রানা খান, প্রতিনিধি, শ্রীপুর , গাজীপুরঃ ৫ই আগস্ট বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন ,গাজীপুরের শ্রীপুরে বিজিবি সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে গুলিতে ছয় আন্দোলনকারী নিহত হন।
গতকাল বুধবার রাতে এ ঘটনায় নিহত জাকির হোসেন রানার (৩৫) বাবা জামাল উদ্দিন ও রহমত মিয়ার (২০) বাবা মো. মুঞ্জু মিয়া শ্রীপুর মডেল থানায় পৃথক দুটি হত্যা মামলা করেন।
মামলা দুটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ্ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন-অর-রশিদ, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান, গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, শ্রীপুরের প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা রহমত আলীর মেয়ে ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী টুসি, ছেলে শ্রীপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জামিল হাসান দুর্জয়, সাবেক এমপি ইকবাল হোসেন সবুজ, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাসির মোড়ল সহ ৯৫ জনের নাম উল্লেখ্যের পাশাপাশি অজ্ঞাত আরও ১১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শ্রীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম সোহেল রানা জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিহত দুইজনের স্বজনরা মামলা দুটি দায়ের করেন।
দুটি মামলাতেই অভিযোগ করা হয়েছে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য, সরকারের নির্দেশে একাধিক বাসে করে ও বিজিবির গাড়িতে করে ময়মনসিংহের বিভিন্ন ক্যাম্পে দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। গাড়ীগুলো শ্রীপুর উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে পৌঁছালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখোমুখি হয়। বিজিবি সদস্যদের আটকে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তাঁরা বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে থাকা অস্ত্র, গুলি ছিনিয়ে নেন। তারপর আসামিরা অতি উৎসাহী বিজিবি সদস্যদের নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালান। এতে আন্দোলনে থাকা ওই দুজন নিহত হন।
জামাল উদ্দিন তাঁর মামলায় আরও অভিযোগ করেছেন, ৫ আগস্ট বিকেল আনুমানিক ৪টার সময় মামলার ১ থেকে ১২ নম্বর আসামির নির্দেশে ১৩ থেকে ৩৭ নম্বর আসামিরা অতি উৎসাহী বিজিবি সদস্যদের নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালান। এ সময় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ছুড়া গুলি আন্দোলনে থাকা জাকির হোসেনের বুকের মাঝামাঝি বিদ্ধ হয়ে মারা যায়। । #