সিলেট বিভাগীয় ব্যুরো>>সিলেটের দক্ষিণ সুরমার সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় একটি প্রভাবশালী চক্র সড়কের দুই পাশে ফুটপাত দখল নিয়ে অবৈধভাবে হকার বসিয়ে মাসে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। ফলে প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে শীববাড়ী,হুমায়ুন চত্ত্বর, কদমতলী,গোটাটিকর, বাসটার্মিনাল,ক্বীন ব্রিজের প্রবেশ মূখ, ভার্তখলা, বাবনা পয়েন্ট, রেলগেইট, লাউওয়াই, চন্ডীপুলে লেগে থাকে নজীরবিহীন যানজট।
এই যানজটের কবলে পড়ে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়লেও হকার উচ্ছেদ বা দখলমুক্ত করতে সিলেট সিটি করপোরেশন নেই কোন উদ্যেগ। কার্যত তারা নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্র সরকারি রাস্তায় ও ফটপাতে হকার বসিয়ে একদিকে জামানত হিসেবে ১৫ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকা জমা নিচ্ছে, অন্যদিকে দৈনিক বিভিন্ন দোকান হইতে ১৫০/,২০০/ ও ৪০০/ টাকা করে অবৈধভাবে ভাড়া আদায় করছে।
এভাবে ছোট দোকান থেকে মাসিক ৪ হাজার ৫ শত টাকা করে বছরে ৫২ হাজার ৬শতাধিক দোকান থেকে বছরে ৩কোটি ২৪ লক্ষ টাকা, মাঝারি দোকান থেকে মাসিক ৬ হাজার টাকা করে বছরে ৭২ হাজার ৩ শতাধিক দোকান থেকে বছরে ২ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা এবং বড় অর্থ্যাৎ ফলের দোকান থেকে মাসিক ১২ হাজার করে বছরে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা করে শতাধিক দোকান থেকে ১ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা আদায় করছে, যাহা বছরে ৬ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকার সমপরিমাণ হাতিয়ে নিচ্ছে ঐ প্রভাবশালী চক্র।
এছাড়া পুলিশের নামেও প্রতিদিন একেকটি দোকান থেকে দৈনিক ৫০/টাকা করে ১০০০ দোকান থেকে দৈনিক ৫০ হাজার করে মাসে ১৫ লক্ষ টাকা বছরে ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা আদায় করা হচ্ছে। সিলেটের ফুটপাত যেনো টাকার খনি, যেখানে টাকা উড়ছে আর কিছু সংখ্যক মানুষ সেই টাকা লুটপাট করছে।
প্রশাসনকে ম্যানেজ করে (১)কদমতলী পয়েন্ট থেকে বাসটার্মিনাল হয়ে ক্বীন ব্রিজের প্রবেশ মুখ থেকে ভার্তখলা-বাবনা পয়েন্ট-রেলগেইট- লাউওয়াই-চন্ডীপুল পর্যন্ত। (২) কদমতলী পয়েন্ট থেকে হুমায়ুন চত্ত্বর হয়ে শিববাড়ী পর্যন্ত এবং (৩) কদমতলী পয়েন্ট থেকে গোটাটিকর পর্যন্ত ফুটপাত দখল করে বসেছে পান সিগারেট, ফল, সবজি, মাছ ও কাপড় বিক্রির দোকান।
এতে লাভবান হচ্ছে গুটি কয়েকজনের একটি প্রভাবশালী চক্র। পথচারীরা ও যানবাহন চলাচলে মারাত্নক সমস্যার সৃষ্টি হয়ে প্রতিনিয়ত নজিরবিহীন যানজট লেগেই আছে। এতে করে দূর্ঘটনা ঘটছে অহরহ। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নিরব!
এসব অবৈধ স্থাপনা,টংদোকান,সবজি, মাছ, ফল ও ভ্যানগাড়ী দিয়ে কাপড়ের দোকান থেকে পুলিশের নাম করে চাঁদা আদায় করে থাকে কাজল নামের এক ব্যক্তি। প্রতিটি ভ্যানগাড়ী, ও দোকান থেকে ৫০-১০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে থাকে বলে জানা যায়।
হুমায়ুন চত্ত্বরে অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে হকার বসিয়ে টাকা আদায় করছে শ্রমিক নেতা মুজিবুর রহমানের ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী রাজু, ঐসব এলাকার বাসিন্দারা নিজ নিজ বাড়ীর সামনে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে হকার বসিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের লিজ গ্রহিতারা লিজের শর্ত ভঙ্গ করে দক্ষিণ এশিয়ার সর্বাধুনিক দৃষ্টিনন্দন বাস টার্মিনালের সামনের রাস্তায় ফুটপাতে ৬২ টি অবৈধ দোকান, টং দোকান,ভ্যানগাড়ী বসিয়ে প্রতিটি দোকান থেকে দৈনিক ২০০/ টাকা করে ৬২ দোকানে ১২ হাজার ৪ শত টাকা, মাসে ৩ লক্ষ ৭২ হাজার করে বছরে ৪৪ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা আদায় করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফুটপাতের দোকানী ও টং দোকানী কয়েকজন এই৷ প্রতিবেদককে জানান, কিছু মানুষের ফায়দা হাসিলের জন্য ফুটপাত দখল করে অবৈধ স্থাপনা ও রাস্তাঘাটে ফল ও সবজি ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে বসে ব্যবসা করে আসছে। এতে করে কিছু স্বার্থন্বেষী মহল উপকৃত হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সিসিক’র দক্ষিণ সুরমার ২৫, ২৬ ও ২৭নং ওয়ার্ডে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে থাকা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বদরুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে বলেন বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে আমি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো।
ইজারাদার সেলিম এর সাথে মোঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন টাকা আমরা কালেকশন করিনা তবে সিটি করপোরেশনের ক্লিনার মুন্না ও মিতালী পরিবহনের ম্যানেজার দুলাল হকার থেকে টাকা কালেকশন করে, এরা আমাদের ইজারাদারের কেউনা।
সত্যতা যাচাইয়ে কয়েকজন শ্রমিকের সাথে আলাপ করলে তারা বলেন দুলাল মুলত ইজারাদারের লোক। সে পার্টটাইম মিতালীর অফিসে কাজ করে। মুন্না সিসিক’র ক্লিনার হিসেবে কাজ করে। সিলেট সিটি কর্পোরেশন এর প্রধান নিবাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার এই প্রতিবেদককে বলেন বাস টার্মিনালের সামনে ফুটপাতে দোকান বসিয়ে চাঁদা আাদায় করা হলে এটা লিজের শর্তভঙ্গ, এটা অবৈধ শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে।