বিশেষ প্রতিবেদক:
সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ “সর্বাঙ্গের ব্যথায় তেড়া” বিআরটিএ’র বিগত সময়ের সিএনজি ‘রিপ্লেস’ ধান্ধার সেই হোতা এখন শুদ্ধাচারের দরবেশ বেশে ঘুষবাজ রক্ষনাবেক্ষন আর এক লম্বা হস্তের খুশি-খোশাল ধান্ধায় হুশহীন। অতঃপর সময়ের ফেরে ওই লম্বা হস্তের তালে নিরব বেশামাল তোপের আশঙ্কা। আর তা নিয়ে একাধিক খন্ড প্রতিবেদনের এ অংশে থাকছে-শুদ্ধাচারের মহাগুরুর তকমায় সার্কেলের ঘুষবাজদের রক্ষনাবেক্ষনের গোচর-অগোচরসহ পেছন ফিরে দেখা।
আর তা হলো, নানা অনিয়ম-দুর্নীতির চতুর হোতা ও সেই ‘রিপ্লেস’ ধান্ধার মহরতি বিআরটিএ’র ঢাকা,চিটাগাং’র সাবেক বিভাগীয় ডিডি মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ আগেই সুযোগমত যেমনি-“ধুছায় জেন্দেগী গুছায়” নিয়েছেন,অর্থাৎ অবৈধ ঢের সম্পদ হস্তগত করেছেন। তেমনি-বাগিয়ে নিয়েছেন ঢাকা বিভাগীয় পরিচালকের মোক্ষম পদটিও। আর পেছনের সব দুর্গন্ধ ঢাকতে দরবেশের ছদ্মাবরনে কখনো সার্কেলের ঘুষবাজদের রক্ষনাবেক্ষক, আবার কখনো ‘সাখের করাত’র সেজে নিরব ধান্ধায় মত্ত থেকে শুদ্ধাচারের মহাগুরুর পাঠ ও এক লম্বা হস্ত’র পায়রাবি করে নিরাপদে থাকছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাক্রমে ওই লম্বা হস্ত তার আশ-পাশসহ গুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রটি জানায়,গত প্রায় বছর খানেক ধরে নির্বিঘ্ন অনিয়ম আর ঘুষের রমরমা বাজার বিআরটিএ’র সার্কেলগুলোর ড্রাইভিং লাইসেন্সের বোর্ড নামের “ফেল-পাশ”গ্যাড়াকলের ঘুষবাজিসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে অনেক প্রতিবেদন হয়। অজ্ঞাত-অখ্যাত পত্রিকার ওই সব প্রতিবেদনগুলো পাত্তা না দিলেও তার জেরে একপর্যায়ে সংশ্লিষ্ট উপর থেকে নিচ পর্যন্ত নড়েচড়ে বসে। ভাটা পড়ে- গোটা বিআরটিএ’র ওই “ফেল-পাশ”গ্যাড়াকলের ঘুষবাজিতে। এসময় তাদের অন্যতম গুরু ও ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক শহীদুল্লাহ’র দেখভালে বরাবরের মত সকলেই পার পেয়ে যান। বরাবরের নানা অভিযোগে কোনঠাসা প্রায় সব সার্কেলের ঘুষবাজরা ফের হয়ে ওঠে চাঙ্গা। তিনি তার লম্বা হাতের বলে রক্ষাকবজরূপে সব সার্কেলের ঘুষবাজদের সক্রিয় করে তোলেন। বিনিময়ে পান মোটা উৎকোচ। এর আগেই একটা লম্বা সময় ধরে দরবেশবেশী শহীদুল্লাহ ডিডি থাকা অবস্থায় সিএনজি’র রিপ্লেস ধান্ধাসহ মোটা দাগে লুটপাটের টাকায় বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিকানার সাথে মহাগুরু বনে যান। এরপর ওই তকমায় চিটাগাং থেকে ঢাকায় ফিরে রয়েছেন বহাল তবিয়্যতে। আর এখন অদৃশ্য শক্তির রক্ষাকবজরূপের আড়ালে‘সাখের করাত’ রূপে-ধরা, ছাড়া ও ছাড়িয়ে দেয়াসহ অভিযেগের ‘সুল’এ তুলে মোটা ধান্ধায় রয়েছেন বহাল। এছাড়াও নিয়োগ বদলিতে তো বরাবরই রয়েছে সুনাম।
