বিকাল বার্তা প্রতিবেদক ::
সিলেটের ওসমানীনগরে শশুর বাড়ি থেকে গলা ও পেট কাটাবস্থায় ছায়েদ মিয়া(৪৫) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ভোরে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার বুরুঙ্গা ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের শশুর মৃত মতিন মিয়ার বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
এসময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত ছায়েদের স্ত্রী শাহানা আক্তার পলিকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিহত ছায়েদ গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের জহিরপুর গ্রামের মৃত আব্দুল ছত্তারের ছেলে।
ছায়েদের শাশুড়ির দাবি, গভীর রাতে ধারালো বটিদা দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রীকে আহত করার পর নিজের গলা ও পেট কেটে আত্মহত্যা করেন ছায়েদ। ছায়েদের মৃত্যু ঘটনা নিয়ে রহস্য ও ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
ছায়েদের মৃত্যুর ঘটনা আত্মহত্যা না পরিকল্পিত হত্যা তা খতিয়ে দেখতে নিহতের স্বজনরা নিরপক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, প্রায় ১০ বছর পূর্বে কামারগাঁও গ্রামের মৃত মতিন মিয়ার মেয়ে শাহানা আক্তার পলিকে বিয়ে করেন ছায়েদ। তাদের সংসারে তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত প্রায় ৭ বছর যাবৎ স্ত্রী সন্তান নিয়ে শশুর বাড়িতে বসবাস করে আসছেন ছায়েদ। বিয়ের পর থেকেই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। বিভিন্ন সময়ে স্থানীয়রা আপোষ মিমাংসায় ঝগড়া নিস্পত্তি করে দিতেন। গত সোমবার রাতে ছোট মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে শশুর বাড়ির এক কক্ষে ঘুমাচ্ছিল এবং পাশের কক্ষে তার শাশুড়ি ও দুই সন্তান ঘুমাচ্ছিল। ভোর ৪টার দিকে চিৎকার শুনে শাশুড়ি এগিয়ে গিয়ে গলা ও পেট কাটা অবস্থায় জামাতার নিতর দেহ এবং পেট ও কান কাটা অবস্থায় মেয়ে পলিকে দেখতে পান।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। একই সাথে আহত স্ত্রী পলিকে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে নিজে নিজে পেট কেটে নারভুরি বেড়িয়ে যাওয়ার পর গলা কাটা অথবা গলা কাটার পর পেট কেটে কীভাবে আত্মহত্যা করতে পারে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যার কারণে ঘটনায় ধুম্রজালের সৃষ্ঠি হয়েছে। তবে কীভাবে ঘটনাটি ঘটেছে তা ময়না তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শাশুড়ী সৈয়দা বেগম বলেন, চিৎকার শুনে ঘরে ঢুকে দেখি অন্ধকার। লাইট নিয়ে গিয়ে দেখি মেয়ের জামাইয়ের গলা ও পেট কাটা অবস্থায় নিতর দেহ পড়ে আছে। এবং মেয়ের অবস্থাও খারাপ।
নিহতের ছোট ভাই জুয়েল মিয়া বলেন, গত প্রায় ৭ বছর ধরে আমার ভাই স্ত্রী সন্তান নিয়ে শশুড় বাড়িতে থাকেন। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। মঙ্গলবার ভোরে স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে খবর পেয়ে আমার সেখানে ছুটে যাই। এমন মর্মান্তিক ঘটনা কীভাবে ঘটেছে তা বুঝে উঠতে পারছি না।
ছায়েদের লাশ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরিকারী ওসমানীনগর থানার এসআই সুবিনয় বৈদ্য বলেন, লাশের গলা অন্তত ৮ ইঞ্চি কাটা রয়েছে। পেটের কাটা অংশ দিয়ে নারিভুরি বেড়িয়ে গেছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে। পুলিশ এ ব্যাপারে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদুল হক গলা ও পেট কাটা অবস্থায় ছায়েদের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি হত্যা না কি আত্নহত্যা সে বিষয় নিয়ে তদন্ত চলছে। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মূল রহস্য জানা যাবে।