মোঃ আলামিন সরকার,
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি,
সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে এইচএসসি পাশ করলেন স্বামী ও স্ত্রী দুজনেই যেমন আমরা বলে থাকি শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো বয়স বাধা নেই। এমনকি বিয়ে-সংসার কিংবা সন্তান লেখাপড়ায় অন্তরায় হতে পারে না। এমনটাই করে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ উত্তীর্ণ করে দেখালেন সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরের আলামিন ও মঞ্জুয়ারা দম্পতি। বিয়ের পর নানা প্রতিকূলতার মাঝেও একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা।
আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ৩৭ বছর বয়সী মোঃ আলামিন সরকার পেয়েছেন জিপিএ ৪ দশমিক ২৯। আর তার স্ত্রী ২৮ বছর বয়সী মোছাঃ মঞ্জুয়ারা খাতুন পেয়েছেন জিপিএ ৪ দশমিক ৩৩ ।
তারা সিরাজগঞ্জের তারাশ উপজেলার বস্তুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ থেকে ঢাকা কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন।
এদিকে জানা গেছে, শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের গাড়াদহ উওরপাড়া গ্রামের হাজী মোঃ আল হেলাল সরকার এর ছেলে মোঃ আলামিন সরকার পেশায় একজন ঠিকাদার। ১৯৯৭ সালে তার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও নানা কারণে পরীক্ষা দেয়া হয়নি। ২০০৭ সালে বিয়ে করেন উল্লাপাড়া উপজেলার গয়হাট্রা পারকুল গ্ৰামের মোছাঃ মঞ্জুয়ারা খাতুন কে। নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় বিয়ে হয় তার। যাহার সন্তান গর্ভে আসায় ২০০৭ সালে মঞ্জুয়ারা খাতুনের আর পরীক্ষা দেয়া হয়নি।
পরে তারা ২০২০সালে অর্থ বছরে সিরাজগঞ্জ জেলার তারাশ উপজেলাই জাফর ইকবাল কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ে দুজনই ভর্তি হন, পাশাপাশি দুজনে ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় মোঃ আলামিন সরকার জিপিএ ৪ দশমিক ৯৬ এবং মঞ্জুয়ারা খাতুন জিপিএ ৪ দশমিক ৭১ পেয়েছিলেন।
বর্তমানে আলামিন – মঞ্জুয়ারা দম্পতির দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। তাদের ছেলে মোঃ আরিফিন মুন ও মোঃ আরাফাত সরকার এবং একটি মেয়ে মোছাঃ আফরিনা পারভীন।
এদিকে মোছাঃ মঞ্জুয়ারা খাতুন স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, ২০০৭ সালে বড় ছেলে মোঃ আরিফিন মুন জন্মগ্ৰহন করে। এবং সেই সংসার পরিচালনা করার মাঝেও ২০২০ সালে থেকে মনের জোর স্বজনদের উৎসাহে পড়াশোনা শুরু করি। এবং এসএসসি ও এইচএসসি পাস করা সম্ভব হয়েছে।
অপরদিকে মোঃ আলামিন সরকার বলেন, বিয়ের আগে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দিতে না পারলেও কয়েকবার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ব্যবসা ও সাংসারিক চাপে শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। আমাদের এই সাফল্যে পরিবারসহ সবাই আনন্দিত।
আমরা স্বামী-স্ত্রীর একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় আমাদের এলাকায় ও আন্তীয়স্বজন বিষয়টি নিয়ে খুবই আনন্দিত ও গর্বিত। সেই সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার হচ্ছে।