নুরুল কবির বিশেষ প্রতিনিধি: দীর্ঘদিন পর ওমান থেকে দেশে বেড়াতে এসে হামলার শিকার হয়েছে এক প্রবাসী পরিবার। রাস্তা দিয়ে মাটিবাহী ট্রাক চলাচলে বাধা দেওয়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর পা ভেঙে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কমিরা পাড়া এলাকায়। ভুক্তভোগী হালিমা আক্তার তুলী (১৫) ওমানের সোহার শহরের বাংলাদেশ স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। তার ছোট ভাই নাহিদুল ইসলাম মানিকও একই স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। বাবা-মায়ের সাথে দীর্ঘদিন পর দেশে বেড়াতে এসেছিলো তুলী। তাদের ইচ্ছা ছিল দেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখবে। কিন্তু একটি অনাকাঙ্কিত ঘটনায় তাদের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। গত বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) গভীর রাতে বাড়ির সামনের কাঁচা রাস্তা দিয়ে মাটিবাহী ট্রাক নিতে নিষেধ করায় প্রতিপক্ষের লোকজন তুলীর বাবা দারুল ইসলাম ও তাদের পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালায়। বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে তুলীর একটি পা ভেঙে যায়। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন ভুক্তভোগী হালিমা আক্তার তুলীর পিতা দারুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে দারুল ইসলাম জানান, তিনি ১৮ ডিসেম্বর ওমান থেকে পরিবার নিয়ে দেশে আসেন। তার নিজস্ব জায়গার উপর তৈরি রাস্তা দিয়ে আবু তৈয়ব নামের এক ব্যক্তি রাতের অন্ধকারে ট্রাকযোগে মাটি নিয়ে যাচ্ছিল। এতে বাধা দেওয়ায় তৈয়ব ক্ষিপ্ত হয়ে ২৫ ডিসেম্বর দুপুরে মেসেঞ্জারে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। একই দিন দুপুরে তিনি সাতকানিয়া থানা ও সাতকানিয়ায় অবস্থানরত সেনাবাহিনীর কাছে তৈয়বের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার রাতে তৈয়ব আবারও রাস্তা দিয়ে ট্রাক নিয়ে মাটি নিতে গেলে দারুল ইসলাম পুনরায় বাধা দেন। এ সময় তৈয়ব দলবল নিয়ে লাঠি দিয়ে তাকে মারধর করতে শুরু করে। স্ত্রী ও মেয়ে তাকে বাঁচাতে এলে তাদেরও মারধর করা হয় এবং এক পর্যায়ে তুলীর ডান পা ভেঙে যায়। এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে তুলী জানায়, “নতুনভাবে সাজতে যাওয়া বাংলাদেশে এমনটি প্রত্যাশা করিনি। আমি প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাই। অভিযুক্ত আবু তৈয়ব (৩৫) বাজালিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ পাড়া এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে। তৈয়বের দাবি, রাস্তাটি সকলের ব্যবহারের জন্য তৈরি এবং দারুল ইসলাম তার গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে প্রতিবাদ করায় তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। তিনি তুলীকে মারধর করেননি বরং ধস্তাধস্তির সময় সে সিঁড়ি থেকে পড়ে পা ভেঙেছে বলে জানান। সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান জানান,৮ এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দারুল ইসলাম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।