নিজস্ব প্রতিনিধি, ভোলা
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক বিষাক্ত রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত ২১ জুন (শুক্রবার) বিকেলে উপজেলার পৌরসভার কালি বাড়ি রোড নামাক এলাকা থেকে একটি চন্দ্রবোড়া সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন স্থানীয়রা।
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পেইজবুকে ২৫ মিনিটের এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে নেট দুনিয়ায় তাতে দেখা যায়, বিষাক্ত রাসেলস ভাইপারের আক্রমণ থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে সাপের বাচ্ছা সহ কেরাসিন তেল দিয়ে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মেরে পেলা হয়।
অপর দিকে উপজেলার মাদ্রাজ ইউনিয়নের বেতুয়া এলাকা থেকে একই প্রজাতির আরেকটি সাপ দেখা যায়। তবে স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার মেঘনা নদীর চরাঞ্চলে বিভিন্ন জাতের সাপের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। কিন্তু দেখা মিলল রাসেলস ভাইপার সাপের। ফলে মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলের বসবাস করা মানুষরাই সব থেকে বেসি আতঙ্কে রয়েছেন। একের পর এক বিষধর রাসেলস ভাইপার সাপের দেখা মিলছে নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার মানুষদের।
নতুন সুইলিজের শাহজাহান জানান, বেড়িবাঁধের পাশে বিষধর রাসেলস ভাইপার দেখতে পেয়ে সবাই মিলে সাপটিকে মেরে ফেলেছে। তবে এলাকার সাধারণ মানুষদের মনে ভয় বিরাজ করতেছে সেই সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ঘাটে চলাফেরা করতে পারছে না স্বাভাবিক ভাবে।
এলাকার ইসমাইল বলেন, জোয়ারে নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে রাসেল ভাইপার সাপটি বেড়ি বাধে চলে আসে। সাপটি যখন চলে যাচ্ছিল তখন আমি লোকজনকে ডাকি এবং স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন তারপর সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে হয়।’
এ বিষয়ে মাদ্রাজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি খবর পেয়েছি, আমাদের ইউনিয়নসহ বিভিন্ন জায়গায় রাসেলস ভাইপার সাপ ধরা পড়ছে। আমরা এ বিষয়ে এলাকার মানুষদেরকে সচেতন করছি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মাহবুবুুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চন্দ্রবোড়া বা উলু বোড়া (বৈজ্ঞানিক নাম : Daboia russelii) ভাইপারিডি পরিবারভুক্ত একটি অন্যতম বিষধর সাপ। এই সাপ সবচেয়ে বিষাক্ত ও এর অসহিষ্ণু ব্যবহার ও লম্বা বহির্গামী (Solenoglyphous) বিষদাঁতের জন্য অনেক বেশি লোক দংশিত হন। বিষক্রিয়ায় রক্ত জমাট বেঁধে যায়। ফলে অত্যধিক রক্তক্ষরণে দীর্ঘ যন্ত্রণার পর মৃত্যু হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘সাপ সাধারণত ডিম পাড়ে এবং ডিম ফুটে বাচ্চা হয়। তবে চন্দ্রবোড়া সাপ ডিম পাড়ার পরিবর্তে সরাসরি বাচ্চা দেয়। এরা বছরের যেকোনো সময় প্রজনন করে। একটি স্ত্রী সাপ গর্ভধারণ শেষে ২০ থেকে ৪০টি বাচ্চা দেয়। তবে কোনো কোনো চন্দ্রবোড়া সাপের ৮০টি পর্যন্ত বাচ্চা দেয়ার রেকর্ড রয়েছে।