জেলা প্রতিনিধি:: ৪ আগস্ট সিলেট মহানগরের নয়সাড়কে নাশকতা সৃষ্টির মামলার আসামি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নজরুল ইসলাম সিপারকে (৪৪) গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টায় মহানগরের সুবিধবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সিলেট কোতয়ালী থানার এফাইয়ার নং ৩৪/৩৮৯. ধারা ১৯০৮ সনের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩/৪ তৎস ধারা_১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/১১৪/৩৪ দন্ড বিধি আইন ১৮৬০.এর মূলে পলাতক আসামী নজরুল ইসলাম শিপার কে ধরা হয়। সিপারকে আটকের পর সিলেট মিডিয়া পাড়ায় চলছে আনন্দ উল্লাস।
কে এই নজরুল ইসলাম সিপার, কেনইবা আনন্দ উল্লাস জানতে মুখোমুখি হই বিভন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে। তারা এই প্রতিবেদককে বলেন
নজরুল বিয়ানীবাজার উপজেলার লাওতা ইউনিয়নের জলঢুপ এলাকার রফিক আহমদের ছেলে। বর্তমানে থাকেন সিলেট নগরীর সুবিধবাজার ফাজিলচিস্ত এলাকায়। তারা বলেন সিপার কোন মিডিয়া কর্মী নয়। কোন পত্রিকা বা চ্যানেলের সাথে জড়িত্ব না থাকলেও তিনি নিজেকে বড় সাংবাদিক বা সিলেট সাংবাদিক ইউনিয়ন এর স্বঘোষিত সভাপতি পরিচয় দিয়ে থাকেন। স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ও সিলেট সাংবাদিক ইউনিয়ন এর সভাপতির পদ ব্যবহার করে সকল অবৈধ কাজ দেদারসে করেন, নিচে কয়েকটি ঘটনার তথ্য পাঠকের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার সিনিয়র এসএসপি মো. মশিহুর রহমান সোহেল।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান- শেখ হাসিনা সরকার পতনের আগের দিন ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সিলেট মহানগরের নয়াসড়ক এলাকায় নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্যসহ বিভিন্ন আইনে দায়েরকৃত মামলার আসামি এই নজরুল। মামলার ৪৩ নং আসামি তিনি।গ্রেফতারের পর নজরুলকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব।
উল্লেখ্য র্যাবের হাতে আটক নজরুল ইসলাম সিপার, দক্ষিণ সুরমার ২৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ এর
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী নুরুদ্দীন রাসেল ও গোলাপগঞ্জ আওয়ামিলীগ নেতা আবুল কাশেম রুমনের নির্দেশে ২৪ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগ ক্যাডার আরাফাত, হ্নদয় সহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জন গত ৬ জুলাই সিলেটের স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল "তালাশ টিভি ডট লাইভ" এর স্টাফ রিপোর্টার লাকী আক্তার ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা প্রতিনিধি জামান আহমদকে দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন চত্ত্বর থেকে মোটর সাইকেল শো-রুম উদ্বোধনের কথা বলে অপহরণ করে কয়েক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। লাকীর চেচামেচিতে মানুষ জরো হয়ে রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হলে গণপিটুনি থেকে বাঁচতে ভূলবুঝাবুঝি হয়েছে বলে ক্ষমা চেয়ে চলে যায়। এব্যপারে দক্ষিন সুরমা থানায় গত ৮ জুলাই তালাশ টিভি ডট লাইভ এর সম্পাদক ও প্রকাশক একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও আওয়ামীলীগের ক্ষমতার দাপটের কারনে এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত প্রথমে আপুষ এবং পরে ঘটনাস্থল কোতোয়ালি থানার কারণ দেখিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা কদমতলী ফাড়ির ইনচার্জ এস আই দেবাংশু অভিযোগটি রেকর্ড করেননি। পরে অপহরণের শিকার লাকী আক্তার বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে সেটিও রাজনৈতিক কারণে রেকর্ড করা হয়নি। এরপর সর্বশেষ পুলিশ কমিশনার বরাবর আরেকটি লিখিত অভিযোগ দিলেও সেটিও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে আলোর মূখ দেখেনি। এটাই হচ্ছে নজরুল ইসলাম সিপার গংদের ক্ষমতা।
