1. jhramjan88385@gmail.com : bbarta :
  2. muhammadalomgir350@gmail.com : Muhammad Aaomgir : Muhammad Aaomgir
  3. abrahim111099@gmail.com : Bikal Barta :
৩য় শ্রেণির কর্মচারী জাহাঙ্গীর অঢেল সম্পদের মালিক - Bikal barta
২৭শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| গ্রীষ্মকাল| রবিবার| সকাল ১০:০০|
সংবাদ শিরোনামঃ
পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে জনতার হাতে আটক কনস্টেবল প্রত্যাহার বগুড়ার মহাস্থানে অবৈধ স্থাপনা যৌথ বাহিনী কর্তৃক উচ্ছেদ চিরিরবন্দরে বিএনপির প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত জেলা এনএসআই,পাবনার তথ্যের ভিত্তিতে ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোরশেদুল আলম কর্তৃক অবৈধ বালুমহাল থেকে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা ভাঙ্গায় ১৪৪ ধারা ভেঙে জমি দখল করে গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ  ৪৩ মাসের বেতন বকেয়া থাকায় পৌরসভায় তালা ঝুলিয়ে কর্মবিরতিতে কর্মকর্তা কর্মচারী ডিগ্রি পাসকোর্স করার দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নার্সিং শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন। জকিগঞ্জে ঈদগাহ বাজারের একই গ্রামের ৬ তরুণ ৫দিন থেকে নিখোঁজ!সন্ধান পেতে পরিবারের আকুতি!  চট্টগ্রামে সাতকানিয়ায় বাবার ধর্ষণে মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা! ঝিনাইদহে গরু চুরি, নিঃস্ব দুই দিনমজুর পরিবার।

৩য় শ্রেণির কর্মচারী জাহাঙ্গীর অঢেল সম্পদের মালিক

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিত সময় শনিবার, মার্চ ১৫, ২০২৫,
  • 73 জন দেখেছেন

 

বিকাল বার্তা ডেস্ক>> সিলেটের কানাইঘাটের দরিদ্র পরিবারের সন্তান মো. জাহাঙ্গীর আলম। ২০০৯ সালে যোগ দেন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী (ইউএফপিএ) পদে। এরপর ‘জাল-জালিয়াতি, বদলি, নিয়োগ-বাণিজ্যসহ অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে’ ১৭ বছরে তৃতীয় শ্রেণির এই কর্মচারী বাড়ি-গাড়িসহ নামে-বেনামে অঢেল সম্পত্তির মালিক হন।

 

তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। এমনকি খোদ উপজেলা মেডিকেল কর্মকর্তা অনিয়ম-দুর্নীতি, অসদাচরণ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো কাজ হয়নি। তিন বছর পরপর বদলির নিয়ম থাকলেও টানা ১৭ বছর তিনি একই কর্মস্থলে চাকরি করছেন। সর্বশেষ গত ২১ অক্টোবর তাঁকে প্রশাসনিক কারণে জকিগঞ্জে বদলি করলেও ঠিক এক মাসের মাথায় অদৃশ্য কারণে একই কর্মকর্তার স্বাক্ষরে তা বাতিল করা হয়।

 

অনুসন্ধানে জানা যায়, চাকরিতে যোগদানের আগে জাহাঙ্গীর মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় পা ভেঙে মারাত্মকভাবে জখম হন। ফলে তিনি সবার পরে সিভিল সার্জন অফিস ‘ম্যানেজ’ করে ফিটনেস সার্টিফিকেট নেন। সবার পর চাকরিতে যোগদান করলেও সার্ভিস বইয়ে সবার আগে অর্থাৎ ১০ জানুয়ারি লিপিবদ্ধ করেন জাহাঙ্গীর। নিজের খেয়ালখুশিমতো অফিসে আসা-যাওয়া করেন।

 

২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর (১০ মাস ২০ দিন) ও ২০২৪ সালের ১ মার্চ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর (৭ মাস ৫ দিন) নির্ধারিত সময়ে অফিসে আসা-যাওয়া না করার প্রমাণ মিলেছে। ছুটি ছাড়াই অফিস না করে সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করেন তিনি।

 

বদলি, নিয়োগ-বাণিজ্য: জাহাঙ্গীর আলম দুই মেয়াদে বাংলাদেশ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। সিলেট জেলার পরিবার পরিকল্পনার সাবেক উপপরিচালক লুৎফুন্নাহার জেসমিন ও অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মান্নানের বিশ্বস্ততা অর্জন করে সারা দেশে নিয়োগ-বাণিজ্যের পাশাপাশি এসএসিএমও, এফডব্লিউভি, এফডব্লিউএ, ইউএফপিএ, এমএলএসএস, নিরাপত্তাপ্রহরী, আয়াদের বিভিন্ন উপজেলায় বদলি করে মোটা অঙ্কের অর্থ নেন বলেও অভিযোগ ওঠে। এফডব্লিউএ নিয়োগ-২০২৩ সালে লাগামহীন দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়। তখন একটি জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রশাসন নড়েচড়ে বসে।

