মাসুদ রানা,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি; দিনাজপুরের খানসামায় গত সপ্তাহে উত্তরের দুয়ারে কড়া নেড়েছে শীত। দিনে প্রখর রোদ থাকলেও রাতে বইছে ঠান্ডা মৃদু বাতাস। ভোর ও সন্ধ্যায় পড়ছে কুয়াশা। সকালবেলা হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। যদিও পূর্ণ শীত আসতে অনেক দেরি, উত্তরবঙ্গে আগাম শীত পড়ার কারণে কষ্ট পোহাচ্ছেন উপজেলাবাসী। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষ। গরম পোশাকের অভাবে কষ্ট পোহাতে হচ্ছে তাদের।
এদিকে, শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার গরম পোশাকের দোকানে ভিড় বেড়েছে। অভিজাত দোকান থেকে এলাকার ফুটপাতের দোকানে ভিড় বেশি হচ্ছে।
শীত নিবারণে উপজেলাবাসী ছুটছেন গরম পোশাকের দোকানে। সাধ ও সাধ্যের মধ্যে তারা কিনছেন শীতের পোশাক। কিন্তু বিত্তবানরা দামি পোশাক কিনলেও সাধারণ খেটে খাওয়া ব্যক্তিরা গরম কাপড় কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন ফুটপাতে। ফুটপাতে মাত্র ১০০ থেকে ২০০ টাকায় মিলছে গরম কাপড়। যে দামের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে সোয়েটার, প্যান্ট, মোটা শার্ট, টুপি, মাফলার, চিকন জ্যাকেট ও ফুলহাতা গেঞ্জি, বিদেশী কম্বল, নকশি কাঁথা, স্টাইলিশ চাদর, লং সোয়েটার। এমন সস্তায় শীতের পোশাক পেয়ে খুশি খেটে খাওয়া মানুষ।
এসব পোশাক কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত তা অনুমান করলেই বোঝা যায়। কিন্তু নিম্নআয়ের দিনমজুররা স্বাস্থের বিষয়টি না ভেবেই তা ব্যবহার করছেন। এতে করে চর্মরোগ হতে পারে বলেও ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ কারণে এসব পোশাক পরিধানের আগে পানিতে জীবাণুনাশক এন্টিসেফটিক ব্যবহার করে ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নেয়ার কথা বলেছেন চিকিৎসকরা।
উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাতের এসব দোকানিরা ক্রেতার ভিড় জমাতে দাম হাঁকছেন ‘একশ একশ বলে।’ এ কারণেই শুধু নিম্নআয়েরই নয়, ফুটপাতের এসব পোশাকের দোকানে ভিড় করছেন কৌতূহলী বিভিন্ন শ্রেণির পথচারীও। তবে কেউ কেউ আবার সেখান থেকে বেছে কিনছেন পছন্দের পোশাক।
তবে অন্য বছরের তুলনায় এবার শীতের পোশাকের দাম বেশি বলেও অভিযোগ ক্রেতাদের। উপজেলা পরিষদের মূল গেট থেকে কাপড় ক্রয় করা শাহিনুর বলেন, ‘আমি গত বছর দুটি মোটা শার্ট কিনেছি মাত্র ২৫০ টাকায়। এবার দাম ৫০০ দাম হাকাচ্ছে। কিছু দিন পর হয়ত দাম কমবে। এখনো পুরোপুরি কাপড় আসেনি। তাই দেরিতে কিনব।’
কৌতূহলী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যাক্তি ফারুক বলেন, ‘এখনো পুরো শীত আসেনি, তাই কাপড় দেরিতে কিনব। গত বছরের কাপড় এখনো আছে সেগুলোই পড়ছি। এখন শুধু কাপড় দেখতেছি। পরে কিনবে বলে জানান তিনি।’
২০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে মানসম্মত অনেক ধরনের পোশাক ফুটপাতে বিক্রি করা হচ্ছে বলে দাবি দোকানির। দোকানদার আসাদুজ্জামান নূর (বুড়া) বলেন, শীতের এসব বিদেশী পোশাক লট ধরে কেনা। গড় হিসেবে ১০ থেকে ২০ টাকা লাভ রেখেই বিক্রি করছি। এখনো পুরো শীত না আসায় বেচাকেনা কম। তবে সারা দিনে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা লাভ হয়। এখানে সাধারণত গরিবরাই বেশি আসে।