এর আগে ২০১৭ ইং সালে বন্দরবাজার বক্স বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায় সিলেট সাংবাাদিক ইউনিয়নের অফিসে পাওনা টাকার জন্য চা দোকানী হারুনকে রাত সাড়ে ১০ ঘটিকায় ডেকে নিয়ে উলঙ্গ করে শারিরীক নির্যাতন করে নজরুল ইসলাম সিপার। এই অফিসটিকে সে তার ব্যক্তিগত টর্চারসেল বানিয়ে ছিলো। বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে সাংবাদিক ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান জুলহাস, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ আকরাম আল সাহান, অর্থ সম্পাদক কবি সাজ্জাদ আহমদ সাজু, দপ্তর সম্পাদক শাহান আহমদ চৌধুরী অফিসে আসা বন্ধ করে দেন।
এর দুই মাস পর সিপার তাহার ভাগনার মাধ্যমে অনুষ্ঠান কাভারের কথা বলে শাহান আহমদ চৌধুরীকে আটকিয়ে বন্দরবাজার ফাড়িতে নিয়ে টাকা পাবে বলে মামলার ভয় দেখিয়ে ১৫,০০০/ (পনের হাজার) টাকা আদায় করে। শাহানের সাথে সিপারের টাকার কোন লেনদেন ছিলোনা।
এরপর ২০১৮ইং সালের জুন মাসে সন্ত্রাসী কায়দায় সাংবাদিক ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান জুলহাসকে নগরীর শাহীঈদগাহ এলাকার একটি রেস্তোরাঁ থেকে ফিলমি কায়দায় তুলে নিয়ে আম্বরখানা বড়বাজার এলাকার একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ দিয়ে শারিরীক নির্যাতন করে পর দিন সাংবাদিক ইউনিয়ন এর অফিসে দিনভর নাটক করে, সন্ধ্যায় কৌশলে তিনি পুলিশকে জানালে তৎকালীন ওসি ফোর্স পাঠিয়ে কামরুলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান এবং সিপারকে থানায় বসিয়ে সাংবাদিক কামরুলকে নিরাপদে বাসায় পৌছেদেন।
নজরুল ইসলাম সিপার বর্তমানে সুবিদবাজার ফাজিলচিস্তে ৫মতলা বিল্ডিংয়ের যে ফ্ল্যাটে বসবাস করছে সেই ফ্ল্যাটটি দখলীয়। দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগ এর ক্ষমতা দেখিয়ে জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে। বাসার মালিক মামলা করলেও কোন সুবিধা করতে পারছেনা। শুধু তাইনা সম্পত্তি নিয়ে তাহার আপন ভাই বোনের সাথে মামলা চলমান আছে। জাল দলিলের মাধ্যমে নানার বাড়ীর সম্পত্তি নিজের দাবী করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে।
২০১৪ ইং সালের ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম শ্রম অধিদপ্তর থেকে নজরুল ইসলাম সিপারকে সভাপতি ও কামরুল হাসান জুলহাসকে সাধারন সম্পাদক করে ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি নিয়ে "সাংবাদিক ইউনিয়ন সিলেট" নামে সংগঠনটি নিবন্ধন লাভ করে যাহার নং: চট্ট-২৭২৮ এবং সদস্য সংখ্যা-৪৬। নিবন্ধনের ১০ বছর অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত কোন নির্বাচন হয়নি। সিপার সাংবাদিক ইউনিয়ন এর স্বঘোষিত আজীবন সভাপতি। সভাপতি পদ ধরে রাখার জন্য নির্বাচন দেয়না। নির্বাচন হলেই সে শতভাগ নিশ্চিত ফেল করবে, তাই বার্ষিকসভা না করে টাকার বিনিময়ে শ্রম অফিসের দূণীতিবাজ কর্মকর্তা দিয়ে অডিট, সাধারণ সভা করিয়ে খাতা ঠিক রাখে। সাধারণ সভা ছাড়াই সংগঠনের নাম পরিবর্তন করে সিলেট সাংবাদিক ইউনিয়ন করেছে। যে ৪৬ সদস্যের নামসহ রেজিষ্ট্রেশন হয়েছে সেই ৪৬ এর মধ্যে ৩৫ জন তাহার এসব কর্মকান্ডের বিরোধী, তারা বিগত ৯ বছরের মধ্যে কোন সাধারণ সভার দাওয়াত পায়নি। তিন বছর পর পর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও কোন সময়ই নির্বাচন হয়না, সিপারের মনগড়া কমিটি হয়। তাহার রাজনৈতিক প্রভাব ও অবৈধ টাকার কাছে সবাই জিম্মি। এই সংগঠনে সভাপতি বাদে প্রতিবছর কমপক্ষে ৩/৪ বার সাধারণ সম্পাদক বদল হয়। সভাপতির পদ আঁকড়ে ধরে চাঁদাবাজি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাহার লোভ লালসার কারণে সাংবাদিক ইউনিয়ন ধ্বংসের পথে, সংগঠনের সদস্যদের দাবী শ্রমঅধিদপ্তর ও প্রশাসনের সহযোগিতায় একটি নির্বাচন জরুরী। এভাবে একটি রেজিস্ট্রার্ড সংগঠন চলতে পারেনা।
আইন উপদেষ্টা: অ্যাডভোকেট ফাতিমা আক্তার (এ. এ. জি) সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, এবং আইনী সহকারী সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট।আইন উপদেষ্টা:
এ্যাড.মো. রুবেল আল মামুন। (পাবলিক প্রসিকিউটর।) বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-১৯, ঢাকা।উপদেষ্টা: আলহাজ্ব এম.এ বারেক, সম্পাদক: মোঃ সাইফুল ইসলাম, প্রকাশক: ফকির আমির হোসেন,বার্তা সম্পাদক: আব্দুর রহিম । বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৭ মতিঝিল বা/এ (খান ম্যানশন) লিফট ৮ তলা ঢাকা ১০০০। মোবাঃ ০১৬২৫৫৫৫০১২ ই-মেইল bikalbarta@gmail.com
Copyright @ চাঁদনী মিডিয়া গ্রুপ