 

এ ঘটনায় করা মামলায় এজাহারভুক্ত ৮ আসামির বাইরে তদন্তকারী কর্মকর্তা ডা. জেসমিনকে আসামি করলেও অদৃশ্য কারণে তাঁর ‘ডানহাত’ জাহাঙ্গীর বেঁচে যান। ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় তিনজন এফডব্লিউএ লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরি নেন। এতিম পোষ্য কোটায় চাকরির জন্য একজন আয়াও জাহাঙ্গীরকে ২ লাখ টাকা ঘুষ দেন। শুধু তা-ই নয়; জাহাঙ্গীর নিজের স্ত্রী জোহরা বেগমকেও টাকার বিনিময়ে প্রথমে এফডব্লিউএ ও পরে এফডব্লিউভি পদে চাকরির ব্যবস্থা করেন।

 

নিজেই বলে বেড়ান, ২০১২ সালে এফডব্লিউভি পদে চাকরির জন্য অধিদপ্তরে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রতি প্রার্থীর কাছ থেকে ঘুষ নিতেন, কিন্তু তাঁর প্রেমিকা জোহরার চাকরির জন্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাকে নিজে ৩ লাখ টাকা ঘুষ দেন। এ ছাড়া জোহরার এক বছরের মৌলিক প্রশিক্ষণের টিএ (ভ্রমণ বিল) বিলের ১ লাখ ৪ হাজার টাকাও জাহাঙ্গীর দেন। আর ট্রেনিং শেষ করেই জোহরা জাহাঙ্গীরকে বিয়ে করেন।

 

২০২১ সালের জুনে নিয়মিত অবসরে যাওয়া এক ফার্মাসিস্ট (সার্টিফিকেট জাল) নিরুপায় হয়ে জাহাঙ্গীরকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে পেনশনের টাকা তোলেন। ৫ লাখের মধ্যে ২ লাখ টাকা তৎকালীন উপপরিচালককে দেন বলে তাঁর নিজের স্বীকারোক্তি মিলেছে। ২০১৮ সালের মে মাসে অবসরে যাওয়া এক এফডব্লিউএ (জন্মতারিখ ভুল) জাহাঙ্গীরকে ২ লাখ টাকা দিলে তিনি পেনশনের টাকা তুলে দেন।

 

সরকারি বরাদ্দ আত্মসাৎ: জাহাঙ্গীর এফএইচপিও, এমসিএইচ-এফপিদের বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেল করে, স্বাক্ষর জাল করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ডা. জেসমিন ও জাহাঙ্গীর মিলে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের বছরের সব বাজেট আত্মসাৎ করতেন।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সাবেক এফএইচপিও বলেন, ‘কোনো সরকারি কাজ না করে বছরের সব বরাদ্দের টাকা জাহাঙ্গীর, ডিডি (ডা. জেসমিন) ম্যাডামের দোহাই দিয়ে ভুয়া বিলের মাধ্যমে উত্তোলন করতেন। তখন অনেকটা অবাক হয়েছি, অফিসের সামান্য একজন কেরানির কাছে সব উপজেলা জিম্মি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সোনার ডিমপাড়া হাঁস হচ্ছে জাহাঙ্গীরের মতো কেরানিরা। এ জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।’

 

২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর ফেঞ্চুগঞ্জ এফএইচপিও, এমসিএইচ-এফপি ডা. সুবর্ণা রায় তুলি জাহাঙ্গীরের আর্থিক অনিয়ম-দুর্নীতি ও অপেশাদার আচরণ নিয়ে উপপরিচালক সিলেটের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। তার আগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও জাহাঙ্গীরের অপকর্মের জন্য অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ও হুমকির সম্মুখীন হয়েছিলেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন। ডা. সুবর্ণা রায় তুলি বলেন, ‘তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমাকেও আর কিছু জানানো হয়নি। আমি এখন সিলেট সদরে কর্মরত।’

 

অবৈধ সম্পদ অর্জন: জাহাঙ্গীর স্ত্রী-সন্তানসহ আত্মীয়স্বজনদের নামে গোপনে সম্পত্তি ক্রয় করে রেখেছেন। সিলেট নগরের শাহজালাল (রহ.) উপশহরের এইচ-ব্লকের ৪ নম্বর রোডে (টুলটিকর মৌজার জেএল নম্বর-৯৯, খতিয়ান-১৭৮৯, দাগ নম্বর-৪) ৫ শতক জায়গা কিনে নিজের মায়ের নামে ছালেহা মঞ্জিল নির্মাণ করেন। এতে প্রায় কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। এ ছাড়া উপশহরের ডি-ব্লকের হাজি আজমল আলীর কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকার বিনিময়ে ২ শতক ৮০ পয়েন্ট জায়গা (দলিল নম্বর-২১১৯/২৪ ইং) কেনেন। দুটি জমি রেজিস্ট্রিতে সরকারকে রাজস্ব ফাঁকি দিতে কম মূল্য দেখিয়েছেন। জাহাঙ্গীর নিজেই বলে বেড়ান, তাঁর ছোট ভাই মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিজ গ্রামে ফার্মেসি ব্যবসা দিয়ে সিলেট শহরে জায়গা ক্রয়ের পাশাপাশি নিজ গ্রামে (পূর্ব ব্রাহ্মণ গ্রাম) সম্প্রতি প্রায় ১৩ বিঘা জমি কিনেছেন।

