নিজস্ব প্রতিবেদক:: মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)র অভিযানে বিগত বছরে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা ও উত্তর সুরমার সকল জুয়ার আস্তানায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে খেলার সামগ্রীসহ জুয়ারীদের গ্রেপ্তার করে একদিকে যেমন জুয়ারীদের মনোবল ভেঙ্গে দিয়েছিলো, অন্যদিকে অবৈধ জুয়ার প্রতারণা বন্ধ করে দিয়েছিলো। ফলে জুয়ারীরা প্রতারণা করতে সাহস হারিয়ে তাদের অবৈধ জুয়া গুটিয়ে নেয়।
কিন্তু ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পরিবর্তীত পরিস্থিতির কারণে পুলিশের কর্মতৎপরতা না থাকায় আবারও সিলেটের আনাচে কানাচে গড়ে উঠেছে জুয়ার জমজমাট প্রতারণা। ফলে চিহ্নিত বিভিন্ন জুয়ার আস্তানা গুলোতে এখন জুয়ার মহোৎসব চলছে। এসব জুয়ায় নিম্ন আয়ের খেটেখাওয়া মানুষ টুকাই থেকে শুরু করে ছাত্র, যুবসমাজ, রিক্সা চালক, ভ্যান চালক, সিএনজি চালক,ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং বাসার কাজের ভুয়াও অতি লোভে বেশী টাকা পাওয়ার আশায় তাদের সারা দিনের আয় জুয়া খেলে প্রতারিত হচ্ছে। ফলে একদিকে সাধারণ মানুষ বাড়ীতে ফিরছে খালি হাতে, অন্যদিকে পরিবারে চলছে ঝগড়া বিবাদ ও মানসিক অশান্তি। পরিবারের শান্তি ফিরিয়ে আনতে জুয়ায় প্রতারিতরা জড়িয়ে পরছে চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে। এখই যদি সম্মিলিতভাবে এসব জুয়া বন্ধ করা না যায় তাহলে আরো ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। আর যেখানে জুয়া চলে সেখানে মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপতো রয়েছেই।
স্থানীয়রা এসব জুয়ার প্রতারণা, মাদক ব্যবসা বন্ধে থৌথবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন। এছাড়াও পুলিশ ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)’র তৎপরতা বাড়াতে মহানগর পুলিশ কমিশনারে দৃষ্টি আকর্ষন করেন। উল্লেখ্য গত ১২ এপ্রিল ২০২৫ খিঃ, বিকাল ৩:০০ ঘটিকায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সদর ও প্রশাসন) মোঃ মাসুদ রানা, পিপিএম-সেবা নেতৃত্বে দক্ষিণ সুরমা থানাধীন কদমতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে এবং জুয়ার বোর্ডে অভিযান বন্ধ করে দেওয়া হয় । কিন্তু এসব এলাকায় এখনো আবার জোয়ার প্রতারণা শুরু।
সিলেট মহানগর এলাকার এসএমপির দক্ষিণ সুরমা থানার আওতাধীন ২৬নং ওয়ার্ডের জিঞ্জিরশাহ মাজারের কাছে আবুল কাশেমের জুয়ার বোর্ড, সুরমা মহল অপরাধ আস্তানা নামে সবার কাছে পরিচিত। এই আস্তানায় জুয়ার প্রতারণা ছাড়াও মদ,গাজা,ইয়াবা ও উঠতি বয়সী নারীদিয়ে চলে পতিতা ব্যবসা। এই আস্তানায় কয়েকবার পুলিশ ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি’র উপর হামলা হয়েছে।
নতুন রেলস্টেশনের প্রবেশ মূখে আরেকটি বিশাল জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করছে জুয়ারী নজরুল ইসলাম। নগরীর চাঁদনীঘাট মাছ বাজারে একটি জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করছে আরেক চিহ্নিত শীর্ষ ডেভিল মঞ্জুর সহযোগি জুয়ারী সাইফুল ইসলাম । এর আগে সে উত্তর সুরমার ল কলেজ সংলগ্ন স্থানে জুয়ার বোড পরিচালনা করতো।
