বিকাল বার্তা ডেস্ক:
সিলেটে চোরাইপথে আসা ১৪ ট্রাক ভারতীয় চিনি আটকের ঘটনায় জালালাবাদ থানায় মামলা করেছে পুলিশ। তবে মামলায় কোন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি। পুলিশ বলছে- চোরকারবারীদের এখনো সনাক্ত করা যায়নি।
বৃহস্পতিবারের এই অভিযানে চিনিবাহী ১৪টি ট্রাকের সাথে একটি প্রাইভেট কার ও ১টি মোটরসাইকেলও জব্দ করে পুলিশ। এই প্রাইভেট কারটি সিলেট মহানগরের যুবলীগ নেতা রুপম আহমদের বলে জানা গেছে।
রুপম আহমদ মহানগর যুবলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক।
জানা যায়, সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা থেকে প্রতিরাতেই চোরাই পণ্যবাহী ট্রাক সিলেট নগরী হয়ে দেশের নানা জায়গায় যায়। এ সকল চোরাইপণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসে ভারতীয় চিনি। কম পুঁজিতে বেশি লাভ হওয়ায় চোরাকারবারিদের চিনিতে আগ্রহ বেশি। ভারত থেকে ৪ হাজার টাকায় কেনা একটি চিনির বস্তা সিলেটে বিক্রি হয় সাড়ে ৫ থেকে ৫৮০০ টাকায়। অনেকেই এসব চোরাচালান করে কোটি কোটি টাকার মালিক হলেও সবাই থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, ১৪ ট্রাক চিনির সঙ্গে প্রাইভেট কারটি যুবলীগ নেতা রুপমের। তিনি গত কয়েকমাস থেকে এই গাড়ি নিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন। বুধবার রাতেও এই প্রাইভেট কারে করে যুবলীগ নেতা রুপম সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছিলেন।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) থেকে জানা যায়, প্রাইভেট কারটির সিলেট থেকে রেজিস্ট্রেশন করা। ১৫০০ সিসির গাড়িটি নিশান ব্রান্ডের। গাড়িটির ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেস যথাক্রমে ২০১৯ সালের অক্টোবর ও নভেম্বর শেষ হয়েছে।
তবে শুক্রবার সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ জানান, ভারতীয় চিনির চালান আটকের ঘটনায় জালালাবাদ থানার এসআই মো. সালাহ উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেছেন। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। ঘটনার সাথে জড়িতরাও সনাক্ত হয়নি। তবে পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। শিগগিরই জড়িতরা গ্রেফতার হবেন।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে জালালাবাদ থানাধীন উমাইরগাঁও এলাকায় একটি সড়কে সারিবদ্ধভাবে রাখা ভারতীয় চোরাই চিনি বোঝাই ১৪টি ট্রাক আটকের পর থেকে এর সাথে জড়িত কারা এ নিয়ে সিলেটজুড়ে চলছে নানা আলোচনা। চোরাকারবারী ও তাদের সহযোগী হিসেবে যুবলীগের কয়েকজন নেতা, সাবেক এক জনপ্রতিনিধির আত্মীয় ও জাফলংয়ের এক পাথর ব্যবসায়ীর নাম আলোচিত হচ্ছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আটক ১৪টি ট্রাকে ২ হাজার ১১৪ বস্তা ভারতীয় চিনি পাওয়া গেছে। প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি করে চিনি রয়েছে। জব্দকৃত চিনির বাজার মূল্য ১ কোটি ৬৭ লাখ ১২ হাজার টাকা।