 

নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি দিয়ে সিলেট উপশহরের বাসা থেকে ফেঞ্চুগঞ্জে অফিসে আসা-যাওয়া করেন।

 

জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল: ফেঞ্চুগঞ্জ ১ নম্বর ইউনিয়নের ২/ক ইউনিটের শূন্য পদে ২০১৮ সালে কুলাউড়া উপজেলায় কর্মরত পরিবারকল্যাণ সহকারী (এফডব্লিউএ) মোছা. লায়লা বেগমকে বদলির জন্য ৪০ হাজার টাকা ঘুষ নেন। কিন্তু এফডব্লিউএর নিজের বাবা ও স্বামীর স্থায়ী ঠিকানা ছাড়া অন্য কোথাও বদলি হওয়ার বিধান নেই। জাহাঙ্গীর লায়লার স্বামীর ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে কাবিননামা, চেয়ারম্যান নাগরিকত্ব সনদ, জমির পরচা তৎকালীন এফএইচপিওর নাম ও সিল ব্যবহার করে নিজেই স্বাক্ষর দিয়ে সত্যায়িত করেন। একইভাবে শূন্য পদ-সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র নিজেই দেন।

 

এসব কাগজপত্র সংযুক্ত করে লায়লার বদলির আবেদন করেন। পরে সিলেট বিভাগীয় তৎকালীন পরিচালক ওই আবেদনের সত্যতা যাচাই করার জন্য ফেঞ্চুগঞ্জ এফএইচপিও ও এটিএফপিওকে তদন্তের নির্দেশ দেন। তাঁরা সরেজমিনে তদন্ত করে লায়লার আবেদন করা ঠিকানার কোনো সত্যতা পাননি এবং তদন্তকারী কর্মকর্তারা আবেদনের সঙ্গে সত্যায়িত কাগজপত্র জালিয়াতির সত্যতা পান।

 

কিন্তু অদৃশ্য কারণে জাহাঙ্গীর ও লায়লার বিরুদ্ধে প্রতারণা-জালিয়াতির কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তখন ওই শূন্য পদে লায়লাকে আর বদলি করা হয়নি। তবে ২০২২ সালের অক্টোবরে জাহাঙ্গীর আবার মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে লায়লাকে স্বামীর স্থায়ী সঠিক ঠিকানা ব্যবহার করে ২ নম্বর মাইজগাঁও ইউনিয়নের ৩/খ ইউনিটে বদলি করান।

 

১৪ জন সহকর্মীকে হয়রানি করতে জাহাঙ্গীর ২০২৪ সালের ২৪ মার্চ ভুয়া শোকজ লেটার ইস্যু করেন বলেও অভিযোগ ওঠে।

 

বিনা অনুমতিতে বিদেশ ভ্রমণ: কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে একাধিকবার তথ্য গোপন করে বিদেশ ভ্রমণ করেন জাহাঙ্গীর। সরকারি কর্মচারী হয়ে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) ছাড়া পাসপোর্ট তৈরি করে তিনবার নবায়ন করেছেন।

 

সব অভিযোগ অস্বীকার করে ইউএফপিএ মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘উপশহরে কেনা দুটি জায়গা পারিবারিক। দেখাশোনা করা আমার দায়িত্ব। অনুমতি ছাড়া বিদেশ যাওয়ার তথ্য সঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি। আর্থসামাজিক উন্নয়নভিত্তিক ব্যবসা, স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ যত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত, সব কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে করেছেন। এগুলো একটি পক্ষ আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য করছে।’

 

‘১৭ বছর একই কর্মস্থলে থাকা ইউএফপিএ জাহাঙ্গীরকে বদলির এক মাসের মধ্যে বাতিল করতে হলো কেন?’ জানতে চাইলে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক মোহাম্মদ আমানউল্লাহ বলেন, ‘হঠাৎ করে কারণ বলতে পারব না। ফাইল দেখে বলতে হবে। অনেকেই এখানে দীর্ঘদিন ধরে একই কর্মস্থলে আছে। আমি আসার পর সেগুলো খতিয়ে দেখছি।’

 

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আশরাফী আহমদ বলেন, ‘মাত্র ৪ দিন হলো এখানে যোগদান করেছি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখব।’

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরও সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2024 bikal barta
error: Content is protected !!