্তমান প্রধান শিক্ষক সাবেক প্রধান শিক্ষক তবারক হোসেন আমাকে এমপিও ভুক্ত না করে ঘুরাতে থাকে। আমি স্কুলের পাশাপাশি অন্যের জমিতে কাজ করে। কোন মত স্ত্রীর সন্তানকে নিয়ে জীবন যাপন করে আসছি। এভাবেই কেটে গেল ২৮ বছর। আমার চাকরির বয়স আছে আর মাত্র ৬ বছর। কিন্তু স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি মন্ডলী আমাকে এমপিও ভুক্ত না করে। আমার চাকরি বয়স থাকা অবস্থায়। আমার পদে আরেক জনকে টাকার বিনিময় নিয়োগ প্রদান করা চেষ্টা করছেন।
বেতগাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি এনামুল হক বলেন, আমি সভাপতি কালে গোপাল চন্দ্র মালাকে পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসাবে পাইনি। উনি নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন আগের সভাপতির আমলে। নিয়োগের পরবর্তীতে পদ অবকাঠামোর কারণে গোপাল চন্দ্র মালার পদটা বাদ পরে। সেটা উনি বুঝতে পেরে আট থেকে নয় বছর আগেই স্কুলে আর আসেন নাই। গোপাল চন্দ্র মালা ঝাড়ুদার এই পদের জন্য কোর্টে মামলা করেছে। কোর্টে আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করেছি।
এ বিষয়ে জানার জন্য সাবেক গংগাচড়া মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রোকসানা বেগম বলেন, আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলাম। সেখানে তদন্ত করতে যেয়ে দেখেছি গোপাল চন্দ্র দুই বছরে রেজিস্টার খাতায় উপস্থিত সাক্ষ্য দেখতে পাইনি। তিনি যে সময় নিয়োগ পেয়েছেন। সে সময় মাধ্যমিক রেজুলেশনে সুইপার পদে নিয়োগ ছিলনা। সেজন্য তৎকালীন প্রধান শিক্ষক তাকে এমপিওভুক্ত করে নাই। সেজন্য প্রধান শিক্ষক ও কমিটির লোকজন ওই পদে গোপাল চন্দ্রকে না রাখার জন্য অপরগতা প্রকাশ করেছেন। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে রিপোর্টটা দিয়েছি।
রংপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এনায়েত হোসেন বলেন, আমাদের সাবেক গংগাচড়া মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কমিটি গঠন করে তদন্ত দিয়েছেন। গোপাল চন্দ্রের পদ এখনো ফাঁকা আছে। এ বিষয়ে কোর্টে মামলা চলমান। কোর্ট যা রায় দিবে সে মোতাবেক পরবর্তী কার্যক্রম চলবে।##
আইন উপদেষ্টা: অ্যাডভোকেট ফাতিমা আক্তার (এ. এ. জি) সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, এবং আইনী সহকারী সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট।আইন উপদেষ্টা:
এ্যাড.মো. রুবেল আল মামুন। (পাবলিক প্রসিকিউটর।) বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-১৯, ঢাকা।উপদেষ্টা: আলহাজ্ব এম.এ বারেক, সম্পাদক: মোঃ সাইফুল ইসলাম, প্রকাশক: ফকির আমির হোসেন,বার্তা সম্পাদক: আব্দুর রহিম । বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৭ মতিঝিল বা/এ (খান ম্যানশন) লিফট ৮ তলা ঢাকা ১০০০। মোবাঃ ০১৬২৫৫৫৫০১২ ই-মেইল bikalbarta@gmail.com
Copyright @ চাঁদনী মিডিয়া গ্রুপ