আরো জানায়,বিআরটিএ’র ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক হয়েইএক লম্বা হাতের ছোয়ায় শহীদুল্লাহ বিআরটিএ ঘিরে অদৃশ্য অসীম শক্তির বলয় তৈরি করে রেখেছেন। এ খাতের অনিয়ম দেখার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটির যে বিভাগটি রয়েছে, যেন সেটিও তার হাতের মুঠোয়। কথামতো না চললে যে সার্কেলের কর্মচারী-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যখন তখন ঠুকে ভৌতিক কাগুজে অভিযোগ দেখিয়ে আদায় করেন মোটাদাগে মাসোহারা। বিআরটিএ’র চোখ ধাঁধানো সব কূটকৌশলের মাস্টার মাইন্ড বলেও রয়েছে তার খ্যাতি। সর্বোচ্চ পদে আসীনদের সঙ্গেও তার অন্তরঙ্গ ওঠা বসা । এই পরিচালকের প্রভাব বলয় এতটাই ঊর্ধ্বগামী সংস্থাটির ঝাড়ুদার থেকে পিয়ন সব যেন তার নখ দপর্নে। ঘুষ, বদলি, কমিশন বাণিজ্য, মাসোহারা, রোড পারমিট শাখায় দালাল সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে তার রয়েছে একতরফা আধিপত্য। সার্কেল পরিদর্শনের নামে মোটাদাগের ঘুষ আদায়ের নানান ফন্দি ফিকিরে ও তার জুড়ি নেই । তারপরও তিনি এখন “শুদ্ধাচারের মহাগুরু”। আর তার এ চলমান শুদ্ধাচারীর মহাগুরুর মুখোশ উন্মোচনের আগে থাকছে-চিটাগাং ও ঢাকা বিভাগীয় ডিডি থাকাকালে ওই শুদ্ধাচার কমিটির সভাপতির লেভাসের আড়ালে “ধুছায় জেন্দেগী গুছায়” নেয়ায় নমুনা দেখানোর চেষ্টা।
ওই কয়েক বছরে চতুর শহীদুল্লাহ নামে-বেনামে গড়ে তুলেছেন ঢের সম্পদ। ২০২০-২১ অর্থবছরে তার বেতন সর্বসাকুল্যে ৬৫ হাজার ৪৬২ টাকা থাকলেও বসবাস করে আসছেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাবর রোডের ,বি-ব্ল-কের ১৩/এ/১ নম্বর সেলটেক চন্দ্রমলি¬কার আলিশান ডুপ্লেক্স এপার্টমেন্টে। তার রয়েছে-শ্যামলী ০২ নম্বর রোডে ১২-ঠ-৭ নম্বরস্থ একটি মার্বেল পাথর খচিত বিশাল বহুল বাড়ি। গাজীপুরের জয়দেবপুর ও চন্দনায় রয়েছে,দুই-দুইটা নজর কাড়া বাড়ি। যার একটির নম্বর ৪১। এছাড়া মাঝে মধ্যেই দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যেরে দেশগুলোতে পরিবারের সদস্যদের বিলাস ভ্রমণের খবর তো কারোই অজানা নয় । কারণ বিআরটিএ’র ‘অঘোষিত জমিদার’ তিনি। তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে শতাধিক গাড়ির শোরুম ম্যানেজারও। তবে গেল কয়েক দিন আগের সরকারি প্রতিষ্ঠান ধ্বংসযজ্ঞের নেপথ্যে-বিআরটিএ’র ওই লম্বা হস্তের সাথে কতিপয় শুভানুধায়ীর অশুভ আনাগোনার বে-খবরটিও ঘুরপাক খাচ্ছে।