নূরুল কবির বিশেষ প্রতিনিধি চট্রগ্ৰাম:
সাতকানিয়া পুরানগড় ইউনিয়নে শীত মৌসুমের সবজি শিমের ব্যাপক ফলন হয়েছে। এতে শিম চাষীদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। সাতকানিয়া বিভিন্ন হাট বাজারে এখন শিমের সমারোহ। প্রতিদিন এখানকার উৎপাদিত শিম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
উপজলার বাজালিয়া স্টেশন থেকে পুরানগড় সীমানায় প্রবেশ করার পর সড়কের দুই পাশে বিস্তীর্ণ এলাকায় সবুজ শিমের বাগান দৃষ্টিগোচর হয়। এসময় শিম বাগানের পরিচর্যায় কৃষকদের সাথে তাদের পরিবারের মহিলা ও শিশুদেরকেও তৎপর দেখা যায়।
সরজমিনে পুরানগড় ইউনিয়নের বৈতরণী, ফকিরখীল, কালিনগর, মাঝিরপাড়া, পুরানগড়, বটতলীপাড়া ও নয়াহাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিলজুড়ে শিমের খেত। তা ছাড়া বাড়ির পাশের আঙিনা, সড়কের দুই পাশসহ খালের পাড়েও শিমের খেত রয়েছে।
এ ছাডাও পুরনানগড়,বাজালিয়া,ছদেহা্ ঢেমশা্ খাগরিয়া্ গ্রামসহ পুরো উপজেলাজুড়ে শীতকালীন সবজি হিসেবে শিমের চাষাবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত ১০/১৫ বছরে ওই এলাকায় বিশেষ করে পুরানগড় ইউনিয়নে অর্থকরী ফসল হিসেবে শিম চাষ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সাতকানিয়া,বাজালিয়া, কেরানিহাট দোহাজারী বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়,শীতকালীন অন্যান্য সবজির পাশাপাশি বাজারে দেশি জাতের শিমের প্রচুর সরবরাহ। বর্তমানে এখানকার বাজারে প্রতি কেজি দেশি শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। প্রতিদিন ভোর বেলা জমে উঠে সাতকানিয়া উপজেলার বাজার বাজার গুলো। এ সময় ব্যবসায়ীরা পাইকারী দরে শিম ক্রয় করে ট্রাক বা বিভিন্ন যানবাহনে করে তা ঢাকা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারী বাজারে নিয়ে যান।
বাজালিয়া বাজারের ব্যবসায়ী শফি আলম জানান, বাজারে বেশি পরিমাণে স্থানীয়ভাবে চাষকৃত শিম আসতে শুরু করেছে।দেশীয় শিমের স্বাদ আলাদা হওয়ার কারণে ক্রেতারা অন্য সবজির পাশাপাশি শিম বেশি ক্রয় করছেন। পাইকারী ব্যবসায়ীরা জানান,চাষিদের ক্ষেত থেকে নগদ টাকায় শিম কিনে ট্রাকে করে পাঠানো হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, কম খরচে বেশি লাভ হওয়ার কারণে চাষিরা শিম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।চলতি মৌসুমে শুধুমাত্র উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নে ৩৫০ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়েছে। আগামী বছর তা আরও বাড়ানোর লক্ষ্য রয়েছে। তখন উৎপাদন আরও বাড়বে।
তিনি আরও জানান, সরকারের কৃষি বান্ধব নীতি ও পরিকল্পনার কারণে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে চাষিদের শিমসহ নানা জাতের সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে। তারা লাভবানও হচ্ছেন। কৃষি থেকে অর্জিত মুনাফা দিয়েই তাদের পরিবার চলছে। পড়ালেখা করছে সন্তানরা।সব ব্যয় মিটিয়ে প্রতিবছর তাদের হাতে পুঁজিও থাকছে।এ কারণেই চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। কারণ কৃষকের উন্নয়ন হলেই কৃষির উন্নয়ন হয় এবং দেশের অর্থনীতির চাকাসচল হবে ।