লেখক: পিনাকী ভট্টাচার্য।
**আমি সেফুদাকে আর হিরো আলমকে নিবিড়ভাবে অনুসরণ করি।
যখন সেফুদা ফেনোমেনন হয়ে উঠলেন তখন আমার বাচ্চা স্কুলে পড়ে, স্কলাস্টিকায়। ওকে আমি স্কুলে দিয়ে আসি নিয়ে আসি। ওর বন্ধুবান্ধবদের চিনি। একটা জিনিস হঠাৎ করে খেয়াল করলাম ওরা সেফুদার দারুণ ভক্ত। একটা এপস আছে সেফুদার বিভিন্ন গালি, বানী আর ডায়ালগ দিয়ে আপনি পারমুটেশন কম্বিনেশন করতে পারবেন। আমার ছেলে আর তার বন্ধুদের দেখতাম ওই এপস নিয়ে গালিগুলো শুনতে আর হেসে কুটিকুটি হতে। এই প্রাক্টিস বাসাতেও চলতো। আমার স্ত্রী খুবই বিরক্ত হতো। চান্স পাইলেই গালি শুনতো এপ্স থেকে। এরপরে আমরা দেখলাম নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের সময়ে “পুলিশ কোন চ্যা /*টে / র বা / *ল, শ্লোগান। সারা দেশ অবাক হয়ে দেখলো কোন ইনহিবিশন ছাড়াই তারা এইভাবে গালি দিচ্ছে, আর পুলিশ মাথা নিচু করে হেটে যাচ্ছে।
আমার উপসংহার হলো, ক্ষমতাকে গালি দেয়াটা বাংলাদেশে জেন জির বৈশিষ্ট্য। এইখানে তাদের কোন ইনহিবিশন নাই।
এরপরে এলো হিরো আলম ফেনোমেনন। বগুড়ার মেঠো ভাষায় কথা বলে। কল্পনা করুন, হিরো আলমের সবকিছু ঠিক কিন্তু কথা বলে চোস্ত ভাষায় সেই ভাইব আসে? আসে না। এই দুইজনের মধ্যে মিসিং কী? ডেটা, এনালাইসিস, ইনসাইট, পিওর নলেইজ, গ্লোবাল ভিউ, প্রফেসনাল ইনপুট, লেখাপড়ার ঝলক।
আমি ভাবলাম, আচ্ছা এই হিরো আলম আর সেফুদাকে এক করে মিসিং লিংকটা জুড়ে দিলে কেমন হয়। আমি তো বগুড়ার ছেলে বগুড়ার ভাষা তো ডালভাত। যেই ভাবা সেই কাজ।
এরপরে তো হলো ইতিহাস।
আপনারা যারা মার্কেটিং এর ছাত্র তারা জানেন প্রোডাক্ট এট্রিবিউট এমন বানাতে হয় যা ডিফিকাল্ট টু কপি। ইউটিউবের পিনাকীকে কপি করা যাবেনা তা নয়। কিন্তু একজন আরবান এডুকেটেড মিডিল ক্লাস জিন্দেগীতে পারবে না। সে তার ইনহিবিশন কাটাতেই পারবে না। আমি তাদের চিনি, কারণ আমি তো ওদেরই একজন।
যারা আমাকে গালি ছাড়তে বলেন। তাদের উদ্দেশ্যে বললাম। আমি কোন কিছুই না ভেবে করিনা। লাইনে আসেন আমার যদি সত্যিই পাওয়ারফুল হইতে চান সোস্যাল মিডিয়ায়। আমারে অনেকে সেফুদা বা হিরো আলম বলে লজ্জা দিতে চায়। আমি হাসি। দিনের পর দিন আমি ওদের ভিডিও দেখে ওদের মতোই হইতে চাইছি। লজ্জা পাবো কেন?