সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার এরশাদ হোসেন পাপ্পু: নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোরছালিন এর স্বেচ্ছাচারিতায় দূর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে। এর প্রতিবাদ করায় জাতীয়তাবাদী শক্তির কর্মকর্তা কর্মচারীদের গণহারে বদলী করা হয়েছে। ওই কর্মকর্তার দুর্নীতির কারণে কাঙ্খিত সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রাহক সাধারণ। যে কোন সময় বদলী ও হয়রানীর আতংকে তার ভয়ে অতিষ্ট থাকে অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
জানা যায়, ১৫০ মেগাওয়াট নির্মানাধীন বিদ্যুুৎকেন্দ্রের ঠিকাদারদের ওয়াপদার ভিতরের পরিত্যাক্ত ভবনের সংরক্ষিত লাখ লাখ ইট ঠিকাদারদের কাছে গোপনে বিক্রি করে দেন। তার বিক্রিত পুরাতন ইট ভেঙ্গে ঠিকাদাররা খোয়া তৈরী করে বর্তমানে বিভিন্ন প্রকল্পের রাস্তাসহ একাধিক নির্মাণ কাজ করছেন। বিদ্যুৎ শ্রমিকদের পোষাক সরবরাহে ঠিকাদারদের সাথে মোটা অংকের কমিশন বানিজ্য করে নি¤œমানের পোষাক ক্রয় করেছেন। এ সব সরবরাহকৃত ব্যাবহারের অযোগ্য পোষাক ব্যাবহার করতে পারছে না শ্রমিকেরা। তিনি যোগদানের পর হতে প্রতিমাসে ভ‚য়া টি.এ ডি.এ বিলের মাধ্যেমে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্বসাত করছেন। ডিপিএস’র সরঞ্জাম ও ২০০০ টাকার বৈদ্যুতিক বাতি টেন্ডারের মাধ্যেমে ১০ হাজার টাকায় ক্রয় করে লাখ লাক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ৫ জানুয়ারী ২০২২ সালে পুরাতন ৩২ মেগাওয়াট ডিপিএস তেল ট্যাঙ্কার ভেঙ্গে ১ হাজার টন স্ক্যাপ লোহাকে তিনি মাত্র ৫০০ টন দেখিয়ে নিলামকারী প্রতিষ্ঠানকে ১ হাজার টন লোহা বুঝিয়ে দেন। অতিরিক্ত ৫০০ টন লোহা দেয়ার সময় স্থানীয় সাংবাদিক ও জনতার বাঁধার মুখে গেট পাস নিয়ে আউট হওয়া ১০০ টন লোহা রংপুর হতে পুনঃরায় ফেরত নিয়ে আসলেও বাকী ৪০০ টনের কোন হদিস নেই। অফিস চত্বরে স্তুপকৃত ৩ লক্ষ ইট ৬০ হাজার ইট দেখিয়ে ইট বের করার সময়ে স্থানীয় জনতার বাঁধার মুখে পড়েন। ইটের গাড়ি পাচারের সময় স্থানীয়রা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিলে ইট ডেলিভারী বন্ধ করে দেন। অফিস চত্বরের প্রতি বছরে পৌরসভার কর্মচারী দিয়ে ঘাস কেটে তিনি ভুয়া ভাউচার তৈরী করে লাখ লাখ টাকা নিজেই আত্বসাত করেন। নির্বাহী প্রকৌশলী তার নির্ধারিত বাড়িতে না থেকে অবৈধভাবে ভিআইপি রেষ্ট হাইজে নামমাত্র মূল্যে দীর্ঘদিন ধরে পরিবারসহ বসবাস করে আসছেন।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় চাকরী করার সুবাদে বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের সময়গুলোতে তিনি নিজেকে সর্বসর্বা বনে গেছেন বলে অভিযোগে প্রকাশ। একই কর্মস্থলে তিনি দীর্ঘ ৫ বছর ধরে কর্মরত থাকায় এবং আওয়ামীলীগের মদদপুষ্ট হওয়ার কারণে নিজেকে সব কিছুর উর্ধে ভেবে তার দুর্নীতি নির্বিঘেœ চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০২৪ সালের গণঅভূত্থানে আওয়ামীলীগের পতন হলেও তিনি এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এ ছাড়া তিনি আওয়ামীলীগ সমর্থিত কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিভিন্ন রকম ট্যুর সহ নানা রকম সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ৫ আগষ্টের পট পরিবর্তনের পর স্থানীয় জনগন ও উক্ত অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ঐ প্রকৌশলীর দূর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করলে বিদ্যুৎ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নীলফামারী জেলা শাখার বিএনপি সমর্থিত সভাপতি সাধারণ সম্পাদক সহ ৭ জন সেটআপ কর্মচারীকে অন্যত্র বদলী করেন।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী জানায়, নির্বাহী প্রকৌশলীর দুর্নীতি এখনো ওপেন সিক্রেট, প্রতিবাদ করলেই বদলী। তার দূর্নীতির অনুসন্ধান করলে আরো বড় দুর্নীতির সন্ধান পাওয়া যাবে বলে তারা মনে করেন।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বি.এন.পির সভাপতি আব্দুল গফুর জানান, বদলীকৃতরা সবাই জাতীয়তাবাদী আদর্শের, তাদেরকে অন্যায়ভাবে বদলী করা হয়েছে। বদলীকৃতদের পাওয়ার ষ্টেশনে খুবই প্রয়োজন, অথচ আওয়ামীলীগ ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় নিয়োগ প্রাপ্তদের কোন প্রয়োজন না থাকার পরেও তিনি তাদেরকে রেখে দিয়েছেন। নির্বাহী প্রকৌশলীর অনিয়ম দূর্নীতির বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের তদন্তের দাবী করেন তিনি।
এ ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোরছালিন জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা। তিনি কর্তৃক্ষের অনুমতি নিয়ে রেষ্ট হাউজে অবস্থান করছেন এবং ফিরিয়ে আনা লোহা এখনো জমা পড়ে রয়েছে। তবে ইটের ব্যাপারে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
আইন উপদেষ্টা: অ্যাডভোকেট ফাতিমা আক্তার (এ. এ. জি) সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, এবং আইনী সহকারী সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট।আইন উপদেষ্টা:
এ্যাড.মো. রুবেল আল মামুন। (পাবলিক প্রসিকিউটর।) বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-১৯, ঢাকা।উপদেষ্টা: আলহাজ্ব এম.এ বারেক, সম্পাদক: মোঃ সাইফুল ইসলাম, প্রকাশক: ফকির আমির হোসেন,বার্তা সম্পাদক: আব্দুর রহিম । বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ১০৭ মতিঝিল বা/এ (খান ম্যানশন) লিফট ৮ তলা ঢাকা ১০০০। মোবাঃ ০১৬২৫৫৫৫০১২ ই-মেইল bikalbarta@gmail.com
Copyright @ চাঁদনী মিডিয়া গ্রুপ