মো:শুকুর আলী,স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ৩নং ধনপুর ইউনিয়নে সীমান্তগ্রাম শিলডোয়ারের বাসিন্দা সদ্য অব্যাহতি প্রাপ্ত উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজ্জত আলী খানের পুত্র সাইফুল ইসলাম ।
২৪ অক্টোবর রাতে বিশ্বম্ভরপুর থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতারে পরপরই সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে আসার সময় জনতার ঢল উপস্থিত হলে ওয়ারেন্টির কপি দেখতে চাওয়া হলে পুলিশ দেখাতে ব্যর্থ হয় এ সুযোগে অন্ধকারে হ্যান্ড কাপ সহ সাইফুল পালিয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আটককৃত সাইফুলের নামে থানায় মামলা আছে বা থাকতে পারে তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বিনা ওয়ারেন্টে কি করে বেআইনিভাবে একজনকে জোরপূর্বক গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায়। আইনকে সবাই শ্রদ্ধা করে তাই বলে আইনকে নিয়ে যারা লুকোচুরি করে তারা কি বেআইনি কাজ করছে না? এহেন কর্মকাণ্ডে এলাকায় এ ঘটনাটি কে কেন্দ্র করে সরগরম হয়ে উঠেছে।
আরো জানা যায়, সাইফুল জি/আর মামলার আসামির তালিকায় ছিল বলে নিশ্চিত করেন থানা পুলিশ। ঘটনার পরক্ষণে বিষয়টি নিশ্চিত করতে ‘হ্যান্ড কাপ সহ আসামি পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অফিসার ইনচার্জ কাউসার আলম কে অবগত করলে উত্তর দেন নাই।
বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়ন চিনাকান্দি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম, শিলডোয়ার এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা ও থানা পুলিশ জানায়, একটি জি আর মামলার পলাতক আসামি হিসেবে থানার এস আই নবী হোসেন সঙ্গিয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে রাত প্রায় ৮:৩০ ঘটিকায় দিকে সীমান্তের (শিলডোয়ার) চান্দের বাজার নিজ অফিস থেকে উপজেলা যুবলীগ নেতা সাইফুলকে গ্রেফতার করে, জিজ্ঞাসাবাদে তাৎক্ষণিক ৯ টায় আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়রা পুলিশের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সম্পর্কে ও ওয়ারেন্ট কপি দেখতে চাইলে পুলিশ সদস্য দেখাতে ব্যর্থ হয় এরই ফাঁকে সাইফুল হ্যান্ড*কাফসহ অন্ধকারে পালিয়ে যায় বা আর খুঁজে পাওয়া যায়নি তাকে।
অভিযোগ রয়েছে, সম্প্রতি বিশ্বম্ভরপুর থানায় নবাগত ওসি হিসেবে কাওছার আলম যোগদানের পর থেকে চিনাকান্দি সীমান্ত চোরাচালানের ঘাট নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে সাইফুল থানার ওসির সোর্স পরিচয়ে থানা পুলিশ, পুলিশের উধ্বর্তন অফিসার, বিজিবির অফিসার ও আইনশৃস্খলা বাহিনীর নাম ভাঙ্গিয়ে চিনি, কসমেটিকস, মসলা, বিদেশি মাদক, ইয়াবা কারবারি, আমদানি নিষিদ্ধ ভারতীয় শেখ নাসির বিড়ি, কাঁচা-শুকনা মাছ, ফলমুল ,খাদ্য সামগ্রী, গবাধিপশু, রসুন চোরাকারবারিদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় করতে থাকে।
সাইফুলের সীমান্ত চোরাচালান, চাঁদবাজির ব্যাপারে ওসি কাওছার আলমকে এলাকার লোকজন বারবার অভিযোগ করলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগের মাঠ পর্যায়ে তদন্ত এমনকি মাদকসহ সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধে কোনো দৃশ্যমান আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত ) পদে থাকা অবস্থায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানা থেকে কাওছারকে পুলিশ হেডকোয়াটার্স ও সিলেট রেঞ্জ ডিআইজির আদেশ বলে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার শহর পুলিশ ফাঁড়িতে বদলি করা হয়। কিন্তু তিনি সেখানে যোগদান না করে তদবীর বাণিজ্যের মাধ্যমে কৌশলে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসাবে যোগদান করেন।
বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্বম্ভরপুর থানার এসআই নবী হোসেন জানান, সাইফুলকে গ্রেফতারের পর হ্যান্ডকাপ পরাই, তারপর গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে আসতে চাইলে তার পরিবারের লোকজন, স্বজন ও সীমান্তের চোরাকারবারি সংঘবদ্ধ হয়ে জড়ো হলে সে হ্যান্ডকাপ পরিহিত অবস্থাতেই পালিয়ে যায়। আমিসহ ৪ থেকে ৫ পুলিশ সদস্য ছিলাম, তাই এত লোকের সামনে আমাদেরকে নাজেহাল অবস্থায় ফিরতে হয়েছে থানায়।
বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্বম্ভরপুর থানার ওসি কাওছার আলমের নিকট সাইফুলের পালিয়ে যাওয়া ও তার বিরুদ্ধে নানামুখী অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে তার মোবাইল ফোনে বারবার কল করা হলে তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি।