এ এ রানা::
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে প্রেমিককে গাছে বেঁধে এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (৯ মার্চ) গভীর রাতে দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের নির্জন বাড়িতে প্রেমিকের চোখের সামনে এই গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর ভিকটিমকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার মধ্যরাতে এঘটনায় ভিকটিম কিশোরী বাদী হয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদককে প্রধান আসামি করে ৪ জানের বিরুদ্ধে থানায় একটি গণধর্ষণের মামলা করেছেন।
মামলায় আসামিরা হলেন, উপজেলার জালালপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে, মান্নারগাঁও ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আফছর উদ্দিন (৩৫), ফয়জুল বারী (৪৫), কামারগাঁও গ্রামের ইদ্রিছ আলীর ছেলে আব্দুল করিম (৩৫), জালালপুর গ্রামের হায়াত আলীর ছেলে ছয়ফুল ইসলাম (৩০)। এ ন্যাক্কারজনক ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ভিকটিম ও স্থানীয়রা জানান, জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে মো. নুরুজ্জামান হবিগঞ্জের মাধবপুরে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। একপর্যায়ে হবিগঞ্জের ওই কিশোরীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত শুক্রবার ভিকটিম কিশোরী প্রেমিক-প্রেমিকা বিয়ে করে ঘর বাধার আশায় দোয়ারাবাজার উপজেলার কামারগাঁও গ্রামের বন্ধু আফাজ উদ্দিনের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে সন্ধ্যায় দোয়ারাবাজার আজমপুর খেয়া ঘাটে একই গ্রামের সিএনজি চালক আব্দুল করিমের সঙ্গে তাদের কথা হয়। আব্দুল করিম তাদেরকে আফাজ উদ্দিনের বাড়ী নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সিএনজিতে তোলেন। জালালপুর গ্রামের ভেতরে গিয়ে সিএনজিতে গ্যাস নেই জানিয়ে মান্নারগাঁও ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আফছর উদ্দিনকে (৩৫) ডেকে এনে প্রেমিকা কিশোরী ও প্রেমিককে সমঝে দেন।
আফছর উদ্দিন তাৎক্ষণিক তাদেরকে চর থাপ্পর দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেন, তোদের কাছে কোন কাবিননামা নেই, তোরা একসঙ্গে কীভাবে থাকবে, তোদেরকে পুলিশে দেয়া হবে। এ কথা বলার পর ভয়ে বন্ধুর বাবা মিয়াজান আলীকে ফোন দেন প্রেমিক নুরুজ্জামান। মিয়াজান আলী ঘটনাস্থলে আসলে আফছর আলী জানায়, রাতের বেলা এদেরকে এভাবে ছাড়া যাবে না, সকালে পুলিশে দেয়া হবে। মিয়াজান আলীকে ধমক দিয়ে বিদায় করে দেন আফছর আলী। পরে রাত ১ টার দিকে ভিকটিম প্রেমিক ও প্রেমিকাকে জালালাপুর গ্রামের ময়না মিয়ার ছেলে ফয়জুল বারী’র মানুষ শূণ্য বাড়ীতে নিয়ে যান আফসর আলী। এখানে প্রেমিক নুরুজ্জামানকে গাছের সঙ্গে বেঁধে তার চোখের সামনে আফছর উদ্দিন, ফয়জুল বারী (৪৫), কামারগাঁওয়ের ইদ্রিছ আলীর ছেলে আব্দুল করিম (৩৫) ও জালালপুরের হায়াত আলীর ছেলে ছয়ফুল ইসলাম (৩০) পালাক্রমে কিশোরীকে গণধর্ষণ করেন। পরে কিশোরী অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তার প্রেমিক নুরুজ্জামান সহ সিএনজিতে তুলে ভোর রাতে জেলা শহরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন সিনজি চালক আব্দুল করিম। ভোর সাড়ে ৪ টায় কাটাখালি বাজারের পাশে এসে সিএনজি স্টার্ট বন্ধ হয়ে গেছে জানিয়ে তাদেরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দ্রুত সটকে পড়েন চালক করিম। পরে রাস্তার পাশের একটি বাড়ীতে সকাল পর্যন্ত আশ্রয় নেন ভিকটিম প্রেমিক- প্রেমিকা। সকালে স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য সিকান্দার আলীর কাছে রাতের ঘটনা জানান এবং আইনি সহযোগিতা চান নির্যাতিত কিশোরী ও তার প্রেমিক। ঘটনার সময় তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া দুটি মোবাইল ও ৮ হাজার টাকা উদ্ধারের কথা জানিয়ে আইনি সহায়তার জন্য অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যকে অনুরোধ জানান তারা।
অবসর প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য সিকান্দার আলী জানান, শনিবার দুপুরে দুইজন ইউপি সদস্যকে ঘটনা জানিয়ে থানায় খবর দেন। পরে বিকেলে পুলিশ এসে ভিকটিম সহ তার প্রেমিককে হেফাজতে নিয়ে যান।
মান্নারগাঁও ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ধর্ষক আফছর উদ্দিনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
দোয়ারাবাজার উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল খালেক জানান, আওয়ামীলীগের কেউ এ ধরণের ঘৃণ্য ঘটনায় যুক্ত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) রাজন কুমার দাস বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এই ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে ৪ জনের বিরুদ্ধে একটি গণধর্ষণের মামলা করেছেন। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দোয়ারাবাজার থানার ওসি ও সহকারী পুলিশ সুপার (ছাতক সার্কেল) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আইন উপদেষ্টা: অ্যাডভোকেট ফাতিমা আক্তার (এ. এ. জি) সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, এবং আইনী সহকারী সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট।আইন উপদেষ্টা:
এ্যাড.মো. রুবেল আল মামুন। (পাবলিক প্রসিকিউটর।) বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-১৯, ঢাকা।উপদেষ্টা: আলহাজ্ব এম.এ বারেক, সম্পাদক: মোঃ সাইফুল ইসলাম, প্রকাশক: ফকির আমির হোসেন,বার্তা সম্পাদক: আব্দুর রহিম । বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৭ মতিঝিল বা/এ (খান ম্যানশন) লিফট ৮ তলা ঢাকা ১০০০। মোবাঃ ০১৬২৫৫৫৫০১২ ই-মেইল bikalbarta@gmail.com
Copyright @ চাঁদনী মিডিয়া গ্রুপ