মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরান। তিনি একজন আলেম। বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী একজন যুগ সচেতন ব্যক্তিত্ব। তাঁকে আপনারা যে বিশেষণে বিশেষায়িত করেন না কেনো, কোনো ক্ষেত্রেই তিনি পিছিয়ে নেই। বলতে গেলে একথাই বলতে হবে যে, একজন মানুষের অস্তিত্বে এতোসব প্রতিভার সম্মিলন কীভাবে একত্রিত হলো। যা সত্যিই অবাক করা বিষয়।
মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরান। তাঁর ছাত্রকালীন তিনি ছিলেন একজন তেজস্বী মেধার অধিকারী মেহনতি তালিবুল ইলম। রাত-দিন কিতাব মুতালাআ ও সবকের প্রতি খুবই যত্নবান থাকতেন। পঠিত কিতাবের সার নির্যাস সহজেই বের করে নিয়ে আসতেন। যার দরুন ছাত্রজীবনেই তিনি ছিলেন অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী এক অনন্য তালিবুল ইলম। আসাতিযায়ে কেরাম ও সহপাঠীদের কাছে ছিলেন সীমাহীন স্নেহের, সম্মানের। মাদরাসা পরীক্ষা ও বোর্ডের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভালো ফলাফল অর্জন করে নিজের মেধা ও যোগ্যতাকে বরাবরের মতো পাকাপোক্ত করাই ছিলো তাঁর অন্যতম কৃতিত্ব।
মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরান শিক্ষকতা দিয়েই কর্মজীবনের সূচনা করেন। এ অঙ্গনে তিনি একজন প্রাজ্ঞ বিজ্ঞ ও বরণীয় ব্যক্তিত্ব। তাঁকে এ অঙ্গনের একজন সুনিপুণ নির্মাতাও বললে অত্যুক্তি হবে না। তাঁর দক্ষ হাতে বিচক্ষণ পরিচালনায় একেকটি অঙ্গন আজ সুনাম-সুখ্যাতির শীর্ষচূড়ায় আরোহণ করছে। এ ব্যাপারে যুগসচেতন অনেকেই সম্যক অবগত। মুফাক্কিরে ইসলাম আল্লামা শায়খ জিয়াউদ্দিন হাফিজাহুল্লাহর এই মানসপুত্র আপন কর্মক্ষেত্রে হার না মানা এক বৈচিত্র্যময়ী দুর্দান্ত নাবিক। যেখানেই যান, সেখানেই সফলতা তাঁকে পদচুম্বন করে থাকে। ফা-লিল্লাহিল হামদ্!
মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরান একজন শেকড় সন্ধানী লেখক,গবেষক,সম্পাদক। ছাত্রজীবনেই লেখালিখির পাঠশালায় নিজেকে নিরত রেখেছিলেন। সময়ের পরিক্রমায় তিনি এখন সফল লেখক। তাঁর লিখনী এতোটাই সমৃদ্ধ যে, জাতীয় পর্যায়ের বড়বড় জ্ঞান-গবেষকও প্রশংসা করেন। তাঁর লিখিত প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও সুচিন্তিত মতামত, পত্র-পত্রিকা এবং দ্বীনি ম্যাগাজিনগুলো খুবই গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে থাকে। দেশ-মানবতা ও ইসলামের জন্যে তিনি এখনো লিখে চলছেন। যা থেকে পাঠকরা আত্মার খোরাক লাভ করেন।
মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরান একজন সমাজচিন্তক। বিজ্ঞ আলোচক। ভিন্নরকম তাঁর কথার স্টাইল। স্পষ্ট ও বলিষ্ঠ ভাষায় প্রকাশ হয় তাঁর একেকটি কথা। একেকটি আলোচনা। মুদ্রা দোষের প্রলাপ থেকে তিনি স্বচ্ছ-পরিচ্ছন্ন। তাঁর কথায় লজিক থাকে। থাকে তথ্য উপাত্তের উপস্থিতি। ফলে তিনি আরো দশজন আলোচকের থেকে এক অনন্য মর্যাদায় আসীন থাকেন।
মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরান একজন মানবতাপ্রেমী ব্যক্তিত্ব। আর্ত-মানবতার কল্যাণ কামনায় নিজেকে সদাসর্বদা ব্যতিব্যস্ত রাখেন। সামর্থনুযায়ী দুঃস্থ ও অভাবীদের পাশে দাঁড়ান। সমাজের অবহেলিত মানুষের কাছে গিয়ে সহমর্মিতার হাত প্রসারিত করেন। নানা ব্যস্ততার মাঝেও তাদের খোঁজখবর নিতে ভুলেন না। মানবতাই তার কাছে বিরাট কিছু।
মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরান একজন বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ আলেম। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ইসলামী রাজনীতির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্টে জড়িত ছিলেন। আসলাফ ও আকাবিরের হাতেগড়া সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর অঙ্গসংগঠন ছাত্রজমিয়ত বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন। তিনি যেখান থেকে প্রতিভার স্ফূরণ ঘটিয়েছেন সেই চেতনার বাতিঘর জামিয়া মাদানিয়া আঙ্গুরা মুহাম্মদপুরই হলো- ছাত্রজমিয়তের মূল স্বপ্নদ্রষ্টা। সময়ের বিবেচনায় ছাত্রজমিয়ত প্রতিষ্ঠার আওয়াজ আকাবিরের কর্ণকুহরে জামিয়া মাদানিয়া-ই পৌঁছিয়ে ছিলো। যাক, সে কথা। মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরান প্রতিষ্ঠাকালীন ছাত্রজমিয়তের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। সময়ে সময়ে ছাত্রনেতা থেকে জননেতার পদমর্যাদায় আসীন হন।
তাঁর মেধা ও যোগ্যতা, নেতৃত্বের ময়দানে অসাধারণ বিচক্ষণতার দরুন মুরব্বীরা তাঁকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ জকিগঞ্জ থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করেছিলেন। আলহামদুলিল্লাহ তাঁর অসাধারণ নেতৃত্বে জমিয়তের কার্যক্রম দুর্বার গতিতে চলতে থাকে। জকিগঞ্জের পাড়ায়-মহল্লায় জমিয়তের দাওয়াত চলতে থাকে। তিনি তাঁর সময়ে ২০১১ সনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সিলেট বিভাগ-র উদ্যোগে আয়োজিত জকিগঞ্জের হক চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত বিশাল রোডমার্চের সফল সমন্বয়ক ছিলেন। জকিগঞ্জ শহর ছিলো লোকে লোকারণ্য। উলামা-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিলো না। যা প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া গুরুত্ব দিয়ে ফলাও করেছিলো। স্বচক্ষে দেশবাসী তাঁর নেতৃত্বপূর্ণ অবস্থান দেখেছিলো।
মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরান একজন শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ ও কলমসৈনিক। তিনি এতোকিছুর পরেও ২০১৩ ঈসায়ী সালে মুরব্বি উলামায়ে কেরাম ও ধর্মপ্রাণ তাওহিদি জনতার পরামর্শে জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁর নির্বাচনী প্রতীক ছিলো ‘টিবওয়েল’। যতদূর মনে পড়ে নির্বাচন করার মতো পূর্বথেকে তাঁর কোন প্রস্তুতি ছিলো না। তিনি নিজেই জানতেন না যে, কোন একদিন এভাবে তাঁকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। আসলে যাকে আল্লাহ সম্মানিত করতে চান, তাকে এভাবে পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই সম্মানিত করে থাকেন। জকিগঞ্জের সর্বস্তরের উলামায়ে কেরাম তাঁকে বুঝিয়ে সুজিয়ে নির্বাচনমুখী করেন।
অবশেষে মনোনয়ন দাখিলের শেষদিনই তিনি মনোনয়ন সংগ্রহ করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেন। মাত্র ১১ দিনের নির্বাচনী প্রচারণায় জকিগঞ্জের সর্বত্র তাঁর জয়জয়কার ছিলো। সর্বস্তরের জনগণের ভালোবাসার ব্যক্তিত্বে
তিনি পরিচিত হন।