সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কাঠইর ইউনিয়নের ঘোলেরগাঁও গ্রামে গ্রীস প্রবাসী প্রেমিক সুহেল মিয়ার(৩৫) বাড়িতে (বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত) গত দু”দিন ধরে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবীতে অনশন করছেন সৌদী আরব ফেরত প্রবাসী প্রেমিকা একই উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের ভেড়াজালি ডুলফুসি গ্রামের মোঃ নুর ইসলামের মেয়ে রেনু আক্তার(৩৪)। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে এই প্রেমিকা রেনু আক্তার প্রেমিক সুহেল মিয়ার বসতঘরে অবস্থান নেন এবং খাওয়া নাওয়া না করেই তার অনশন শুরু করেছেন। খবর পেয়ে গ্রামের ও আশাপাশের লোকজন এই প্রেমিকার অবস্থান নিয়ে সাধারন মানুষের মাঝে এক কৌতুহল সৃষ্টি হয়। এই নারীকে দেখতে প্রেমিক ঘোলেরগাঁও গ্রামে সুহেল মিয়ার বাড়িতে উৎসুক জনতার আনগোনা বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে শুক্রবার বিকেলে গৌরারং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহ আশপাশের গন্যমান্য ব্যাক্তিরা সুহেলের বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানার এবং বুঝার চেষ্টা করছেন। এই প্রেমিকার সাথে সরাসরি আলাপকালে তিনি জানান,তিনি সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের ভেড়াজালী ডুলফুসি গ্রামের নুর ইসলামের মেয়ে। তিনি ২০১৫ সালে জীবন জীবিকার টানে এবং পরিবারে একটু স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পাড়ি জমান সুদূর প্রবাস সৌদী আরবে। ইরান হয়ে গ্রীসে অবস্থানকারী সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের খায়রুন বাজারের পাশে ঘোলেরগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল শহীদের ছেলে সুহেল মিয়ার সাথে ২০১৫ সালে মোবাইলে রং নম্বরে দুজনের পরিচয় হয় এবং ২০১৬ সালে গ্রীস প্রবাসী সুহেল মিয়ার প্রেমে পড়েন রেনুৃ আক্তার। এর পর থেকেই রেনু আক্তার এবং সুহেল মিয়ার মধ্যে ফেইসবুকে ও হোয়াসআ্যাপে ম্যাসেঞ্জারে,ভিডিও কলে কথাবার্তা চলে এবং দুজন দেশে এসে একে অপরকে বিয়ে করে ঘরসংসার করার দৃঢ প্রত্যায় ব্যক্ত করেন। পরবর্তীতে এই প্রেমিক সুহেল মিয়া গ্রীসে দেশের সিটিজেনশিপ (নাগরিকত্ব) নিতে প্রচুর টাকার প্রয়োজন হলে তিনি তার প্রেমিকা সৌদী আরবে অবস্থানকারী রেনু আক্তারের নিকট অর্থনৈতিক সহযোগিতা চান । রেনু আক্তার ঘর বাধাঁর স্বঁপ্নে বিভোর হয়ে সুহেল মিয়াকে বিকাশের মাধ্যমে এবং জামালগঞ্জ উপজেলার সুহেলের খালাতো ভাই আব্দুল হকের নিকট ব্যাংকে এবং বিকাশের মাধ্যমে মোট ৮ লাখ টাকা দিয়েছেন বলে দাবী প্রেমিকা রেনু আক্তার। তিনি একজন বিবাহিত নারী এবং তার একটা সন্তান আছে জানার পরও সুহেল তাকেই বিয়ে করবে বলে রেনু আক্তারকে আশ্বস্থ করে । এদিকে আনুমানিক চারবছর পূর্বে রেনু আক্তার দেশে এসে তার প্রেমিকের বাড়িতে বেড়াতে আসেন এবং প্রেমিকের আপন ছোটভাই গোলজান রাজুর হাতে তার প্রেমিকের জন্য কেনা স্বর্ণের একটি আংটি ও নগদ একলাখ টাকা তুলে দেন বলে রেনু আক্তার সাংবাদিকদের জানান। এ ব্যাপারে অনশনকারী প্রেমিকা রেনু আক্তার জানান,আমার প্রবাস জীবনের ৮/১০টি বছরের কষ্টার্জিত প্রায় ১০ লাখ টাকা প্রেমিক সুহেল মিয়া গ্রীসে লিগ্যাল হবে বলে টাকা চাওয়ায় প্রেমিকের স্বঁপ্ন পূরণের লক্ষ্যে তিনি দিয়েছেন বলে জানান। তাছাড়া আমাকে প্রেমিক সুহেল মিয়া আশ্বাস দিয়েছিল বিয়ে করবে এবং আমাকে নিয়ে ঘর সংসার করবে বলে । গত দুই তিন মাস ধরে সুহেল আমাকে (রেনু আক্তার)কে পাত্তা না দেয়ায় তিনি প্রেমিকের বাড়িতে এসেছেন স্ত্রীর স্বীকৃতি আদায়ের জন্য জীবনের সকল মায়া মমতা ত্যাগ করে হয়তো সুহেলকে নিয়ে ঘর করব নতুবা মৃত্যুর পথ বেচেঁ নেব বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে প্রেমিক সুহেল মিয়া প্রবাসে থাকায় এবং তার ফোন নম্বর জানা না থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে গৌরারং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শওকত আলী জানান বিষয়টি যেহেতু আমার পাশের কাঠইর ইউনিয়নের প্রবাসী ছেলে এবং মেয়েটা আমার ইউনিয়নের তাই কাঠইর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফতি মাওলানা সামছুল ইসলামের সাথে আলাপ করে বসে বিষয়টিকে কিভাবে নিস্পত্তি করা যায় সেভাবেই দেখা হবে বলে জানান। এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ খালেদ চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ##