হাফিজুল ইসলাম লস্কর, সিলেটঃ রমজানের শুরু থেকেই ব্যস্ততা বেড়েছে সিলেট নগরী ও নগরীর বাইরের বিভিন্ন দর্জি দোকান গুলোতে। গজ কাপড় কিংবা আনস্টিচ পোশাক কিনে সবাই ছুটছেন কারিগরের কাছে। ফলে ঈদ উল ফিতরকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে দর্জি তথা সেলাই কারিগরদের। সময় যত যাচ্ছে ততই বাড়ছে ব্যস্ততা।
সিলেট মহানগরের করিমউল্লাহ মার্কেট, শুকরিয়া মার্কেট, মসজিদ মার্কেট, শেখঘাট, রংমহল টাওয়ার এর টেইলারিং হাউজগুলোতে এবং মহানগরীর বাইরে চৌধুরী বাজার, হেতিমগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, রামধা ও চারখাই বাজারের দর্জিদের চোখে এখন ঘুম নেই। তারা ব্যস্ত সময় পার করছেন কীভাবে যথা সময়ে গ্রাহকদের হাতে সেলাই করা নতুন পোশাকটি তুলে দেওয়া যায়। এবার ঈদে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি কাটা কাপড়ের চাহিদাও কম নয়। প্রসিদ্ধ টেইলারিংয়ের দোকান এর পাশাপাশি ছোট ছোট দর্জি দোকানের কারিগরদের ব্যস্ততা আকাশচুম্বী।
দর্জি দোকানের মালিকরা বলছেন, বিগত বছরগুলোর মতো রমজানের আগে ও রমজানের প্রথম দিকে বেশি অর্ডার না হলেও এবার শেষ মুহূর্তে অনেক বেশি কাজ এসেছে। এজন্য রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন তারা। তবে পোশাক তৈরিতে ব্যবহৃত উপকরণ ও দর্জি শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন গ্রাহক এবং টেইলার্স মালিকরা। বড় বড় টেইলার্সে ১৫ রমজানের পর আর নতুন করে অর্ডার নেওয়া বন্দ করে দিয়েছে। তবে ছোট টেইলার্স এর দোকানে ২৩ রমজান পর্যন্ত নতুন অর্ডার নিয়েছে।
শুক্রবার (০৫ এপ্রিল) রামধা বাজারের জনপ্রিয় টেইলার্সের মালিক কাম কাটিং মাস্টার সুলেমান আহমদ জানান, গ্রাহকের অর্ডারকৃত কাপড় সেলাই করে যথা সময়ে ডেলিভারি দিতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের চোখে ঘুম নেই বললেই চলে। তারপরও সময় মতো ডেলিভারি দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। সেই সাথে বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে নাজেহাল বলে জানান তিনি।
সুলতান আহমেদ জানান, গত বছরের তুলনায় এবার কাজ কিছুটা কম। তবে শেষ মুহূর্তে এসে অর্ডার হয়েছে বেশি। অন্য বছরের তুলনায় টেইলার্সে ব্যবহৃত সামগ্রীর দাম ও শ্রমিকের মুজরি অনেক বেড়ে গেছে। ফলে চাপটা পড়ছে গ্রাহকদের ওপর।
ঈদের কারণে টেইলারিং হাউজগুলোর প্রয়োজনীয় সামগ্রী চুমকি, পুঁতি, লেইজ- ফিতা, সুতা, বোতামের দোকানগুলোতেও ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। হাসান মার্কেটের বাংলাদেশে ষ্টোরের মালিক জানান, ঈদ উপলক্ষে অনেক জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের খুবই অসুবিধা হচ্ছে। বিশেষ করে মহিলা ক্রেতাদের কোনোভাবেই বিষয়টি বোঝানো যাচ্ছে না।
ঈদ এলেই বেড়ে যায় পায়জামা-পাঞ্জাবি, জোব্বা, বোরকার কারিগরদের কদর। এই কারিগররা ভাষ্য, মানুষ সারাবছর পোশাক তৈরি করে কম। সাধারণত ঈদ ও পূজায় ধনী-গরিব সবাই নতুন পোশাক বানায়। ফলে এই সময়টাতে কাজের চাপ বেড়ে যায়। এই মৌসুমের আয় দিয়েই তাদের সারাবছর চলতে হয়। এ কারণে শরীরের দিকে না তাকিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তারা।