শীর্ষ এই সব জুয়ার বোর্ডের উত্তর দিকে স্কীনব্রিজ পার হলেই কোতোয়ালি মডেল থানা, রেলওয়ে স্টেশনের ভিতরে জিআরপি থানা, পূর্বদিকে কদমতলী পুলিশ ফাঁড়ি, এই এিসীমানার মধ্যেই চলে জুয়ার জমজমাট প্রতারণা। এছাড়াও আরো অন্তত ১০/১৫ টি ছোট ছোট জুয়ার আস্তানা রয়েছে এক কিলোমিটার এরিয়ার মধ্যে। যেমন:- কদমতলী পুলিশ ফাড়ির ১০০ গজ সীমানার মধ্যে বালুর মাট এলাকায় বাচনের বোর্ডে চলছে রমরমা জুয়ার প্রতারণা। শুধু তাইনা বালুর মাঠ চিহ্নিত এক অপরাধ আস্তানা, এখানে পতিতাবৃত্তি, গাজা, ইয়াবা ব্যবসা চলে দেদারসে। এই কলোনীতে তৃতীয় লিংঙ্গের নাগরিক হিজরা হিসেবে যাদের পরিচয় তাদের বড় একটি অংশ বসবাস করে। তারাও বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত।
এসএমপির দক্ষিণ সুরমা থানার আওতাধীন ২৬নং ওয়ার্ডের ভার্থখলা কুমিল্লা পট্টিতে রয়েছে বড় ধরনের জুয়ার বোর্ড, এটি পরিচালনা করে অন্তর নামের একজন, তীর, ঝান্ডমুন্ডসহ বিভিন্ন ধরনের আইটেমে এখানে জুয়াচলে দিনরাত। এই কুমিল্লা পট্টিতে আইনশৃংখলা বাহিনী প্রবেশ করতে ভয় পায়, এখানে রীতিমতো একটি কিশোর গ্যাংবাহিনী বাহিনী গড়ে উঠেছে।
দক্ষিণ সুরমা থানাধীন, রেলগেইট সংলগ্ন ডগেরপার যাওয়ার রাস্তায় রয়েছে ফয়েজের তীর জুয়ার বোর্ড, কাউন্সিলর পিন্টুর ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছিলো উক্ত জুয়ার বোর্ডটি।
লাকসামী ফারুক নামের একজন আরেকটি তীর জুয়ার বোর্ড চালিয়ে যাচ্ছে মারকাজ পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকায় কাজির বাজার ব্রীজের গোড়ায়।
দক্ষিণ সুরমা থানার পলিটেকনিক রোডে খোজারখলা মারকাজ মসজিদের গেইটের বিপরীতে আরেকটি তীর জুয়ার বোর্ড চালিয়ে যাচ্ছে সাধু নামের এক ব্যক্তি। মাদক ব্যবসায়ী মৃত বাবুল মিয়ার ছেলে সাধু তার কোলো নিতে পাইকারি কুচরা ইয়াবা বিক্রয় হয় ।
মোগলাবাজার থানার কুচাই এলাকায় হায়দরের কলোনী হিসেবে পরিচিত নদীর পারে আরেকটি বড় ধরনের জুয়ার আসর চলছে। একই থানার আলমপুরে রয়েছে আরেকটি জুয়ার বোর্ড, সেই বোর্ডের মালিক সাদী নামের এক ব্যক্তি।
জুয়ার বিষয়ে জানতে জুয়াড়ীদের সাথে কথা হলে তারা এই প্রতিবেদককে বলেন পুলিশ, ডিবি ও সাংবাদিকদের ম্যানেজ করেই চলে ব্যবসা। বিশেষ করে কদমতলী পুলিশ ফাঁড়ির সুরমা থানা ম্যানেজ করে এইসব চলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তথা পুলিশের ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি’র নীরবতার সুযোগে জুয়াড়ীরা তাদের অবৈধ অপতৎপরতা চালিয়ে যাবার সাহস পাচ্ছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। কিন্তু সচেতন মহল মনে করেন এসব অপকর্ম বন্ধে জুয়ার বোর্ড ও জুয়াড়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশ –যৌথবাহিনীর সাঁড়াশী অভিযান জরুরী।
আইন উপদেষ্টা: অ্যাডভোকেট ফাতিমা আক্তার (এ. এ. জি) সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, এবং আইনী সহকারী সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট।আইন উপদেষ্টা:
এ্যাড.মো. রুবেল আল মামুন। (পাবলিক প্রসিকিউটর।) বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-১৯, ঢাকা।উপদেষ্টা: আলহাজ্ব এম.এ বারেক, সম্পাদক: মোঃ সাইফুল ইসলাম, প্রকাশক: ফকির আমির হোসেন,বার্তা সম্পাদক: আব্দুর রহিম । বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৭ মতিঝিল বা/এ (খান ম্যানশন) লিফট ৮ তলা ঢাকা ১০০০। মোবাঃ ০১৬২৫৫৫৫০১২ ই-মেইল bikalbarta@gmail.com
Copyright @ চাঁদনী মিডিয়া গ্রুপ